খায়রুল আলম রফিক
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আদমপুর এ,কে দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের এমপিও ভুক্ত করার নামে বিতর্কিত অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ মৃর্ধার বিরুদ্ধে ৪৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ মৃর্ধা একই উপজেলার পল্লীবেড়া ইকামাতেদ্বীন মডেল কামিল মাদ্রাসার পিন্সিপাল। তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্য, নতুন ভবন পাইয়ে দেওয়া, শিক্ষকদের বিল, এমপিও ভুক্ত করন, ছাত্র-ছাত্রীদের পাস করনো সহ নানা অনিয়ম ও দুনীর্তির অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে শতাধিক অভিযোগ জমা হয়েছে,এরমধ্যে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে । শিক্ষা মন্ত্রালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জাল-জালিয়াতির সহায়ক বিতর্কিত অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ মৃধা এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। এ পর্যন্ত তিনি ফরিদপুর অঞ্চলের সহজ সরল শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রলোভন ও প্রতারনার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব টাকায় করেছেন গাড়ী বাড়ি সহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ। আবু ইউসুফ মৃর্ধার বিরুদ্ধে ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি নিক্সন চৌধরী কয়েক দফা শিক্ষা-মন্ত্রালয়ে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও অদৃস্য কারনে থমকে যায় তদন্তের কার্যক্রম । তার হাত অনেক লম্বা থাকায় কোন সুপার ও শিক্ষক অভিযোগ করেও কোন লাভ হয় না। আদমপুর এ,কে দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার তৎকালিন সুপার অহিদুজ্জান বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন, তার অভিযোগ সহ ব্যাপক অনুসন্ধানে জানা যায়, পল্লীবেড়া কামিল মাদ্রাসার পিন্সিপাল আবু ইউসুফ মৃর্ধার বাড়ি কোটালীপাড়ার টুপুরিয়া গ্রামের কাজলিয়া এলাকায়। ছোট কাল থেকে এলাকার সবাই তাকে টাউট আউয়াল মৃর্ধা হিসাবে চিনতো। এর কিছুদিন পর তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গার পল্লিবেড়া দাখিল মাদ্রাসায় সুপার পদে চাকুরী প্রাপ্ত হন। এরপর তার চতুরতা ও বিচক্ষন কর্মকান্ডে ফরিদপুর সহ সারাদেশের সুপারদের গুরু বনে যান। সেই থেকে তাকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। তার ফরিদপুর অঞ্চলে অবৈধ নিয়োগ বানিজ্য, নতুন ভবন পাইয়ে দেওয়া, শিক্ষকদের বিল পাইয়ে দেওয়া, নতুন মাদ্রাসার এমপিও ভুক্ত করন, ওএমআর কাটাকাটি করে একজনের রেজাল্ড অন্যজনকে দিয়া সহ হাতিয়ে নিতো লাখ লাখ টাকা। এঘটনায় বিতর্কিত অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ মৃধা দীর্ঘদিন জেল হাজতে ছিলেন। ও এমআর কাটাকাটির ঘটনায় তোড়পাড় সৃষ্টি হলে ভুক্তভুগী ছাত্র-ছাত্রী ও জনসাধারন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল, মানবন্ধন করেছিল। আবু ইউসুফ মৃর্ধার বিরুদ্বে আদমপুর এ,কে দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার অহিদুজ্জান সহ অনেকে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছেন। এর আগে পল্লীবেড়া ইকামাতেদ্বীন মডেল কামিল মাদ্রাসার সভাপতি এনামুল হক অপু তিনিও বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছিলেন। দুনীর্তি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মধ্যে আদমপুর এ,কে দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও শিক্ষকদের নিকট থেকে ৪৮ লাখ টাকা, ভাঙ্গা পাইলট হাইস্কুল থেকে শিক্ষকদের বিল করে দেওয়ার নামে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চল থেকে অনেক শিক্ষকদের নিকট থেকে বিভিন্ন কাজে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। এসব দুর্নীতির চিত্র সরেজমিনে তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে। তার সাথে রয়েছে নাটের গুরু, এরা নাকি শিক্ষা অধিদপ্তরের কয়েক কর্মকর্তা দুনীর্তির টাকায় করেছেন নিজেস্ব দামী বিলাস বহুল গাড়ী, পৌর সদরের উপর বহুতল ভবন সহ অনেক জায়গা-জমি। এতকিছুর পরও কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে সকলকে ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে রয়ে যান। অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ায় তার দুনীর্তির চিত্র আরো বেড়ে যায়। বর্তমানে অনিয়ম ও দুনীর্তির বিষয়ে তার বিরুদ্ধে দুদক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রনালয়, জেলা প্রশাসক ফরিদপুর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভাঙ্গার তদন্তাধীন রয়েছে। পল্লীবেড়া ইকামাতেদ্বীন কামিল মাদ্রাসার পিন্সিপাল আবু ইউসুফ মৃর্ধা জানান, আমার বিরুদ্ধে নিউজ করবে তাদের নামে আমি মামলা করবো। যে যত পারুক লিখুক আমি পরোয়া করি না। আদমপুর এ,কে দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার আমি কেউ না। আমি টাকা নিব কেন। আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করেছে তাহা মিথ্যা। এমপি সাহেব ডিও লিটার দিয়েছিল, সে আবার ফোন করে নিষেধ করে দিয়েছিল।