মো.শহিদুল ইসলাম
আদালতের রায় উপেক্ষা করে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিট্রা বিভাগের পরিচালক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে নৌযানের রুটপারমিট ও সময়সূচী দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা আমতলী নৌপথে নবনির্মিত এমভি শতাব্দী বাঁধন (এম-২৫৫০০) যার স্বত্বাধিকারী মেসার্স হাজী ইকবাল হোসেন শিপিং লাইনস লঞ্চের অনুক‚লে ঈদ স্পেশাল এর নামে গত ২৭ এপ্রিল ২০২২ থেকে ১০ জুন ২০২২ পর্যন্ত রুট পারমিট অনুমোদন দেন। যদিও অনুমোদন স্মারকে স্পষ্ট উল্লেখ্য আছে, ঈদ স্পেশাল রুট পারমিট ও সময়সূচী উল্লেখিত নৌপথে চলাচলকারি লঞ্চের নিয়মিত সার্ভিসের পরে এই নৌপথে রেগুলার সার্ভিস হিসেবে গন্য করা হবেনা।
কিন্তু তার পরেও টাকার বিনিময় পরবর্তীতে আবারো ঈদ স্পেশাল এর নামে ১৫ জুন ২০২২ পর্যন্ত রুট পারমিট ও সময়সূচীর অনুমোদন দেয়া হয়। শুধু তাই নয় গত ১৬ জুন ২০২২ নতুন করে আবারো শতাব্দি বাঁধন নৌযানকে আগামী এক মাসের রুটপারমিট ও সময়সূচীর অনুমোদন দেয়া হয়েছে। লঞ্চ মালিকপক্ষ দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ঢাকা-সবুজবাগ ফেরিঘাট (আমতলী) নৌপথে এমভি সুন্দরবন ৭, এমভি ইয়াদ ১, এম ভি তরঙ্গ ৭,এই তিনটি লঞ্চের অনুক‚লে একটি যৌথ রুট পারমিট সময়সূচী জারি করা আছে, এছাড়াও ওই নৌপথ রুটপারমিট সময়সূচী নতুন করে অনুমোদন প্রদান না করার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতের দায়েরকৃত দেওয়ানী মোকদ্দমা ৩২৫/২০১২ দেওয়ানী আপীল নং ৪৮২/২০১৬ এবং দেওয়ানী মোকদ্দমা ১৩০/২০২১ যুগ্ম জেলাও দায়রা জজ আদালত- ঢাকা, মামলাসমূহের নিষেধাজ্ঞা আদালতের রায়ে স্পষ্ট করে লেখা আছে।
অত্র আদেশ দ্বারা প্রতিপক্ষগণ বাদীর কোম্পানির জাহাজ যে রুটে চলমান সেই রুটে অন্য কোনো জাহাজ কোম্পানিকে চলাচলের জন্য অবৈধভাবে অনুমোদন প্রদান করতে না পারে। এই মর্মে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তার পরেও আদালতের রায় উপেক্ষা করে, বিআইডবিøউটিএর নৌ নিট্রা বিভাগের পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগী পরিচালকরা আদালতের রায় অমান্য করে মেসার্স হাজী ইকবাল হোসেন শিপিং লাইনস এর পক্ষে টাকার বিনিময় এমভি শতাব্দী বাঁধন নৌযানের অনুক‚লে রুট পারমিট এর অনুমোদন দেন। এ বিষয়ে নৌ নিট্রা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম দৈনিক আমাদের কন্ঠ‘কে বলেন, বিষযটি আমাদের ল’উপদেষ্টার সাথে আলোচনা করে চেয়ারম্যান স্যারের অনুমোদন নিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই তিনটি লঞ্চ যে রুটে চলে একই রুটে এমভি শতাব্দীর বাধন নৌযানকে অনুমতি দেয়া হয়নি। অন্য রুটে চলার জন্য বলা হয়েছে। সবুজবাগ আমতলী রুটের মেসার্স ই-আলী শিপিং লাইনস এমভি তরঙ্গ ৭ লঞ্চের মালিক হাফিজুর রহমান বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও বিআইডবিøউটিএ উর্দ্ধতন কর্মকর্তা পরিচালক রফিকুল ইসলাম এই লঞ্চটির রুট পারমিট ও সময়সূচী অনুমোদন দেন, এমত অবস্থায় উক্ত সময়সূচী অনুমোদন দেওয়ায় আমাদের এই রুটে চলাচল করা তিনটি লঞ্চই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এছাড়াও বর্তমানে উক্ত নৌপথে যাত্রী যাতায়াত এর পরিমান কমে যাওয়ায় আমাদের প্রতি ট্রিপে লস হচ্ছে এমন সময়ে এমবি শতাব্দী বাঁধন লঞ্চের অনুক‚লে জারিকৃত সময়সূচী দেওয়া হয়েছে, এতে আমাদের কোম্পানিসমূহের লঞ্চগুলো আর্থিক সংকট সম্মুখীন হবে।
দেখা যাবে একপর্যায়ে আমাদের কোম্পানিসমূহের লঞ্চগুলো এই রুটে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। সবুজবাগ আমতলী রুটের লঞ্চ ব্যবসায়ী মেসার্স এ আহম্মেদ শিপিং কর্পোরেশনের মালিক মামুনুর রশিদ বলেন, আমরা এমনিতেই এই রুটের লঞ্চ চালাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, তার পরেও আদালতে নিষেধাজ্ঞা আছে এরপর বিআইডবিøউটি কর্তৃপক্ষ শতাব্দি বাঁধন লঞ্চটিকে সবুজবাগ আমতলীর রুটে সময়সূচী ও রুট পারমিট দিয়েছেন। কারণ আমরা নিরীহ ব্যবসায়ী কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান,মেসার্স হাজী ইকবাল হোসেন শিপিং লাইনস মালিক ক্ষমতা এবং টাকার কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। এছাড়াও তার লঞ্চ যখন সদরঘাটে পার্কিং করে। তখন কেরানীগঞ্জের কিছু নেতাকর্মী সদরঘাটে আমাদের লঞ্চের সামনে বেরিকেড দিয়ে তাদের লঞ্চে যাত্রী নিয়ে যায়। এতে আমাদের আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সম্মুখীন হতে হচ্ছে।