শাহ্ মুহাম্মদ সুমন রশিদ, আমতলী, বরগুনা
আমতলী সদর ইউনিয়নের চলাভাঙ্গা গ্রামে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মানের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ৪৮.৮৫ একর জমি নির্ধারণ করে গত শুক্রবার ২৮৫ জন জমির মালিককে নোটিশ জারি করা হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পরই কৃষি জমি হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পরেছে গ্রামবাসী। বরগুনা জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের আওতায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানী অব বাংলাদেশ লি: এর মাধ্যমে সরকার ৪শ’ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মানের জন্য আমতলী সদর ইউনিয়নের ৫১ নং চলাভাঙ্গা মৌজার গ্রাম নির্বাচন করেন। জরিপ এবং যাচাই বাছাই শেষে ভূমি অধিগ্রহণের কার্যাক্রম শুরু করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন কার্যালয়। বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মানের জন্য ৪৮.৮৫ একর জমির প্রয়োজন। এই জমি নির্ধারন করে চলাভাঙ্গা গ্রামের ২৮৫ জন জমির মালিকে শুক্রবার সকালে বরগুনা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান এবং সার্ভেয়ার মো. আলী হোসেন কর্তৃক স্বাক্ষরিত ভূমি অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ জারি করা হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পর অনেকেই তাদের একমাত্র কৃষি জমি হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পরেছেন। নোটিশ পাওয়া চলাভাঙ্গা গ্রামের গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমি ১৫ লাখ টাকা খরচ করে পেঁপে বাগান, মাছের ঘের, লাউ এবং সবজি চাষ করেছি। আমার ঘেরের সব জমি চইল্যা যাইবে। এর পর আমি কি করে সংসার চালাবো দুশ্চিন্তায় ঘুম হয় না। নাসির খান ও সেকান্দার খান বলেন, মোর ধানের জমি নাই। বাড়ির যে টুকু জমি আছে সব জমি নেওয়ার জন্য নোটিশ আইছে। এহন মোরা কুম্যে যাইয়া থাকমু। হেই চিন্তায় আছি। সেরাজ খান জানান, তার বাড়ির সাড়ে ১৩ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ করা হয়েছে। বাপ দাদার কাইল্যা সব জমি লইয়া যাইবে। মোরা হেইয়ার পর কুম্যে যাইয়া ধান লাগাইয়া খামু। ছত্তার হাওলাদার বলেন, মোগো তিন ফসলী জমি বিদ্যুতের লইগ্যা এহন সব লইয়া যাইবে। মোগো জমি জমা আর কিছু থাকবে না। মোরা কই যাইয়া খামু , কি করমু হেই দুশ্চিন্তায় আছি। আমতলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, অধিগ্রহণ করা জমির প্রকৃত মালিকরা যাতে ন্যায্য মূল্য পায় সে জন্য আমি প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ রাখবো। বরগুনা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানী অব বাংলাদেশ লি: এর জন্য বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মানের জন্য আমতলী সদর ইউনিয়নের চলাভাঙ্গা গ্রামের ৫১ নং মৌজার ৪৮.৮৫ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য ২৮৫ জন ভূমির মালিকে নোটিশ প্রদাণ করা হয়েছে।