শরিফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ:
বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কৃষিতে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে । কৃষিকাজে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং গবেষণা করে বিভিন্ন উৎপাদনশীল ফসল বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে এখন কৃষকভাইরা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। কৃষক ভাইয়েরা যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য প্রতিবছর কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সকাল দশটায় মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরি এলাকায় ব্রি ধান ৯২ জাতের বীজ উৎপাদনকারী ব্লকের কৃষকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী ডঃ আব্দুর রাজ্জাক এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি কৃষিতে যদি উন্নতি না হয় দেশ টিকে থাকবে না। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে দেশ থেকে গম আসে না।
ইতোমধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দুর্বিক্ষ হাতছানি দিয়েছে। কাজেই কৃষিতে স্বয়ং সম্পূর্ণ থাকতে হবে।’ দেশে খাদ্য শষ্য যথেষ্ঠ আছে কোন হাহাকার নেই মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবি এবং বিএনপি’র ফখরুল ইসলাম প্রতিদিন টেলিভিশনের সামনে আসে – বাংলাদেশ ডুবে গেল, বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে মরল। এরকম একটা অবস্থা। মনে হয় যে, বাংলাদেশের দুর্বিক্ষ, শকুনেও লাশ খেয়ে শেষ করতে পারবে না। এমন একটা পরিস্থিতি বাংলাদেশে চলতেছে।’ ব্রি ধান ৯২ জাতের প্রসংশা করে মন্ত্রী বলেন, একজন শ্রমিক, দিনমজুর, রিক্সা চলক সেও সরু চাল খেতে চায়। ৯২ জাতের ধান থেকে পাওয়া চাল চিকন। এযাবত কালের সবচেয়ে বেশি উৎপাদনশীন ৯২ জাতের ধান। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রতি শতকে কমপক্ষে ১মণ ধান পাওয়া যায়।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে নতুন-নতুন জাত উদ্ভাবন করছে। আমরা এর সুফল পেতে শুরু করেছি। সবার মুখে পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের পক্ষ থেকে চেলেঞ্জ গ্রহণ করেছি। ‘৭১-এর যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষ। জমি ছিল মাথাপিছু ২৮ শতাংশ। এখন সতের কোটি মানুষ, জমি মাথাপিছু ১০ শতাংশ। আগে খাদ্যের অভাব ছিল, খাদ্য ঘাটতি ছিল। খাদ্যের জন্য সারা পৃথিবীতে আমরা খাদ্যের ঝুরি নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। অন্য দেশের সাহায্য-সহযোগীতা ছাড়া মানুষকে খাওয়ানো কঠিন হয়ে যেত। তখন দেশে দুর্ভিক্ষ হতো। প্রতি বছর আশ্বিন-কার্তিক মাসে মঙ্গা হতো। কোন মানুষের ঘরে খাবার থাকতো না। সেই বাংলাদেশে আজকে কোন মানুষ দুই বেলার কম খায় না। সবাই দুই বেলার বেশি খায়। কোন কোন বছর খাদ্য উদ্বৃত্ত হচ্ছে। আমরা বহিরবিশ্বে তা রপ্তানি করছি। আমদের এই সাফল্য এবং অর্জন সফল হয়েছে সরকারের দুরদর্শী নেতৃত্বে।’
এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীর, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, ঘিওর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হামিদুর রহমান, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. আব্দুস সালাম, ঘিওর থানার অফিসার ইনচার্জ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব, উপজেলা কৃষি অফিসার শেখ বিপুল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদ শামীম, বানিয়াজুরী ইউপি চেয়ারম্যান আনসারী বিল্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।