কঞ্জন কান্তি চত্রুবর্তী, রাজাপুর, ঝালকাঠি:
কয়েক হাজার ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক ও মিশুক এর কারনে বরিশাল-খুলনা-পাথরঘাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির রাজাপুরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিমুহুর্তে ফায়ারসার্ভিস, এ্যাম্বুলেন্স সহ পিরোজপুর, খুলনা, যশোর, বেনাপোল, মঠবাড়ীয়া, পাথরঘাটা গামী যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনগুলোকে পড়তে হয় তীব্র যানজটের এবং পথচারীদের রাস্তা পারাপারে সৃষ্টি হয় বিড়ম্বনা। এছাড়া অদক্ষ চালকের কারনে প্রায়ই ঘটছে দূর্ঘটনায়।বরিশাল-খুলনা-পাথরঘাটা আঞ্চলিক মহাসড়কে দূর পাল্লার যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ী চলাচলের ব্যস্ততম সড়ক রাজাপুরের বাঘড়ী বাজার,মেডিকেল মোড় ও বাইপাস মোড়। এই সড়ক থেকে পিরোজপুর, খুলনা, যশোর, বেনাপোল, মঠবাড়ীয়া, পাথরঘাটা গামী যানবাহন চলাচল করে। আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় অর্ধেক যায়গা দখল করে মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো ইজিবাইক ও মিশুক স্টান্ড।
এই সড়কের গুরুত্বপূর্ন রাজাপুরের বাঘড়ী বাজার, মেডিকেল মোড় ও বাইপাস মোড়ের দৃশ্য দেখলে মনে হবে পুরোটাই যেনো অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও মিশুকের শহর। রাজাপুরের বাঘড়ী বাজার সপ্তাহে দু-দিন হাট বসে এছাড়াও এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে এবং হাজার হাজার দূর পাল্লার যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ী, এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস সহ প্রশাসনের গাড়ী চলাচল করে কিন্তু তাদের প্রায়ই পড়তে হয় তীব্র যানজটে আঞ্চলিক মহাসড়কে স্টান্ড ও চলাচালকারী হাজার হাজার ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক ও মিশুকের কারনে। এই সড়কে যানজট লেগেই থাকে। এছাড়া পথচারীদের রাস্তা পারাপারেও পোহাতে হয় দূর্ভোগ। সড়কের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যতদুর চোখ যায় শুধু ইজিবাইক, মিশুক ও অটোরিক্সাই দেখা যাবে। এই সড়ক ছাড়াও আঞ্চলিক মহাসড়কের বাইপাস মোড়ে অটো স্টান্ড করে রাস্তার অর্ধেক দখল করে থাকে প্রায় শতাধিক ইজিবাইক ও মিশুক। যে কারনে দূর পাল্লার পরিবহন,পণ্যবাহী ট্রাক,প্রসাশনের গাড়ী সহ ব্যক্তিগত গাড়ীকে পড়তে হয় তীব্র যানজটে। পথচারিরা পারেনা রাস্তা পারাপার হতে, এমনকি রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা পথচারীদের ধাক্কা দিয়ে আহত করার ঘটনাও ঘটে চলেছে। স্কুলগামী বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে নানা সমাস্যায় পরতে হয় তাদের বাবা মায়ের।
রাস্তায় চলাফেরায় যেনো ইজিবাইকগুলোই ঝুঁকির কারন। উপজেলা সদরের মেডিকেল মোড়, বাদুর তলা মোড়, বাঘড়ী বাজার, ডাক বাংলো মোড়, বাইপাস মোড় ছাড়াও নৈকাঠি মোড়, আমতলা বাজার, গালুয়া বাজার, পুটিয়াখালি বাজারের প্রদান প্রদান সড়ক জুড়ে রয়েছে অবৈধ ইজিবাইক ও মিশুকের স্টান্ড। এই মিশুক ও ইজিবাইক স্টান্ড গুলো চালাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। বিভিন্ন নামে সমিতি খুলে চালকদের সমিতির অর্ন্তভুক্ত করে প্রভাবশালী মহল চালকদের কাছ থেকে সমিতি ভেদে দৈনিক বা সাপ্তাহিক ২০ টাকা হারে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। রাস্তায় কেউ নতুন গাড়ী নামালে তাদের কাছ থেকে সমিতিতে ভর্তির নাম করে দুই হাজার টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার পযর্ন্ত টাকা উত্তলন করার অভিযোগও অভিযোগ রয়েছে। রাজাপুর প্রায় সহ¯্রাধিক ইজিবাইক, মিশুকও অটো রিক্সা রয়েছে। রাজাপুর উপজেলা মিশুক ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন, রাজাপুর বাইপাস মোড় ইজিবাইক সমিতি, মেডিকেল মোড় অটো শ্রমিক সমিতি.নৈকাঠি অটো শ্রমিক সমিতি, মুক্তিযোদ্ধা পরিবহন ইজিবাইক সার্ভিস সহ নামে বেনামে রেজিস্ট্রেশন বিহীন অগনিত সমিতি গড়ে উঠেছে। করোনা কালীন সময়ে ইজিবাইক ও মিশুকের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন হয়ে গেছে। অনেকেই চাকুরী হারিয়ে একটি ইজিবাইক বা মিশুক কিনে জিবিকা নির্বাহ করছে।
কিন্তু এদের কারোরই গাড়ী চালানোর প্রশিক্ষণ নেই। রাজাপুরের মত একটি ছোট শহরে কেন এত অটো রিক্সা ,ইজিবাইক ও মিশুক সে প্রশ্ন এখন উপজেলাবাাসীর। এছাড়াও রাজাপুরে ইজিবাইক ও মিশুকের জন্য নির্দিষ্ট কোন ষ্টপিজ নেই। তাই আঞ্চলিক মহাসড়কের অর্ধেক যায়গা জুড়েই এলোপাথারি পার্ক করা থাকে ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক, মিশুক ও অটো রিক্সাগুলো। আবার অনেক শিশু কিশোর ও শারীরীক প্রতিবন্ধীকেও দেখা যায় এই গাড়ী চালাতে। এসব অটো রিক্সা,ইজিবাইক ও মিশুকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের চলাফেরা করতে হয়। ২-১দিন ট্রেনিং দিয়েই অনেকে অটো নিয়ে নেমে পরেন সড়কে। এ অবস্থায় আঞ্চলিক মহা সড়কে শৃংখলা ফেরাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা উপজেলাবাসীর। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাজাপুর সার্কেল মোঃ মাসুদ রানা জানান, আঞ্চলিক মহাসড়রকের মোড়ে মোড়ে ইজিবাইক স্টান্ড ও মটরসাইকেল স্টান্ড থাকলে পরিবহন চলাচলে ব্যত্তয় ঘটে। সড়কের শৃংখলা ফেরাতে আমরা জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও বাজার কমিটির লোকজন নিয়ে এই সব স্টান্ডগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে দূরে সরাতে চেষ্টা করব।