ইন্দুরকানী, পিরোজপুর প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পিরোজপুরের উপকূলীয় ইন্দুরকানী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মাছের ঘেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপকূল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ও নদীর জোয়ারের পানি উপচে পড়ে ভেসে গেছে সাড়ে সাতশতাধি মাছের ঘের। সর্বশান্ত হয়েছে মাছ চাষীরা। এছাড়া উপজেলায় কমপক্ষে তিরিশটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় মৎস্য চাষিরাই সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবের পর ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করেছে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর। উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ৭৫০টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতি পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১কোটি ৬১ লক্ষ ২৫০০০ হাজার টাকা। ইন্দুরকানী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জুলফিকার আলি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবের পর উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ¡াস হয়েছে। উপজেলা সৎস্য কর্মকর্তা বলেন,গত বছর আম্পানের থেকেও এবছর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতির পরিমাণ বেশী দােিয়ছে। বর্তমানে ঘেরের মাছগুলো সব বিক্রি উপযোগী হয়ে গিয়েছিল। যার কারণে চাষীদের ক্ষতি বেশী হয়েছে। মৎস্য খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবছর আম্ফানের থেকেও বেশি ক্ষতি হয়েছে আমাদের এখন মাছ বিক্রির সময় কাছা কাছি ছিল এমন সময় সব ভেসে গেছে আমরা এখন সর্ব শান্ত হয়ে গেলাম। এখন বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও বৃষ্টিতে পানি বেড়ে সেটুকু পূরণ হচ্ছে। ফলে তাদের মাছের ঘের ও পুকুরের পাড় পানির নিচে নিমজ্জিত ছিল। ¯’ানিয় সড়ক, বাড়িঘর, উঁচু জমিসহ ঘেরের ওপর সব ধরনের সবজিগাছও তলিয়ে গেছে।তারা বলেন, প্রতিদিন প্রচুর বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানিতে এলাকায় মাছের ঘেরগুলোয় পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় ভেসে গেছে মাছ।ব্যাংক লোনসহ অনেকে বেশি সুদে টাকা নিয়ে মাছ চাষ করেছে। বন্যার পানিতে পুকুর ডুবে সর্বস্ব হারিয়ে এখন নিঃস্ব এসব মাছচাষি। সদর ইউনিয়নের উঃ কালাইয়া গ্রামের চিংড়ি ও সাদা মাছ চাষি ইলিয়াস হোসেন (ভুট্টো) বলেন, ‘আমি এ বছর ধারদেনা করে এবং পল্লি দারিদ্র্য বিমোচন থেকে ১ লাখ টাকা লোন নিয়ে মাছের চাষ করেছি। কিন্তু বন্যায় আমার ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সব চিংড়ি ও সাদা মাছ বেরিয়ে গেছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। মৎস্য চাষি আবু হানিফ জানান, এ বছর কড়া সুদে টাকা এনে ঘের কেটে তাতে মাছ চাষ করে প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা দেনা হয়েছি। বন্যার শুরু থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন মাছ আটকিয়ে রাখার জন্য, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাছ আটকাতে পারেননি।তারা বলেন, চারপাশে নেটের বাঁধ ও কচুরিপানা দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়ে ছিল কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি, সব মাছ ভেসে গেছে। ঘেরের ওপর দুই হাত পানি। তাই শত চেষ্টাতেও কোনো মাছ রাখা সম্ভব হয়নি বলে তারা জানান।অপরদিকে মৎস্য ঘের মালিক রাম ব্যাপারী বলেন, ‘এ বছর আমি ঘেরে সাদা মাছের চাষ করেছি। সবই এখন পানিতে তলিয়ে আছে। নেট দিয়ে বাঁধ দিয়েছি, এতে কোনো কাজ হবে বলে আমার মনে হয় না। তাই এ বছর বন্যায় আমার প্রায় এক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ বলেন, উপকূলীয় বিভিন্ন ইউনিয়নের ১০টি বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে ভাটার সময় পানি সরে গেলেও বর্তমানে ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্ধি হয়ে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার, জুন ১
সংবাদ শিরোনাম
- জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু
- লঞ্চে মোটরসাইকেল পারাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকছে না
- দেশের সবচেয়ে বড় এডুকেশন এক্সপো সোমবার
- কমলগঞ্জে অভিনব কায়দায় সিএনজি চুরি : কৌশলে নগদে টাকা আদায়
- রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উন্মোক্ত বাজেট ঘোষণা
- এনবিআরের দাবি করা কর দিতে হবে ড. ইউনূসকে
- কাউকে জেতানো বা পরাজিত করা ইসির দায়িত্ব নয়
- ভালুকায় অসংক্রামন রোগের কারণ ও প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত