সেলিম নিজামী
মূর্তিমান আতঙ্কের এক নাম মাহমুদুল হাসান পলিন ও শামীম। বাবা আব্দুল লতিফ জাতীয় পার্টি ও চাচা মনির হোসেন বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্তথাকলেও সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার তুখোর চাঁদাবাজ ভাগিনা আজমত আলীর সহযোগিতায় মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বনে যান দক্ষিন সিটির ডেমরা থানাধীন ৬৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। সেইসাথে এমপির ছেলে সজল মোল্লা এবং শ্যামল মোল্লার সহযোগিতায় নির্বাচিত হন ৬৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়ার পরই তিনি হয়ে ওঠেন মূর্তিমান আতঙ্ক। গড়ে তুলেন ক্যাডার বাহিনী। শুরু হয় অঘোষিত রাজত্ব। পলিন তার আপন খালু শামীমকে সাথে নিয়ে ডেমরা রাণীমহল এর পিছনে সান্দিরা বালুর ঘাট দিয়ে শুধুমাত্র পাথর বালু উত্তোলন করার অনুমতি থাকলেও খাদ্য মন্ত্রণালয়, বিআইডবিøটিএ ও প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে কেবল মাত্র নৌ-পুলিশের ডেমরা ফাঁড়ির সহযোগিতায় বড় বড় কার্গো জাহাজে করে আনা সান্দিরা বালুর ঘাটে রেখে প্রতিমাসে কমপক্ষে এক লক্ষ টন গম এবং আরো ৫০ হাজার টন অন্যান্য সামগ্রী খালাস করা হয়। যার কারণে সরকার কোটি কোটি রাজস্ব হারাচ্ছে আর প্রতিমাসে পলিন ও শামীম বাহিনীর পকেটে ঢুকেছে কোটি কোটি টাকা। এ বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে আলাপ করলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সারুলিয়া ও সুকুরশীর বাসীন্দাদের কয়েকজন বলেন পলিন আর শামীম এখন দ্বিতীয় নূর হোসেন অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মার্ডার মামলার আসামির মতোই তারা যা ইচ্ছা তাই করছে। তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুল্লেই দিতে হবে জীবন। তারপরও অনুসন্ধানী প্রতিবেদক টিম কয়েকজন লেবারদের সাথে আলাপ কালে জামাল উদ্দিন, আকাশ, জনি, আকবর, সোলায়মান রা বলেন আমরা নির্বিঘেœ গম নামাচ্ছি। এখানে কেউ কিছু বলার ক্ষমতা রাখেনা কারণ সব দায়িত্ব শামীম ভাই ও কমিশনার পলিন ভাইয়ের হাতে। আমরা শান্তিতেই কাজ কাম করছি দীর্ঘদিন থেকে।গমগুলো খালাশের পর কোথায় যাচ্ছে, প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন উত্তরবঙ্গ, রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা সহ বেশ কয়েকটি জেলায়। আর কি কি এই ঘাট দিয়ে খালাস করা হয় প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন মাঝেমাঝে দেখি ১৮ থেকে ২৫ বছরের ১৫ / ২০ জন ছেলেপেলে এসে নৌকা থেকে কার্টুন নামিয়ে প্রাইভেট ও মাইক্র দিয়ে চলে যায়। সান্দিরা বালুর ঘাটের বিষয়ে কথা হয় নারায়ণগঞ্জ নৌবন্দর ও পরিবহন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক শেখ মাসুদ কামালের সাথে। তিনি বলেন ওই ঘাটে জাহাজ থেকে গম খালাস করার কোন অনুমতি নেই, তাছাড়া ঘটনাটি আমার জানা নেই। এ ধরনের কোন প্রকার ঘটনা ঘটে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । ঢাকা ৫ আসনের সাংসদ কাজী মনিরুল ইসলাম মনু-কে পাওয়া না গেলেও পিএস জিয়া উদ্দিন জিয়া বলেন, পলিনের বিষয়ে অনেক কথা শুনি কিন্তু এ বিষয়টি জানা নেই যদি ঘটনাটি সঠিক হয় আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে জাহাজ জব্দসহ জড়িত শামীম ও পলিন গংদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে। নদীতে গম খালাসের বিষয়ে ডেমরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ মোঃ এরফান বলেন,নদীতে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ যে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা দেখার দায়ীত্ব আমাদের, গম খালাসের বিষয়টি দেখবেন নারায়নগঞ্জ নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষ। এমপির বাসায় ওয়েটিং রুমে অবস্থান কালে আওয়ামী লীগ নেতা আকবর বলেন পলিন তার আপন খালু মোহাম্মদ আলীকে মেরেছে । বাড়িতে হামলাও করেছে। যার জন্য পলিনের সহযোগী আরেক চাঁদাবাজ আজিজ প্রধানের পদ বাতিল ও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অভিযুক্ত শামিমের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আমি পলিনের সাথে আছি তবে সব বিষয়ে পলিনিই জানে, আমার জানামতে পলিন ঘাটটি ডাক নিয়েছে।এটাতো বন্ধর নয়, আপনারা গম সহ বিভিন্ন জিনিস খালাস করছেন কেন? প্রশ্নের জবাবে শামীম বলেন, আমার নাম্বার পাইছেন কই?একটু দেখা করেন সামনাসামনি কথা বলি। অনেক চেষ্টার পরও অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা ও রানিং কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান পলিনের কোন প্রকার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।