জহির মারুফ, কুমিল্লা
সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণায় এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে কুমিল্লা শহর। এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলিগের সাধারন সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। তার প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপি থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী কয়েক বারের নির্বাচিত মেয়র মো মনিরুল হক সাক্কু ও সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দলের কুমিল্লা জেলা সভাপতি মো নিজাম উদ্দিন কায়সার।
এবারের নির্বাচনে এই তিন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, নির্বাচনের মাঠে ব্যক্তি ইমেজ ও ক্ষমতাশীন স্থানীয় এম,পি সাহেবের আর্শিবাদ থাকায় মো আরফানুল হক রিফাত অনেক এগিয়ে। তাছাড়া কুমিল্লা শহরে সামাজিক উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় তিনি নগরীর উন্নয়নে বেশকিছু কাজ করেছেন। তবে পাশাপাশি মনিরুল হক সাক্কু ও নিজাম উদ্দিন কায়সার কে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন রয়েছে তাদের পক্ষে। সেক্ষেত্রে কুমিল্লা আওয়ামী লীগের আফজাল বাহারের প্রকাশ্যে ধন্ধের অবসান হলেও আওয়ামী লীগের কিছু অংশ এবং বিএনপি ও নৌকা বিরোধীপক্ষের ভোট পড়তে পারে মনিরুল হক সাক্কু ও নিজাম উদ্দিনব এর ব্যালটে। ফলে ১৫ জুন নির্বাচনের ফলাফল যে কারও পক্ষে যেতে পারে। তারা আরও বলছেন, আরফানুল হক রিফাত সাহসী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে খুব সহজে মিশতে পারেন। বিশেষ করে নারী ও নতুন ভোটারদের কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয়।
স্থানীয়দের অভিমত, নির্বাচনের মাঠে দলীয় প্রার্থী না থাকলেও বিএনপি এবং জামায়াতের সমর্থকদের ভোট মনিরুল হক সাক্কু ও নিজাম উদ্দিন কায়সার এর পক্ষে যেতে পারে। পাশাপাশি হেফাজতে ইসলামের সমর্থকদের প্রার্থী থাকায় কিছুটা বেকায়দয় আছেন বি,এন,পি থেকে অব্যাহত প্রর্থীরা । অন্য দিকে আফজাল পুএ পারভেজ নৌকার পক্ষে থাকার ঘোষণা দিলেও তার অনুসারীদের শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না সংশয় থেকেই যাচ্ছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ওয়ার্ডগুলোতে মেয়রপ্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা তুলনামূলক কম। মূলত ওয়ার্ডগুলোতে কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণাই চলছে বেশি। প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ঘরানার একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। ফলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মীরা মেয়র প্রার্থীর বদলে পছন্দের কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলীয় প্রার্থী না থাকায় বিএনপি কর্মীরা অনেকটাই নীরব ভ‚মিকা পালন করছেন।
এমনকি কোথাও কোথাও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারের ভিড়ে মেয়র প্রার্থীর পোস্টার চোখেই পড়ছে না। কুমিল্লার প্রাণকেন্দ্র কান্দির পাড় মোড়ে কথা হয় চায়ের দোকানি মো. ইরফানের সঙ্গে। সাত বছরের বেশি সময় ধরে এই এলাকায় চা বিক্রি করা নিরব বলেন, কুমিল্লার নির্বাচন পরিস্থিতি গতবারের তুলনায় এবার ভিন্ন। আরফানুল হক রিফাত বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন। কিন্তু এবার রিফাত নাকি সাক্কু কায়সার কে পাস করবেন বলা মুশকিল। তিন জনের মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তিনি বলেন, রিফাত সাধারণ মানুষের কাছে এখনো জনপ্রিয়। তার ইমেজ খুব ভালো। গতবার সাক্কু বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। তখন আওয়ামী লীগের একটি অংশ অভ্যন্তরে সাক্কুর পক্ষে ছিল। রিফাত এর সাথে এবার প্রকাশ্য এম,পি বাহার কাজ করছেন। যে যাই বলুক কুমিল্লার নির্বাচনে এম,পি বাহার একটা বড় ফ্যাক্ট। সুতরাং মনিরুল হক সাক্কুর জন্য এবার বিজয়ী হওয়া কঠিন হবে।