মোরশেদ উল আলম, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর:
কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় পানচাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পানচাষিরা। চাষে সাফল্যও পেয়েছেন তারা। তাই দিনদিন পানের বরজের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জানা গেছে, উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নে এই পানের বরজের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এ ইউনিয়নের দুবলিয়া গ্রামের এই পানচাষকে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া আর্শীবাদ মনে করে চাষীরা। গত ১০ বছর থেকে বর্তমানে উপজেলায় পানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ৭.৬ একর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। তৎমধ্যে উপজেলার দুবলিয়া গ্রামেই ৯৫ ভাগ পানচাষ করা হয়।
বর্তমানে উপজেলার ৩০টি পরিবার এই পানচাষের সাথে জড়িত। দুবলিয়া গ্রামের পানচাষি ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের এখানে মিষ্টি ও সাচি পান চাষ করা হলেও মোট চাষের ৮০ ভাগই মিষ্টি পান চাষ করি আমরা। এখানকার সব পরিবার এক সময় ব্যবসা আর শখের বসে পানের বরজে পানচাষ শুরু করেন। গ্রাম কিংবা শহরে অতিথি আপ্যায়নে এ পানের এখনো চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও চুন ছাড়া পান পাতার রস আর কাঁচা সুপারির রস হার্টের উপকারিতা ছাড়াও ছাঁচি পানের রস দিয়ে যৌনরোগের ওষুধ তৈরি করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গ্রামের কবিরাজরা বেশ নাম রেখেছে। আরেক পানচাষি রঞ্জনা রায় বলেন, পান চাষ করেই আমাদের সংসার চলে। আমি ও আমার স্বামী দু’জনেই পানের বরজে কাজ করি। ৩২ বছর ধরে পানের বরজ করে আসছি। বর্তমানে ২৩ শতক জমিতে পানের বরজ রয়েছে। প্রতিহাটে সপ্তাহে দুই দিন ১৩-১৫ হাজার টাকার পান বিক্রি করি।
দিনাজপুর শহর থেকে দুবলিয়া গ্রামে পান কিনতে আসেন পান ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ। তিনি জানান, এখানকার পান সুস্বাদু হওয়ায় এ পানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমি দীর্ঘদিন ধরেই এ এলাকা থেকে পান কিনে বাজারজাত করি। তারা পানচাষ করে এখন অনেকটাই স্বাবলম্বী। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব রায় বলেন, খানসামা উপজেলার মাটি পানচাষের জন্য উপযুক্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে পানের চাষ করে চাষিরা। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামের চাষীরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পানের চাষ শুরু করেছে। প্রতিবছর পানের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সকল প্রকার পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।