এস এম রাজু আহমেদ
গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন সার্কেল/বিভাগে দৈনিক ভাউচার ভিত্তিক মজুরীতে অন্তত দুই হাজারের অধিক শ্রমিক কাজ করে আসছে। অথচ সরকারী চাকুরী বিধি অনুযায়ী এসব শ্রমিকদের কাজের মেয়াদ ১২/১৩ বছর পূর্ণ হওয়ার পরে তাদেরকে চাকুরীতে স্থায়ীকরণ করার বিধান থাকলেও অর্থ লোপাটের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকায় তাঁদেরকে চাকুরীতে স্থায়ীকরণ করছে না গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এসব শ্রমিকদের তথ্যাবলী সংক্রান্ত নামের তালিকা চেয়ে চিঠি প্রেরণ করার দুই বছর অতিবাহিত হলেও ওই চিঠির কোনো জবাব প্রদান করেননি এই প্রকৌশল। অভিযোগ উঠেছে, এসব শ্রমিকদের জন্য মন্ত্রনালয় বাৎসরিক যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় গণপূর্তের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সেই বরাদ্দের কিছু অংশ তাদের জন্য ব্যয় করে বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়ে থাকেন। একারণে যুগের পর যুগ চলে গেল তাদেরকে চাকুরীতে স্থায়ী করা হচ্ছে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন সার্কেল/বিভাগে ভাউচারে কর্মরত মোট ১৭১৫ জন কর্মচারীর চাকুরীকাল ১৩ বছর পূর্ণ হওয়ার প্রেক্ষিতে কার্য-ভিত্তিক (ওয়ার্কচার্জড) প্রতিষ্ঠান আনয়নের বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত ২৫.০০.০০০০.০১৪.১১.০০৮.১৯.৪৮৪ নং স্মারক মূলে ২ডিসেম্বর-২০২০ তারিখে প্রমানক সহ মতামত প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পত্রের মর্মানুযায়ী তার দপ্তরাধীন ভাউচারে কর্মরত ১৭১৫ জন কর্মচারীর মধ্যে ৪২ জনকে কোর্টের মাধ্যমে নিয়মিত করা হয়েছে। অবশিষ্ট কর্মচারীদের চাকুরীকাল ১৩ বছর পূর্তি সাপেক্ষে কার্য-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে আনয়নের লক্ষ্যে সকল ভাউচার ভিত্তিক কর্মচারীদের তথ্যাদি সংযুক্ত মোতাবেক নামের তালিকা সংশ্লিষ্ট সার্কেলের মাধ্যমে পত্রের প্রাপ্তির ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ১৩ বছর পূর্তি সাপেক্ষে কর্মচারীদের নামের তালিকা পৃথকভাবে বিশেষ বাহক মারফত নণ্দিতা রানী সাহা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সংস্থাপন) গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকার বরাবর প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এব্যাপারে প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার বলেন, নানা জটিলতার কারণে এদেরকে স্থায়ীকরণ করা হচ্ছে না, কি এমন জটিলতা রয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে এড়িয়ে যান। তবে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দৈনিক ভাউচারে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য মন্ত্রনালয় থেকে আসা বাৎসরিক বরাদ্দের সামান্য অংশ তাদের জন্য ব্যয় করে বাকি টাকা অন্যান্য খাতে খরচের নামে নিজের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে থাকেন। এসব কর্মচারীদের চাকুরীতে স্থায়ীকরণ করা হলে যার যার বেতন-ভাতা তার তার একাউন্টে জমা হবে। একারণে লুটপাট করার সুযোগ থাকবে না। তাই একজন কর্মচারীর কাজের মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পরেও তাদেরকে চাকুরীতে স্থায়ীকরণ করা হচ্ছে না। ফলে এসব কর্মচারীরা অর্থাভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন পরের পর্বে।