গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের নব জাতীয়করণকৃত বৌলের পাড়া ও বিষ্ণুপুর উত্তরপাড়া কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন ভ‚য়া শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলনে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি। দৈনিক আমাদের কন্ঠ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তদন্তে সত্যতা মিললেও তাদের বেতন বন্ধ না হওয়ায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিইও) ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিও) এর ভ‚মিকা নিয়ে সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়াছে। জানা গেছে, গাইবারন্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নে অবস্থিত বৌলের পাড়া ও বিষ্ণুপুর উত্তরপাড়া কমিউনিটি বিদ্যালয় হিসাবে শুধুমাত্র ১ম ও ২য় শ্রেণীর অনুমোদনক্রমে পাঠদান করে আসাকালীন ২০১১ইং সালে ৩য় শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের অনুমোদন মেলে।
এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিধি সম্মত ভাবে কোন শিক্ষক নিয়োগ না করায় ২০১৩ইং সাল পর্যন্ত পূর্বে নিয়োগকৃত শিক্ষকই পাঠদানের কার্যক্রম পরিচালনা আসাকালীন সরকার একযোগে সারা বাংলাদেশের বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিকে সরকারী ঘোষনা দেন। ফলে এ সুযোগকে কাজে লাগাতে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আতাত করে যোগসাজসিক ভাবে ব্যাকডেটে ভুয়া শিক্ষক শিক্ষকের প্রস্তুতি নেন। এক পর্যায়ে ২০১৭-১৮ইং সালে তারা বিদ্যালয় ২টি’তে অর্ধ কোটি টাকার বিনিময়ে ব্যাকডেটে জ্বাল কাগজপত্র তৈরী করে ৪ জন ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দেন। বৌলের পাড়া নব জাতীয়করণ কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক সাথী আকতার, শাহানারা বেগম ও বিষ্ণুপুর উত্তর পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জান্নাতুন ফৌরদৌস এবং ফরহাদ হোসেনের নিয়োগ পত্রে দেখা যায় যে, তারা ২০০৮ইং সালে যোগদান করেছেন। অথচ বিদ্যালয় ২টির শিক্ষক হাজিরা খাতায় ২০০৮ইং থেকে ২০১৭ইং সাল পর্যন্ত কোন সহি/স্বাক্ষর নেই। এমন কি বিভিন্ন তথ্য ছকেও তাদের নাম নেই। এ ছাড়াও ২০১৩ ও ২০১৬ইং সালে সরকারী শিক্ষক গেজেটেও তাদের নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সরকারী নীতিমালা লংঘন করে বিদ্যালয় ২টি প্রধান শিক্ষক, কমিটি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ক্যাচমেন্ট এলাকার বাহিরে সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা ও ৪ জনকে গোপনে ব্যাকডেটে ভুয়া নিয়োগ দেন। নিয়োগপত্রে বোয়ালী ইউনিয়নের ঠিকানা দেখাইয়া সভাপতি ছিলেন না এমন লোকের স্বাক্ষর করে নিয়োগ দেখান। প্রমাণ স্বরুপ বোয়ালী ইউনিয়নের বাসিন্দা নয় তা উল্লেখ করে নাগরিকত্ব সনদ দেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এ ব্যাপারে গত ১৬/০১/২০২২ইং তারিখে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমাদের কন্ঠ পত্রিকাসহ বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলে গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হোসেন আলী উক্ত বিদ্যালয়ের ভুয়া ৪ জন শিক্ষকের ব্যাপারে তদন্যের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশমূলে পত্র দেন।
এরই প্রেক্ষিতে গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাকিরুল ইসলাম একটি দায়সারা গোছের তদন্ত কমিটি গঠন পূর্বক একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ প্রতিবেদনেও ঐ ৪ জন ভুয়া শিক্ষক ২০০৮ইং সাল হতে ২০১২ইং সাল পর্যন্ত হাজিরা খাতা ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কপি দেখাতে পারেননি বলে উল্লেখ করা হয়। বর্তমান ক্ষমতাশীন আওয়ামীলীগ সরকার দুর্নীতি প্রতিরোধে বদ্ধ পরিকর ঠিক এমনি সময়ে কিভাবে এ বিদ্যালয় ২টিতে ৪ জন ভুয়া শিক্ষক সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আসছেন। বিজ্ঞ সচেতন মহলে প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ আদৌকি এ দূর্নীতিবাজ ভুয়া শিক্ষকদের বেতন বন্ধসহ আইনী ব্যবস্থা নেবেন নাকি তারা পার পেয়ে যাবেন।