রাজধানীর শান্তিনগরের বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ৪৯টি ‘ভুয়া’ মামলার বাদীদের খুঁজে বের করতে দায়ের করা রিট আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৩ জুন এ বিষয়ে শুনানি করতে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেছে। আদালতে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন ও অ্যাডভোকেট এমাদুল হক বসির। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে এমাদুল হক বসির বলেন, আদালত বলেছেন, ১৩ জুন রবিবার রিট মামলাটি শুনানির জন্য টপে থাকবে।
হত্যা, ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ প্রায় অর্ধশত মামলায় আট বছর জেল খেটেছেন রাজধানীর শান্তিবাগের বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে করা মামলার বাদীদের বেশিরভাগকেই চেনেন না তিনি।
একরামের অভিযোগ, বাদীরা ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করায় তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এসব বাদীর খোঁজ পেতে সিআইডির প্রতি নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন তিনি। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার পক্ষে রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী এমাদুল হক বসির।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজিপি, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক (এসবি), অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক (সিআিইডি), মহাপরিচালক র্যাব, ঢাকার পুলিশ কমিশনারসহ ৪০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। রিটে মামলার ভুয়া বাদীদের খুঁজে বের করার নির্দেশনা চাওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত একরামুল আহসান কাঞ্চনের ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
তিনি জানান, একরামুল আহসান কাঞ্চন ঢাকার শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চুরি ডাকাতি, মানবপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৯টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ইতোমধ্যে ১ হাজার ৪৬৫ দিন জেল খেটেছেন। পরে বাদী খুঁজে না পাওয়ায় তিনি ৩৫টি মামলায় অব্যাহতি ও খালাস পেয়েছেন। এসব মামলার ১৪টিতে এখনো বিচারকার্য চলছে, যেগুলোতে জামিনে আছেন তিনি। সর্বশেষ তিনি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মানবপাচারের একটি মামলায় জামিন পেয়ে বাইরে আছেন।
এ আইনজীবী বলেন, এভাবে গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করায় কাঞ্চনের মৌলিক অধিকার লংঘিত হয়েছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী একরামুল আহসান কাঞ্চন বলেন, হত্যা, ধর্ষণ, চুরি-ছিনতাই-চাঁদাবাজি ও মানবপাচারের মতো ভয়ংকর অপরাধের অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমন কোনো অভিযোগ নেই, আমার উপর প্রয়োগ করা হয়নি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব মামলার বাদীদের খুঁজে পাইনি।