রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার পদ্মানদীর তীরবর্তী চড়ের মানুষের গবাধিপশুর আহপরের জন্য নারী-পুরুষের সমানতালে এক সঙ্গে নৌকায় চড়ে নদীপাড় হয়ে পশুর সংগগ্রহের ব্যস্ত সময় পাড় করেছে এলাকার মানুষ। নারী পুরুষের নিজেদেরই “নিজেরা ঠিকমতো খাইবার পাই আর না পাই,বোবা গাই-বাছুর গুলোরে তো আর ক্ষিধায় কষ্ট দিবার পারি না। তাই শত কষ্ট অইলেও ওগেরে জন্য পদ্মা-যমুনা পাড়ি দিয়া দুর্গম চরে গিয়ে যাই ঘাস কেটে আনতে”। আমাদেরকে আল্লাহতালা সৃষ্টি কেেরছে মানুষ হিসেবে আমরা তো সমস্য হলে কথার মাধ্যমে বলতে পারি কিন্তু বোবা পশুরা বলতে পারে না বুঝে নিয়েই আজকে গোরুর-খাদ্য সংকটে নিজের পোষা ২ টি গরু ও ৫ টি ছাগলের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে কাঁচাঘাস সংগ্রহের কথা জানাচ্ছেন ৫৫ বছর বয়সী নারী সরুপি বেগম। ৫৫ বয়সের নারী সরুপি বেগম জানান, আমার বাড়ী রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের পদ্মা নদীর তীরবর্তী বাহীরচরের সাত্তার মেম্বারের পাড়ায়। জানা গেছে, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকার শতশত সাধারণ মানুষের বসবাস প্রায় সারা বছরই গো- খাদ্য সংকটে থাকেন এই মানুষেরা। এদের প্রায় সবাই নদী ভাঙ্গনের শিকার ভূমিহীন অসহায় পরিবার কৃষক হিসেবে বিভিন্ন মানুষের কাজ করে চলছি। নিজেদের জমি না থাকায় তারা পশু পালনে কাঁচা ঘাসের তীব্র সংকটে থাকেন।কিন্তু এ সময়টায় বিস্তীর্ণ দূর্গম চরাঞ্চলে প্রচুর ঘাস জন্মে। সেই ঘাস সংগ্রহে প্রতিদিন দল বেঁধে নারী-পুরুষেরা ট্রলারযোগে সেই চরে যান।এতে তাদেরকে উত্তাল পদ্মা-যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে ঘাস কেটে আবার ট্রলারযোগে নিজেদের এলাকায় ফিরে আসি। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় যে বিকেলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে কথা হয় কৃষক ওসমান খানের (৫০) সাথে।তিনি বলেন,তার ৩ টি গাভী, ১ টি ষাড় ও ৪ টি ছাগল আছে। আমার সহায় – সম্পদ বলতে এগুলোই। নিজের কোন জমিজমা নাই।সব নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। গরু ছাগল গুলোর প্রচুর খাবার লাগে। খড়,কুড়া,ভুষি এগুলোর অনেক দাম। শুষ্ক মৌসুম খুব কস্টে কিনে-কেটে খাওয়াই।কিন্তু এখন থেকে পুরো বর্ষা মৌসুম চর থেকে ঘাস কেটে এনে খাওয়াই। তার মতো নুরজাহান বেগম (৪৫),রুস্তম কাজী (৪৮),আব্দুল বেপারী (৬০)সহ অন্তত ২৫/৩০ নারী- পুরুষ ট্রলার থেকে তাদের নিজ নিজ পদ্মানদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে ঘাস কেটে এনে নামাচ্ছিলেন।
তারা বলেন, সকালে পানি-পান্তা খেয়ে যাই। সাথে করে কিছু শুকনা খাবার নিয়ে যাই দুপুরে খাওয়ার জন্য। সারাদিন চরে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ঘাস কাঁটি।বিকেলে ঘাটে এসে নামি। এতে খুব কষ্ট হলেও বোবা প্রানীগুলোর আহার জোগাতে এ ছাড়া তাদের আর কোন উপায় নেই। ট্রলার চালক মাদার মাঝি জানান, এদের মতো বহু মানুষ প্রতিদিন এভাবেই পদ্মানদী পাড়ি দিয়ে আমার মতো আরো বেশ কয়েকটি ট্রলারে প্রতিদিন বহু নারী-পুরুষ দূর্গম চর বিশ্বনাথপুর, ভাবৈল, বনভাবৈল, চর পালন্দ, আখ পালন্দসহ বিভিন্ন চরে গিয়ে ঘাস নিয়ে আসেন। তিনি জনপ্রতি ৪০ টাকা করে ভাড়া নেন। চরে প্রচুর পরিমানে কড়চা, বন, দুবলা, বাকশী জাতীয় ঘাস পাওয়া যায়। যে কারনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ প্রতিনিয়ত চরগুলোতে ছুটে যায়। যাওয়ার সময় তেমন ঝুঁকি না থাকলেও ফেরার সময় অতিরিক্ত লোড থাকলে কিছুটা ঝুঁকি থাকে বলে তিনি জানান। বর্তমানে ভরা মৌশুম বর্ষার সময় নদীতেও তীব্র স্রোত ও বড় বড় ঢেওয়ের কারনে এ ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়। কোন প্রতিকূলতাই অসহায় এ মানুষগুলোর জীবন সংগ্রামে বাঁধা হতে পারে না আমাদের কষ্টের কথা কেহ শুনে না। দেখেও আমাদের পাশে এসে সহযোগিতায় করার দুরে থাক কষ্টের কথা কেহ শুনতে চায় না।