মোঃ ইউসুফ মিয়া, রাজবাড়ী
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রামসহ বিভিন্নস্থানে ব্যাপকভাবে পদ্মা নদীতে তীব্রভাবে ভাঙগতে শুরু করেছে। পদ্মনদীর ভাঙগনের প্রতিরোধে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী’লীগের সভাপতি ও গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ মোস্তফা মুন্সী। বুধবার (২৩ জুন) বিকালে উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে নিজের চোখে দেখে বলার কিছু নাই দ্রæত সময়ের মধ্যে নদী প্রতিরোধ করতে হবে। পরিদর্শন শেষে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে উপস্থিত জনতা ও সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যকালে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন নদী ভাঙন অব্যহত রয়েছে। ভাঙনে প্রতি বছর হাজারো মানুষের বাড়ি-ঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীতে। অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের অবশিষ্ট জনপদ ও গ্রাম, দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাট, দৌলতদিয়া টার্মিনাল, বাজার ও স্কুলসহ অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান । কিন্তু এতদিনেও ভাঙন প্রতিরোধে কোন কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত কয়েক বছরের বর্ষায় ভয়াবহ নদী ভাঙনের ক্ষত কাটতে না কাটতেই আবারও ভাঙন শুরু হওয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছে পদ্মা পাড়ের মানুষগুলো। প্রতিদিন শত শত মানুষ নদী ভাঙনের অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে আসেন। আমি তাদের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।নদীভাঙন রোধে আমি তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। তাই দুঃখের সহিত জানাচ্ছি সরকারী দলের একজন নেতা হয়েও আজকে বাধ্য হয়ে আমাকে আলটিমেটামের কথা বলতে হচ্ছে। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে আমি পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে নদী ভাঙগনের বিষয়ে কথা বলেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন কিছুই হলো না।যখন নদীতে ভাঙন তীব্র হবে, তখন জরুরি ভিত্তিতে হয়তো কিছু জিও ব্যাগ (বালু ভর্তি ব্যাগ) ফেলা হবে। কিন্তু তাতে ভাঙন রোধে কোন কাজেই আসবেনা। তখন জিও ব্যাগ ফেলা আর টাকা জলে ফেলা একই কথা। সরেজমিনে জানা গেছে, প্রতিবছরই ভাঙনের শিকার হয় এই অঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার। ভাঙ্গনরোধে দ্রæত স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় এ অঞ্চলের অবশিষ্ট জনপদ ও গ্রাম। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পদ্মা পাড়ের মানুষ। শুধুমাত্র লঞ্চ ঘাটের ভাঙ্গনরোধে জিও ব্যাগ ফেলে আপদকালীন ভাঙন রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। শুধুমাত্র লঞ্চ ঘাট এলাকা নয় দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সী পাড়া, কাওয়াজানি ও মধ্য কাওয়াজানি এলাকা এবং দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাত্তার ফকির পাড়া, ছিদ্দিক কাজীর পাড়া, মজিদ শেখের পাড়া ও ১নং ব্যাপারী পাড়া, সাহাজদ্দিন ব্যাপারী পাড়া, লালু মন্ডল পাড়া, নতুন পাড়া এলাকার ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা না নিলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরো নতুন নতুন এলাকা বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে ভাঙন আরো বাড়বে। তাই ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাঁধের দাবি জানান এলাকাবাসী। গোয়ালন্দ উপজেলার চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোস্তফা মুন্সি বলেন,আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে সাত দিন সময় বেঁধে দিলাম। এই ৭ দিনে কতৃপক্ষ কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলে আগামী ২ জুলাই (শুক্রবার) নদীভাঙন কবলিত হাজার হাজার মানুষ নিয়ে ঢাকা- খুলনা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করবো। তিনি স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। আমার বিশ্বাস তার কাছে নদীভাঙন কবলিত মানুষের অর্তনাদ পৌছালে তিনি অবশ্যই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে দ্রæত ব্যবস্থা নেবেন। এ বিষয়ে রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ বলেন, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট এলাকার বাইরে আপাতত নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে তাদের কোন কাজ করার সম্ভাবনা নেই। তবে ভাঙন পরিস্থিতি তীব্র হলে উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশক্রমে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পদ্মানদী ভাঙনে পরিদর্শন কালে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা আ’লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোহম্মদ আলী মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন রনি, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম সালু, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন, সাধারন সম্পাদক শফিকুর রশিদ টিটু, গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও যুগান্তর প্রতিনিধি শামীম শেখ ও ‘দৈনিক বাংলাদেশ সময়’র গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম হালিম প্রমুখ।
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১
সংবাদ শিরোনাম
- ফেনীতে ১৪ বছর পর মাদক মামলায় খালাস পেলেন ২ আসামী
- ময়মনসিংহে বাবা-ছেলে খুন
- একুশে বইমেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- ময়মনসিংহে যুগান্তর পত্রিকার ২ যুগে পদার্পণ উপলক্ষে কেককাটা ও আলোচনা সভা
- শেখ হেলাল উদ্দীন সরকারি কলেজে পাঠদানের উদ্বোধন
- হজ প্যাকেজ ঘোষণা, জনপ্রতি খরচ ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা
- শ্রীমঙ্গলে ট্রাকের চাপায় এক নারী নিহত
- ত্রিশালে মহিলা ডিগ্রী কলেজে নবীন বরন