তালতলী , বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার তালতলী উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে প্রভাবে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। হেক্টরের পর হেক্টর জমি সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। পানিতে তলিয়ে রয়েছে ক্ষেতের ফসল। এছাড়াও গ্রামের অধিকাংশ মাছের ঘের তলিয়ে রয়েছে। কিভাবে এক্ষতি পুষিয়ে উঠবেন এই ভেবে এখন দিশেহারা কৃষক ও মাছ চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পানি প্রবাহিত হয়েছে ফলে ৫ হেক্টর বিভিন্ন সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। চাষীদের সর্ব বিষয় যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ভারতের উপড় দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পায়রা (বুড়িশ্বর) নদী ও উপজেলার ছোট বড় খাল দিয়ে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিপদসীমার ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। আর এই ঘূর্নিঝড় ইয়াসে বিভিন্ন জায়গার মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে ৯.৫০ মেট্রিক টন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে যায়। প্রাথমিকভাবে ২৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সরেজমিন গিয়ে ঘুরে দেখে গেছে,উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মাঠের পর মাঠ বিরাণভ‚মি। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই ঘূর্নিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে জমে থাকা ফসলের ক্ষেত পচে গেছে ও মাছের ঘের তলিয়ে আছে। পানি একটু একটু করে নেমে যাচ্ছে আর কৃষকের মন ঠিক ততটাই কষ্টের সাগরে ডুবিয়ে যাচ্ছে। শুধু মাছের ক্ষেত নয় বেগুন, পটোল, করলা, লাউ, সিম, মূলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে।তবে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিনই উপজেলার নিম্মাঞ্চল গুলো নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে বেশ কিছু ইট ও মাটির রাস্তা ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গার রাস্তা ও বিদ্যুৎ লাইনেরও ক্ষতি হয়েছে। খোট্টর চর এলাকার বাসিন্দা মো.আব্দুল রাজ্জাক বলেন, ইয়াসে প্রভাবে ঘরবাড়িসহ তলিয়ে গেছে। এছাড়া দুইটা মাছের ঘের তলিয়ে গেছে ফলে প্রায় পাচঁ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফারিরখাল এলাকার বাসিন্দা মো.ছোহরাফ হোসেন বলেন, ঋণ নিয়ে সবজির বাগান করেছে।ইয়াসে প্রভাবে সবজি ক্ষেত লন্ডভন্ড। এখন প্রায় নিশ্ব হয়ে গেছি। সরকারিভাবে কোনো সাহায্যে পেলে কিছুটা হলেও উপকার হবে। খোট্টর চর এলাকার বাসিন্দাপ্রতিবন্ধী মো. রফিক হাওলাদার বলেন, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। সবজি ক্ষেতে পুরো নষ্ট হয়েছে। এতে তাদের দুই লক্ষ টাকার লোকসান হয়েছে। বাড়ির লোকজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাপন করছি। তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম বলেন, উপজেলায় মোট ১৮২০ মাছের ঘের রয়েছে।এর ভিতরে বিভিন্ন এলাকায় ৬৯৯টি ছোট বড় মাছের খামার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে অনুমান ২৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তালতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আরিফুর রহমান বলেন,সবজি চাষীদের অনেক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের তালিকা প্রণয়ন করে সরকারী সহায়তা দেওয়া হবে।চাষীদের বিভিন্ন বিষয় পরামর্শ দেওয়া হবে।