বন্দর, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বন্দরে ২১নং ওয়ার্ডে অসহায় গরীবদেরকে ব্যবহার করে কিছু সুদ ব্যবসায়ী চালিয়ে যাচ্ছে সুদের রমরমা ব্যবসা। প্রয়োজন হলে গরীবদেরকে চড়া সুদে টাকা নেওয়া অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। নামে বেনামে চলছে এসব ঋণ দানের কাজ। পরবর্তীতে চড়া সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে ২জন আত্মহত্যা ও আতœগোপনের পথ বেছে নিয়েছেন। জানা যায়,বন্দর থানাধীণ ২১নং ওয়ার্ডের শাহীমসজিদ এলাকার ডিম ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ব্যবসা পরিচালনা ও সাংসারিক চাহিদা পূরনের লক্ষে চড়া সুদে ঋন নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ঋনের বোঝা সইতে না পেরে শাহীমসজিদ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গলায় ফাস দিয়ে আতœ হত্যা করে। অপরদিকে একই এলাকার দিন মজুর ফয়সাল স্থানীয় সুদ ব্যবসায়ীদের কাছে ঋন নেয়।
আর তিনিই সংসারের একমাত্র উপার্জনের চালিকা শক্তি হওয়ায় পরিবারের সুখের আশায় একের পর এক ঋণ ও ধারদেনা করে সংসার চালাতে থাকেন। ওই টাকার জন্য কেউ চাপ না দিলেও ধারদেনার বোঝা বইতে না পেরে নিজের মনের কাছে ছোট হয়ে থাকে। সেই ক্ষোভে কয়েকদিন পূর্বে রাতের আধারে যে কোন সময় নিজ ঘরের তীরের সাথে রশি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শাহীমসজিদ বউবাজার এলাকার কাচামাল ব্যবসায়ী জাকির,সোনিয়া ও সজিব নামে ৩জন সুদেও ব্যবসায়ীদের চাপ সইতে না পেরে সংসার ছেড়ে আত্মগোপন করেছে। অপরদিকে বউবাজার এলাকার দিনমুজুর রঞ্জু মিয়ার স্ত্রী সুদের উপর টাকা নিয়ে সময়মত পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু সুদ ব্যবসায়ীদের চড়া সুদের চাপসৃষ্টি করায় একপর্যায়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন এবং গত কয়েকদিন পূর্বে নিজ ঘরের তীরের সঙ্গে রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করেন। ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। সূত্রে জানা যায়, বন্দর শাহী মসজিদ এলাকার বউবাজার মহল্লায় গরীব মানুষের সংসারে টাকার প্রয়োজন হলেই কিছু সুদ ব্যবসায়ী ব্যক্তি সুযোগ বুঝে তাদেরকে চড়া সুদের উপর ঋণ প্রদান করেন।
এই সুদ ব্যবসায়ীরা হচ্ছে শাহী মসজিদ বউবাজার এলাকার রফিক মিয়ার স্ত্রী মাজু,মারুফ মিয়ার স্ত্রী মৌসুমী,কবির মিয়ার স্ত্রী আমেনা,মৃত মোস্তফার স্ত্রী টাকলু শিল্পী,গেসু মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা,আবুলের ছেলে মানিব,মাঈনুরের মেয়ে রাবি। এই সুদ ব্যবসায়ীরা মানুষের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে মানুষকে চড়া সুদে নামসর্বস্ব একটি সমিতি থেকে ঋন দিয়ে থাকে। প্রতি জনকে ২লক্ষ টাকা দিলে। সেই টাকার প্রতি সপ্তাহে সুদ গুনতে হয় ১০ হাজার টাকা। আবার ১০ হাজার টাকার সুদ গুনতে হয় ১ থেকে দেড় হাজার টাকা। একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদের উপর টাকা নিয়ে ঋণের বোঝা বইতে না পেরে একপর্যায়ে দিশেহারা হয়ে নিজ ঘরের তীরের সঙ্গে রশি লাগিয়ে কেউ কেউ আত্মহত্যা কওে না হয় আতœগোপন করে। এই সুদ ব্যবসায়ীদের কারনে ঝড়ে যায় তাজাপ্রান। আবার কোন কোন সংসার তছনছ হয়ে যায়। তাই এলাকাবাসী জানান সুদের উপর টাকা দেওয়া ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। কেননা দিনে দিনে এই সুদের ব্যক্তি কেন্দ্রিক ব্যবসা আরো বৃদ্ধি পাবে এর ফলে অকালে ঝড়বে আরো অনেক তাজা প্রাণ। বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু বকর ছিদ্দিক জানান, ধারণা করা হচ্ছে ইদানিং আতœহত্যার প্রবনতা বেড়েছে। নিহত ব্যক্তিদের প্রচুর ঋণ রয়েছে তা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন। আমরা উক্ত ঘটনাগুলোতে থানায় অপমৃত্যু মামলা নথিভুক্ত করেছি। এজন্য জনসচেতনতা মুলক কাউন্সিলিং প্রয়োজন।