হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
বর্ষা আসলেই অথৈ জলে ডুবে যায় হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার লাখাই বাজার থেকে বামৈ পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সাব-মার্জিবল সড়ক। যে কারণে দীর্ঘ চার মাস বিচ্ছিন্ন থাকে এ সড়ক দিয়ে যান চলাচল। এমন কঠিন বাস্তবতায় সড়কটি বছরব্যাপী যানচলাচল উপযোগী করে নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। লাখাই-বামৈ সড়কটি উপজেলা সদরের সাথে লাখাই ইউনিয়নবাসীর চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। যে কারণে রাস্তাটি সারাবছর চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ আবেদন-নিবেদন করে আসলেও অদ্যাবধি নেই কোন কার্যকরী উদ্যোগ। ফলে বর্ষাকালের অন্তত ৪ মাস চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীকে। স্থানীয়রা জানান- রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমের উপযোগী করে নির্মাণ না হওয়ায় ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরমে। শুকনো মৌসুমে এ সড়কে যাতায়াত করে ইউনিয়নের শিবপুর, সুজনপুর, আমানুল্লাহপুর, মাহমুদপুর, চিকনপুর, রুহিতনসী, স্বজনগ্রাম, সন্তোষপুর, কৃষ্ণপুর, কামালপুর গ্রামসহ ভাটি এলাকার হাজারো মানুষ। এছাড়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানুষের যোগাযোগ ও চলাচলের কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই সড়কটি। ইউনিয়নের অধিকাংশ লোক ঢাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় রাজধানীর সাথে তাদের একটা আন্তঃসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। রাস্তাটি সারাবছর যানচলাচল উপযোগী করে নির্মিত হলে ইউনিয়নবাসীর অর্থনৈতিক কর্মকাÐ বৃদ্ধি পেত। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াতসহ সার্বিক কর্মকাÐে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হত। জানা গেছে- উপজেলার বলভদ্র নদীর উপর হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ব্রিজ নির্মিত হওয়ার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ফলে হবিগঞ্জ জেলাসহ অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ঢাকার সাথে দূরত্ব কমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে লাখাই-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়ক। তাই লাখাই টু বামৈ সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। ভুক্তভোগীরা জানান- বর্ষা মৌসুমে পানিতে তলিয়ে যায় এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি। এর ফলে ৪ মাস বিচ্ছিন্ন থাকে ১নং লাখাই ইউনিয়নবাসী। এসময় নৌকা হয়ে উঠে এ অঞ্চলের একমাত্র বাহন। শুকনো মৌসুমে ১০-১৫ টাকায় লাখাই বাজার থেকে বামৈ পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কে ১০ মিনিটে যাতায়াত করা যায়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে সেই গন্তব্যে পৌঁছতে ৩০ টাকা লাগে এবং সময় লাগে ১ ঘন্টা বা তার বেশি। এছাড়া নৌকার মাঝিরা যাত্রী পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ঘাটে ঘাটে নৌকা ভিড়ায়। এতে সীমাহীন কষ্ট ও দুর্ভোগ পোহাতে হয় কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগীদের, যারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করতে যায়। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য তা হয়ে ওঠে মৃত্যুপুরী। তাছাড়া সন্ধ্যা হলে গন্তব্যে পৌঁছুতে সাধারণ যাত্রীদের গুনতে হয় ৩০০-৫০০ টাকা। এসময় মাঝিরা যাত্রী নেই ও একা নেওয়া যাবে না এই অজুহাতে আদায় করে অতিরিক্ত ভাড়া। তাই জনমনে এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ অবস্থায় দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে লাখাই-বামৈ সড়কটি বর্ষা মৌসুমের উপযোগী করে নির্মাণে এলাকাবাসীর পক্ষে দাবি উঠছে। এ বিষয়ে ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এই সড়কটি সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে শীঘ্রই দ্রæত উঁচু করা হোক। এ ব্যাপারে লাখাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ রোপম জানান, এই রাস্তাটি আডোবা নির্মাণ হলে ইউনিয়নবাসী পর্যাপ্ত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা সেবা পাবে ও এলাকার উন্নয়ন হবে।
বামৈ-লাখাই রাস্তা উঁচু করার বিষয়ে জানতে চাইলে লাখাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডডভোকেট মো. মুশফিউল আলম আজাদ জানান, হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর- লাখাই-শাায়েস্তাগঞ্জ) আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট আবু জাহির এমপির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বামৈ হতে লাখাই বাজার রাস্তা এবং লোকড়া-মাদনা রাস্তা দুটি উঁচু করে সারাবছর যান-চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন। শুধুমাত্র টেন্ডার প্রক্রিয়া বাকী রয়েছে। এ দুটি রাস্তায় প্রায় ছাপ্পান্ন (৫৬) কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১
সংবাদ শিরোনাম
- কাঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়েছেন বিমল চন্দ্র সমাদ্দার
- ফায়ারম্যান পদে নিয়োগ বাণিজ্য টার্গেটে টাকা হাতিয়ে নিতে তৎপর চক্র
- মোংলা ইপিজেডে ভয়াবহ আগুন
- পাকিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী হামলা: নিহত বেড়ে ৯২
- তারেক-জোবায়দাকে হাজির হতে গেজেট প্রকাশ
- দলমত নির্বিশেষে সবার জন্যই কাজ করেছি : প্রধানমন্ত্রী
- এরশাদের জামানত বাজেয়াপ্ত নিয়ে সংসদে হট্টগোল
- পরিবারের অকৃত্রিম ভালোবাসায় কাজী ওয়াজেদ আলী