চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণ। যেসব ইউনিয়নে সংক্রমণ বাড়ছে, সেসব ইউনিয়নের মানুষ এখনো করোনা সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে না। গ্রামের মানুষ মাস্ক ছাড়া এখনো চলাফেরা করছে। জেলা প্রশাসনের বিধিনিষেধ থাকলেও গ্রামাঞ্চলে মানার কোন প্রবণতা নেই। জেলা শহরের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ের গ্রামগুলোতে শত শত মানুষ জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়াসহ নানান উপসর্গ নিয়ে ভুগছেন। এসব উপসর্গ থাকলেও কেবল মাত্র সামাজিক ভাবে হেয়, সচেতনতার অভাব এবং অনেকেই লোকলজ্জার ভয়ে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে না। সে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে উপজেলা প্রশাসনের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে তৎপরতা চালানো প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। বর্তমান সময়ে উপজেলা পর্যায়ের গ্রামাগঞ্জের মানুষ বাজারের বিভিন্ন খাবারের দোকানে বসে চা খাচ্ছেন। জনগনের মধ্যেও করোনা নিয়ে তেমন কোন সচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। স্বাস্থ্যবিধি না মানাই গ্রামের মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করছে। এদিকে শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়ন, পাঁকা ইউনিয়ন, চককীর্তি ইউনিয়ন, নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের বাবুপুর, ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের কমলাকান্তপুর, বিনোদপুর ইউনিয়ন, কামালপুর এলাকার মানুষ জানান বেশ কিছু ব্যক্তি করোনার উপসর্গ নিয়ে চলাফেরা করছেন। এমনকি এসব এলাকার মানুষ মাস্ক ছাড়াই চলাচল এবং বিভিন্ন হোটেলে বসে চা ও খাবার খাচ্ছে। এতে করে এলাকার মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। এছাড়া শ্যামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ করোনার উপসর্গে ভূগলেও নমুনা পরীক্ষায় একেবারে অনীহা। এমনকি শ্যামপুর ইউনিয়নের মিঞাপাড়া গ্রামে গুধা ৬০ নামে এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন। এলাকার অনেক মানুষ বলছেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষকে সচেতন করতে স্থানীয় প্রশাসনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। উক্ত এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশকে সাথে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি প্রচারাভিযান চালাতে হবে। এদিকে, প্রত্যন্ত চর পাঁকা ইউনিয়নে অনেক পরিবারে জ্বর ও সর্দি নিয়ে ভুগছেন। গ্রামের মানুষের মধ্যে এমন সব উপসর্গ থাকলেও কেবল মাত্র সামাজিক ভাবে হেয়, এবং অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে না। আবার অনেকে করোনাকে গুরুত্বও দিচ্ছে না। এটিও পরিবার তথা সমাজের জন্য বেশ উদ্বেগের কারণ। দিন দিন করোনা উপসর্গ ও শ্বাস-কষ্ট নিয়ে জেলায় মৃত্যুর হার কমবেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে জেলা প্রতিটি উপজেলায় ফ্রি র্যাপিড অ্যান্টিজেন এর মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা অব্যাহত রেখেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। এর ধারাবাহিকতায় শিবগঞ্জ উপজেলায় ভ্রাম্যমান গাড়িতে ফ্রি র্যাপিড অ্যান্টিজেন এর মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা চালাচ্ছে। তবে প্রতিটি ইউনিয়নে একেক দিন গাড়ি নিয়ে গেলে এর সুফল পাওয়া যাবে। অনেক গ্রামে এখন পর্যন্ত অনেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে থাকলেও পরীক্ষা করার আগ্রহ নেই তাদের মধ্যে। এখন প্রয়োজন হয়ে পড়েছে সেসব গ্রামে মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচারণা। সুশীল সমাজ মনে করছেন এসব ইউনিয়নে জনসচেতনতার অভাব দূর করতে জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলে এ কার্যকারীতা অনেকাংশে বাড়বে।