অনলাইন ডেস্ক:বেলারুশের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ডয়চেভেলের সাংবাদিক। এরপর তিনি শুনিয়েছেন কারাগারে তার অভিজ্ঞতার কথা।জানা গেছে, ডয়চেভেলের রাশিয়া ভাষা বিভাগের জন্য বেলারুশের একটি আদালতের সামনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন আলেকজান্ডার বুরাকভ।
সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ২০ দিন পর তাকে ছাড়া হয়। জেলে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন চলেছে তার ওপর। নিজের সেই দুর্ভোগের কথা পাঠকদের জানিয়েছেন বুরাকভ।
বুরাকভ বলেন, সাধারণ কারাগারকে তার মনে হয়েছে সেনাবাহিনীর ডিটেনশন সেন্টার। এর আগেও সংবাদ করার অপরাধে তাকে একবার গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কিন্তু বুরাকভের মতে, সে সময়ের কারাগার জীবন আর এবারের মধ্যে অনেক পার্থক্য। প্রতি রাতে ঘুম ভাঙিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাতো। সেলের বাইরে বের করে তাকে জামা-কাপড় খোলানো হতো।
কোনো কোনো দিন সকালেও একই কাজ করা হতো। বুরাকভ গুনেছেন। ২০ দিনে ৬৩ বার জামা কাপড় খুলে তল্লাশি হয়েছে তার। অন্তর্বাস পর্যন্ত খুলতে বাধ্য করা হয়েছে।কারাগারে বালিশ, ঘুমানোর জন্য চাদর, কম্বল কিছুই দেওয়া হয়নি তাকে। একটি প্লাস্টিকের বোতল মাথার নিচে রেখে ঘুমাতেন তিনি। গরম কাপড়, গরম খাবার পর্যন্ত দেওয়া হতো না। বাড়ি থেকে খাবার বা জিনিস পাঠালে তাও তার হাতে দেওয়া হতো না। সেসব চাইলে শাস্তি দেওয়া হতো।
প্রায় এক সপ্তাহ এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন তিনি। অনশনও করেছেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে খাবার খেতে হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, ভয়াবহ কারাগার জীবন কেটেছে তার। বেলারুশের কারাগারে বন্দি সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী সকলের সঙ্গেই এমন ব্যবহার করা হচ্ছে। মুক্ত কণ্ঠ স্তব্ধ করতে চাইছে সরকার এবং প্রশাসন। কিন্তু তিনি আবার সাংবাদিকতা করবেন এবং মানুষের অবস্থা তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন।
আলেকজান্ডারকে গ্রেপ্তার করার পর থেকেই প্রতিবাদ করছিল ডয়চেভেলে। তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করা হয়েছিল। ২০ দিন পর তিনি মুক্তি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ডয়চেভেলের প্রধান পিটার লিমবুর্গ। বেলারুশের পরিস্থিতি প্রতিদিনই ভয়াবহ হচ্ছে। সাধারণ মানুষ দেশের বাইরে যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকার। সাংবাদিকদের কাজের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একের পর এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সরকার বিরোধী আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সেখানে।
সূত্র: ডয়চেভেলে