হাসান-উজ-জামান
রাজধানীর বারিধারা জে ব্লক নতুন বাজারস্থ রাজউক প্রস্তাবিত কাঁচা বাজারের (১০১৮ ও ১০১৯ দাগের জমি) দোকান বরাদ্দ কেন্দ্র করে যে কোনো সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। নতুন বাজারের তিনটি ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে একটি সিন্ডিকেট সংগঠন নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে ২৬ কাঠার ওই প্লটটি রাজউক থেকে সাময়িক বরাদ্দ পায়। সেখানে মাত্র ১১৯ জনকে ক্ষতিগ্রস্ত দেখানো হয়। বাদ পড়ে অপর দু’টি সংগঠনের সত্যিকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িরা।
অথচ বাদ পড়া সক্রিয় সংগঠন দু’টি যেমন বারিধারা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ ও বারিধারা নতুনবাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গা নিজেদের নামে বরাদ্দের জন্য রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে দেন দরবার ও আন্দোলন করে আসছিলো। কিন্তু রাজউকের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বারিধারা নতুন বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারি সিন্ডিকেটের সঙ্গে গোপন আতাত করে তাদের অনুকুলে প্রাথমিক বরাদ্দ পেতে সরাসরি সহযোগিতা করে। রাজউক কর্মকর্তাদের এহেন সরাসরি ক্ষমতার অপপ্রয়োগে ওই জায়গা দোকান মালিক সমিতির পক্ষে সাময়িক বরাদ্দ পেতে সহায়ক হয়। এদিকে অপর সংগঠনগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িরা দোকান বরাদ্দ থেকে বাদ পড়ে গেলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে অসন্তোষ রিরাজ করে। বড় অংশটির মধ্যে এ চাপা ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। স্থানীয় ব্যবসায়িদের আশঙ্কা এখানে যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটতে পারে। সূত্রমতে, বারিধারা জে বøকের ৫ নং প্লটটি (প্রায় ২৬ কাঠা সম্পতি) ১৯৬২ সালে একোয়ার করে তৎকালীন ডিআইটি। ১৯৯৭ সালে সেখানে কাঁচা বাজার তৈরীর উদ্যোগ নেয় তৎকালিন স্থানীয় এমপি। ওয়ান ইলেভেনে রাজনৈতিক ঘোলাটে পরিস্থিতির সুযোগে রাজউক থেকে জায়গাটির সাময়িক বরাদ্দ পান বারিধারা দোকান মালিক সমবায় সমিতি লিঃ। গনতান্ত্রিক সরকার এসেই ওই বরাদ্দ বাতিল করেন। রাজউক তখন সেখানে একটি মার্কেট তৈরী করে তিনটি সংগঠনের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমবন্টন করে বরাদ্দ দেয়ার সীদ্বান্ত নেন।
অথচ রহস্যজনক কারনে রাজউক ২০১৮ সালে বারিধারা দোকান মালিক সমবায় সমিতি লিঃকে এককভাবে সাময়িক বরাদ্দ দেন। সাময়িক বরাদ্দ পেয়েই বারিধারা নতুন বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি দিন মোহাম্মদ দিলু ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন আলম সিন্ডিকেট নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি দোকান বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা আত্বসাৎ করেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় সাংসদ একেএম রহমতুল্লাহ দোকান মালিক সমবায় সমিতি লিঃকে তার দেয়া ডিও লেটার স্থগিত করে বারিধারা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ ও বারিধারা নতুনবাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির ক্ষতিগ্রস্ত নেতা-কর্মী ও ব্যবসায়ীদের সাথে সমন্বয় করে ওই জায়গার পূনরায় বরাদ্দ প্রদানের জন্য রাজউক কর্তপক্ষকে চিঠি দেন। একইভাবে সংসদ সদস্য বারীধারা জে বøকের ১০১৮ ও ১০১৯ দাগের জমিটির বরাদ্দপত্র সমন্বয়ের ব্যবস্থা গ্রহনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেন। ইতিমধ্যে রাজউকে একাধিক চেয়ারম্যান রদবদল হয়েছে। কিন্তু কেউই সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। কিন্তু স্থানীয় সাংসদের এ ডিও লেটারের পক্ষে রাজউক এখনো কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। বারিধারা নতুনবাজার ব্যবসায়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সুরুজ্জামান বলেন, আমরা সার্বিক বিষয়টি সাংসদকে অবহিত করেছি। আমাদের একটাই দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত কাউকেই বাদ দিয়ে নয়, তিনটি সংগঠনের সমন্বয়ে উক্ত প্লটটি সমবন্টনের। আমরা আশা করি স্থানীয় সাংসদ এ ব্যাপারে কার্যকরি উদ্যোগ গ্রহন করে ব্যবসায়ি সংগঠনগুলোর মধ্যে চাপা ক্ষোভের অবসান ঘটাবেন।