নিজস্ব প্রতিবেদক
ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপে দখল হয়ে আছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-শনিরআখড়া-রায়েরবাগ প্রধান সড়কের বেশিরভাগ অংশ। ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের এ অংশটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোশেনের ৬০ ও ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ন্তঃভূক্ত। যেখানে রয়েছে দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা ব্যবসা-বানিজ্যসহ আবাসিক এলাকা। ময়লার ভাগাড় থাকায় ওই এলাকার অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে আগ্রহী নন ক্রেতারা। বাসা বাড়িতেও নিরাপদ নন এলাকাবাসি। বাতাসে ছড়িয়ে পড়া দূগন্ধে তাদের নাভিশ্বাস। বৃষ্টির সামান্য পানিয়ে দূর বহুদুর ভেসে যায় বজ্য। প্রতিকার পেতে এলাকাবাসী সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অতিষ্ঠ এলাকাবাসী অবিলম্বে ময়লার স্তূপ পরিষ্কার করে পরিবেশ সুরক্ষার দাবি করেন। সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনাকালে মহাসড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা না নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর এ নির্দেশের পরও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোশেনের ৬০ ও ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের ইজারাদার এ মহাসড়কের ওপর ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভাগাড়ে পরিণত করেছেন। যা এলাকাবাসীর জন্য অভিশাপ হয়ে উঠেছে। যাত্রাবাড়ির শনির আখড়ায় অবস্থিত দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে মহাসড়কের ৪ লেনের দুই লেন দখল হয়ে আছে ময়লা-আবর্জনায়। এতে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি মহাসড়কের সৌর্ন্দয নষ্ট হচ্ছে। আবর্জনার স্তূপ থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। মহাসড়কে হাজারো যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীকে নাকে রুমাল চেপে চলতে হয়। এ ছাড়া দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ২০০ গজ পশ্চিমে মহাসড়ক ও সিটি করপোরেশনের যাত্রাবাড়ী-শনিরআখড়া-রায়েরবাগ প্রধান সড়ক দখল করে আছে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ। বিভিন্ন বাড়ি, শপিংমলসহ বাজার ও দোকানপাটের ময়লা-আবর্জনা অপসারণের জন্য ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের ইজারা নিয়েছেন সফিকুল ইসলাম ও ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের একে খান জয়। মহাসড়কের এ ময়লার ভাগাড়ে পাখি ও কুকুর-বিড়াল খাবারের উচ্ছিষ্ট খাওয়ার সময় এলোমেলো করে রাস্তায় ছড়িয়ে ফেলছে। ছড়ানো আবর্জনা যানবাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে বাতাসে ময়লা-আবর্জনা ও বিষাক্ত ধুলা আশপাশের বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করছে। বৃষ্টির পানিতে এসমস্ত ময়লাগুলো ভেসে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। ময়লার এমন স্তূপ থেকে মশা-মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে।এবং অত্র এলাকাটি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ময়লার দুর্গন্ধে শ্রমিক, কর্মচারীসহ আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। দুর্গন্ধের কারণে ক্রেতারা আসতে চান না। এতে আমাদের বেচাবিক্রি ৫০ ভাগ কমে গেছে। ময়লার স্তূপের কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান খাদেমুল ইসলাম মসজিদ কমপ্লেক্সের ইমাম ও খতিব আজিজুর রহমান বলেন, ময়লার স্তূপ সরানোর জন্য আমরা এলাকাবাসী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজন মেয়রের কাছে আবেদন করেছি। আশা করছি তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। একই সাথে তিনি ধর্মমন্ত্রীর সাথেও এ বিষয়ে সাক্ষাৎ করার কথা জানিয়েছেন। ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন মজুমদার ও ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জুম্মন মিয়া বলেন, ময়লা স্তূপের ব্যাপারে এলাকাবাসীর এ অভিযোগ ইজারাদার সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে বসে দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন। সড়ক ও জনপথ (সওজ) নারায়ণগঞ্জ সাব-ডিভিশনাল-২ এর প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ময়লা সরাতে ও এখানে যাতে ময়লা না ফেলা হয় সেজন্য সিটি করপোরেশনের বর্জ্য বিভাগকে জানিয়েছি। এলাকাবাসী জানান,সবাই শুধু আশ্বাস দেয় কিন্তু এখনো কোন ব্যবস্থাই হয় নি,এলাকাটি ধরতে গেলে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে নেই কোন সিটি কর্পোরেশনের নজরদারি।