একেএম.জিলানী, নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ছোট গাছের ও হাইব্রীড জাতের প্রায় ২হাজার হেক্টোর আমবাগান মালিকরা চলমান মহামারী লকডাউনের মধ্যে ব্যবসায় লোকশান ও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন। এদিকে প্রধান রপ্তানী মোকাম ঢাকা শহর লকডাউনের কড়াকড়ি থাকায় রাজধানী শহরে আমের চালান বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছিলেও প্রাপকদের আম সরবরাহ নিতে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলে আম ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা লোকশানের সাথে সাথে ঋণের বোঝা বাড়ারও আশংকা করছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের জিআই পণ্য খিরসাপাত আমসহ গোপালভোগ ও ল্যাংড়া আম শেষে অ¤্রপালী জাতের চালান শুরু হয়েছিল। অতিবৃষ্টি ও তীব্র রোধের কারণে চলতি সপ্তাহ থেকে আ¤্রপালী, হাড়িভাঙা, গোড়মতি, বারী-৪,বারী-৭, বারী-১১ ও কাটিমন জাতের আম নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই পেকে যাচ্ছে। তাই দেশে চলমান মহামারী করোনার লকডাউনের মধ্যেই এসব আম বিক্রীর মোক্ষোম ধুম পড়ে গেছে। কিন্তু বিধি বাম, চলমান লকডাউনের কবলে পড়ে আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা আম রপ্তানী করতে পারছেন না। উপজেলার কেন্দুয়া এলাকার আম বাগান মালিক মোশাররফ হোসেন জানান, গতবছর আ¤্রপালী ২৫০০শ থেকে ৩০০০টাকা, হাড়িভাঙা ও গোড়মতি, বারী-৪,বারী-৭, বারী-১১ ও কাটিমন জাতের আম প্রতিমন ৩০০০ থেকে ৩৫০০টাকায় বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এ বছর ওইসব আম ২০০টাকা মন দরেও বিক্রি হচ্ছেনা। আম ব্যবসায়ী ও আমবাগান মালিকরা এবছর বাগানের খরচ ও লীজমূল্য উঠাতে পারবেন না বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন। নাচোল উপজেলার কন্যানগর গ্রামের গ্রামীন নার্সারীর মালিক বদিউজ্জামান জানান, তার জানামতে নাচোল উপজেলায় ল্যাংড়া, ফজলী, খিরসাপাত, গোপালভোগ বাদেই প্রায় ২হাজার হেক্টোর হাইব্রীড জাতের আমবাগান গড়ে উঠেছে। বিগত কয়েক বছর আমের বাম্পার মূল্য পেয়ে অনেকেই আমবাগান তৈরীতে ঝুঁকেছিলেন। দেশে করোনা মহামারী প্রতিরোধে লকডাউনের কারণে চলতি বছর আমের ব্যবসায়ীরা লোকশানে পড়েছেন। তাছাড়া সারাদেশেই হাইব্রীড জাতের আমের বাগান গড়ে উঠেছে। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী আমের চাহিদা দিন দিন কমে আসছে। তার মতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হলে ব্যক্তি উদ্যোগে ও সরকারী পর্যায়ে সারাবছর আম সংরক্ষণাগার গড়ে তুলতে হবে।