অনলাইন ডেস্ক:
সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। কুয়াশা কিছুটা কমলেও ঠাণ্ডা বাতাসে তাপমাত্রার পারদ ক্রমান্বয়ে নিচে নামছে। এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াতে। বৃহস্পতিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুক্রবার কুয়াশা কিছুটা কম থাকলেও ছিল ঠাণ্ডা বাতাস। সকালেই সূর্যের দেখা মিলে। সূর্যের দেখা মেলা মানেই এ জনপদের মানুষের জন্য স্বস্তির খবর। তবে শীতের তীব্রতা বেশি থাকছে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত। দুপুর পর্যন্ত খানিক সূর্যের তাপ মিললেও বিকেল গড়াতেই তাপমাত্রা কমতে থাকে। মাঝরাতে বৃষ্টির মতো ঝরে কুয়াশা। সেই সাথে ঠাণ্ডা বাতাসে হাড়কাঁপা শীত অনুভূত হয়। শীতে দরিদ্র-অসহায় মানুষরা কষ্টে রাত পার করেছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শীতবস্ত্র না থাকায় কষ্টে রাত কাটাতে হচ্ছে তাদের। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। সরকারিভাবে জেলায় যে পরিমাণ শীতবস্ত্র বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা জেলার বিরাট অঙ্কের দরিদ্র মানুষের তুলনায় অনেক কম বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এদিকে লেপ-তোষক ও নতুন-পুরনো গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে।
পঞ্চগড় জেলা শহরের সাবেত আলী নামের এক শ্রমিক বলেন, সংসার চালাতে শীতের মধ্যেই প্রতিদিন সকালে আমাদের বের হতে হয়। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। তাই কাগজ কুড়িয়ে আগুন পোহাই। রাতে বাড়িতেও ঠাণ্ডার জন্যে ঘুমাতে পারি না। সরকারিভাবে নাকি হাজার হাজার কম্বল দিচ্ছে দরিদ্র মানুষকে; কিন্তু আমরা তো একটিও পেলাম না। এত কম্বল কারা পাচ্ছে আর যাচ্ছে কোথায়।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার মাধ্যমে সাড়ে ২২ হাজার দরিদ্র শীতার্তকে শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছি। নতুন করে ১৫ হাজার শীতবস্ত্রের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৭-৮ হাজার শীতবস্ত্র পাওয়া গেছে। এসব শিগগিরই দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে। আমরা প্রকৃত দরিদ্র মানুষদের কাছেই শীতবস্ত্র পৌঁছে দিচ্ছি। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, ঘন কুয়াশা থাকলে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ে। কুয়াশা না থাকলে তাপমাত্রা কমে আসে। বর্তমানে পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। সামনে তাপমাত্রা আরো কমে আসতে পারে।