মনিরুল ইসলাম, পটুয়াখালী
পটুয়াখালী জেলার দক্ষিণাঞ্চলের রাঙ্গাবালী উপজেলায় অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে চরাঞ্চলের জনগণের আলোকিত হবে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ রাঙ্গাবালী। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ পেতে যাচ্ছে নদী ও সাগর বেষ্টিত এই জনপদের মানুষ। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের প্রতীক্ষায় সবাই সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই বিদ্যুৎ সুবিধা পেতে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলীয় পটুয়াখালী জেলা থেকে চল্লিশ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত রাঙ্গাবালী উপজেলার মানুষ। প্রাথমিক পর্যায়ে সাড়ে ঊনত্রিশ হাজার পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়। পল্লী বিদ্যুৎ সুত্রে জানা যায় কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উপকেন্দ্র পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ সঞ্চালন পৌছাবে। প্রথম সপ্তাহে বাতি জ্বলবে সংযোগ পাওয়া প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে। জাতীয় গ্রীডের মাধ্যমে উপজেলায় বিদ্যুৎ সেবা দিতে দশ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন উপকেন্দ্র নির্মান করা হয়েছে। এই উপকেন্দ্র থেকে রাঙ্গাবালী, ছোটবাইশদিয়া, বড়বাইশদিয়া ও মৌডুবি ইউনিয়নের ষোল হাজার পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে। ভোলার চরফ্যাশন থেকে চরমোন্তাজ হউনিয়নের নয় হাজার ও গলাচিপা থেকে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের সাড়ে চার হাজার পরিবারকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হবে। ১১৯৪ কিলোমিটার সংযোগ লাইনের কাজ চলমান রয়েছে। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বাবুরহাট থেকে মুজিবনগর হয়ে চরকাজল-চরবিশ্বাস অতিক্রম করে বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর তলদেশ দিয়ে দুই কিলোমিটার সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে রাঙ্গাবালী উপকেন্দ্রে জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌছতে বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (গলাচিপা-রাঙ্গাবালী) প্রকৌশলী মাইনউদ্দিন আহম্মেদ বলেন আমাদের টার্গেট চলতি মাসের মধ্যে সাব স্টেশন পর্যন্ত বিদ্যুৎ নিয়ে আসা ও সকল ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়া। সাব স্টেশন চালু হয়ে গেলে যে কয়জন গ্রাহককে সংযোগ দিয়ে মিটার লাগানো যাবে তাদের দিয়েই পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সেবা শুরু করব। ওয়্যারিং ও মিটার লাগানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়, তিনি আরও বলেন বড় ধরনের কোন প্রতিকুলতা বা প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকলে এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ বিতরণের কাজ শুরু হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসফাকুর রহমান বলেন বিদ্যুৎ এ চরাঞ্চলের মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে রুপান্তরিত হতে যাচ্ছে, এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌছলে মানুষের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে ফলে সম্ভাবনার এ হাতছানিতে আনন্দিত চরাঞ্চলের মানুষ। পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মহিব বলেন রাঙ্গাবালীতে বিদ্যুতের জন্য ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রæয়ারী মাসে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রিকে ডিও লেটার দিয়েছি, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী উপদেষ্টাকে অবহিত করেছি। জাতীয় সংসদে একাধিকবার বিষয়টি উত্থাপন করেছি, মুজিববর্ষে শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এই চরাঞ্চল রাঙ্গাবালীতে। তাই এই দুর্গম এ জনপদে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবে এই চরাঞ্চলের জনগণ।