ইউরোপের দেশ সুইডেনে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ আল কোরআনের একটি কপি পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির অন্তত সাতটি শহরে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ চলাকালে ননকোপিং শহরে পুলিশের গুলিতে তিন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছে। এছাড়া, বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৬ জনকে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। সুইডেনের সংবাদ সংস্থা টিটি-র খবর অনুযায়ী, গত শুক্রবার রাজধানী স্টকহোমের কাছের শহর রিঙ্কেবিতে উগ্র ডানপন্থি দল হার্ড লাইন-এর নেতা রাসমুস পালুদান পবিত্র কোরানোর একটি কপি পুড়িয়ে দিয়েছেন- এমন খবরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ওই দিন সুইডেনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ওরেব্রোয় বিক্ষোভকারীদের হামলায় চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধরা পুলিশের চারটি গাড়িও পুড়িয়ে দেয়। পরে দেশটির আরো অন্তত ছয়টি শহরে রাসমুস পালুদান এবং তার দল হার্ড লাইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়।
গত রবিবার এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়,‘তিনজনের গায়ে গুলি (রিকোশেটস) লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদেরকে এখন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। এ ধরনের সহিংস ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী মাগডালেনা অ্যান্ডারসন। এ ঘটনার প্রতিবাদে গত রবিবার বাগদাদে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে সমন পাঠিয়েছে ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পবিত্র কোরআনন পোড়ানোর ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সুইডেনের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
খিষ্ট্রানদের ইস্টার সানডে পর্বের ছুটির সময় সুইডেনজুড়ে তাকে বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়, এই সমাবেশগুলোতে কোরআন পোড়ানো হবে এমন প্রচারণা ছিল। আগামী সেপ্টেম্বরে সুইডেনের নির্বাচনের লক্ষ্যে রাসমুস প্যালুদান দেশটিতে সফর করছেন। যদিও সে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতি পায়নি। সম্প্রতি সে একটি মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলের প্রতিবেশী এলাকায় যায়। সেখানে তিনি পবিত্র কোরআন পোড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্যালুদান একজন আইনজীবী ও ইউটিউবার। সে মূলত মুসলিম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের জন্য ডেনমার্কের রাজনীতিতে আলোচনায় আসে।
২০২০ সালের নভেম্বরে ‘বিদ্বেষ’ ছড়ানোর অভিযোগে ফ্রান্সে আটকের পর প্যালুদানকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এ ছাড়া, এর কিছুদিন পরেই ৫ জন কর্মীসহ বেলজিয়ামে আটক হয় প্যালুদান। তখন প্যালুদানের বিরুদ্ধে ব্রাসেলসে পবিত্র কোরান পুড়িয়ে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টার অভিযোগ করা হয়।