স্টাফ রিপোর্টার, পিরোজপুর
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে বোম্বাই মরিচ চাষ করে সাবলম্বি হয়েছে এ উপজেলার ৪ চার ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার। স্বরূপকাঠির উৎপাদিত বোম্বাই মরিচ ঝাল আর গন্ধে অতুলনীয়। এই মরিচের একমাত্র আমদানিকারক দেশ জাপান। ২০১১ সাল থেকে জাপানে বোম্বাই মরিচ রপ্তানি করা হচ্ছে। জাপানে বোম্বাই মরিচ রপ্তানি করে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে বাংলাদেশ। আগামী বছর মালয়েশিয়াও যুক্ত হবে আমদানিকারক দেশের তালিকায়। বোম্বাই মরিচ বানিজ্যিক ভাবে দেশে-বিদেশে বিক্রি করে শতকোটি টাকা আয় করছে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তবে চাষিদের দাবি সফলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না তারা আর কৃষি অফিস বলছে কৃষকদের সব ধরণের সহযোগিতার কথা। স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জানাযায়, প্রতিবছর পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার কুড়িয়ানার একসময়ে ঘরোয়া চাহিদা পূরণের জন্য বাড়ির আঙিনায় এবং ঘরের কোনায় বোম্বাই মরিচের দু-একটি গাছ লাগানো হতো। দেশে-বিদেশে বোম্বাই মরিচের চাহিদা থাকায় এখন স্বরূপকাঠির আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের মাহামুকাঠি, সংগীতকাঠি, আদাবাড়ী, জিন্দাকাঠি, হরিহরকাঠি সহ ১০ গ্রাম এবং জলাবাড়ী ইউনিয়নের কামারকাঠি, ইদিলকাঠি এলাকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যাপক ভাবে বোম্বাই মরিচের চাষ শুরু হয়েছে। বরিশালের এ অঞ্চলগুলোয় বোম্বাই মরিচের গুণ ও মান ভালো হওয়ায় প্রতিবছর তাকিউসি নামে জাপানের এক ব্যবসায়ী মরিচবাগান দেখে তিনি চাহিদা মত মরিচ কিনেন। সেই অনুযায়ী বাংলাদেশে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলা অ্যাগ্রো মরিচ কৃষকদের কাছ থেকে মরিচ সংগ্রহ করে। পরে তাদের ফ্যাক্টারিতে মরিচ শুকিয়ে মেশিনের মাধ্যমে গুঁড়া করে প্যাকেটজাত করে জাপানে পাঠিয়ে দেয়। মরিচ চাষি সজল কুমার ও তার স্ত্রী গিতা রানী বলেন, আমরা যতটুকু জানি ১৯৮০ সালে থেকে এ অঞ্চলে বোম্বাই মরিচ চাষ হয়। স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে চাষিরা বোম্বাই মরিচের চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরেই তাদের প্রচুর টাকা লাভ হয়। এরপর স্বরুপকাঠিতে দ্রুত বাড়তে থাকে বোম্বাই মরিচের চাষ। এক পর্যায়ে নার্সারী মালিকরা তাদের মেহগনি চারার মধ্যে বোম্বাই মরিচ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে কয়েক হাজার কৃষক এ ফসলের উৎপাদন করে আসছে। সুধু বিদেশেই নয় ঢাকার কারওয়ান বাজারের বেশির ভাগ বোম্বাই মরিচ স্বরূপকাঠি থেকে সরবরাহ করা হয়। এখান থেকে প্রতিদিন ৮/১০ টি মিনি ট্রাক মরিচ নিয়ে ঢাকায় যায় । এছাড়াও স্বরূপকাঠি ও বরিশাল থেকে ঢাকাগামী লঞ্চে মরিচ ঢাকায় পাঠানো হয়। স্বরুপকাঠির আরেক চাষি সোহেল জমাদ্দার বলেন, আমাদের উৎপাদিত মরিচ বাহিরে গেলেও আমরা সফলের ন্যায্য দাম পাইনা। মরিচের ব্যবস্যা কয়েক হাত হয়ে মূল্য নির্ধারণ হয়। যার কারণে আমরা কমে বিক্রি করলেও ঢাকায় গিয়ে মরিচের দাম ডাবল হয়। এদিকে মরিচ চাষিদের কৃষি লোন সহ সব ধরণের সহযোগিতার কথা জানান নেছারাবাদ উপজেলা কৃষি অফিসার চপল কৃষ্ণ নাথ। জেলা কৃষি কর্মকর্তা চিন্ময় রায় জনান, এবছর স্বরুপকাঠি উপজেলায় ৮০ হেক্টর জমিতে বোম্বাইয় মরিচের আবাদ হয়েছে। এবং এই বোম্বায় মরিচের ফলন হেক্টর প্রতি ১০ থেকে ১২ মেট্রিকটন।