নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে বাস্তবায়িত” ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজী”(আইএলএসটি) প্রকল্পের আওতায় বরিশাল, সিলেট ও লালমনিরহাটে স্থাপনা নির্মাণের লক্ষে ওই কাজের জন্য প্রায় ১৪৫ কোটি টাকার দরপত্র আহব্বান করা হয়। নির্মাণ কাজ করার জন্য প্রকৌশল উপদেষ্ঠা প্রতিষ্ঠান নিয়োগে অনিয়ম, উপদেষ্ঠা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ডিজাইন, ড্রয়িং যথাযথ না হওয়া, প্রয়োজনের তুলনায় বেশী এষ্টিমেট করা এবং প্রকল্প পরিচালক নিয়োগে সরকারী নির্দেশনা না মানা, গোপনীয় দর বিশেষ বিশেষ ঠিকাদার কে প্রদান করা ইত্যাদি বিষয়ে উল্লেখ করে মেসার্স আর পিএস এন্টার প্রাইজের মালিক আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার সেন্টু গত ১৯ জুন ২০২১ বিভিন্ন অনিয়মের কথা উল্লেখ করে মাননীয় হাইকোটে একটি রীট পিটিশন দাখিল করে যার নং -৬১৪২/২১ । ওই রীট পিটিশনের আলোকে মাননীয় আদালত অভিযোগ সমূহ আগামী ৪ মাসের মধ্যে তদন্ত করে সুপ্রিম কোটের রেজিস্টারের মাধ্যমে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এ ছারাও তিনি মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুদুকের চেয়ারম্যান, অধিদপ্তরের ডিজির বরাবরে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
অন্যদিকে অর্থ বিভাগ গত ২৬ এপ্রিল ২০২১, ২২৩ সংখ্যক পরিপত্রে স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যতিত অন্য সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগের অধীনে অর্থ বছরের (২০২০-২০২১) অবশিষ্ট সময়ে নুতন কোন পূর্ত কাজের (নির্মাণ/স্থাপনা) কার্য্যাদেশ(নোয়া) প্রদান করা যাবে না মর্মে পরিপত্র জারী করে। কিন্তু আলোচ্য প্রকল্পের পিডি এ পরিপত্রকে অগ্রাহ্য করে গত ১৪ জুন ২০২১ খোকন কনস্ট্রাকশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লি: এর অনুকূলে মোট ১,৮২,৪৪,৫৮৩/৩৫৭ টাকার কার্য্যাদেশ( নোয়া) প্রদান করে। যা সরাসরি সরকারি সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। তথ্যমতে ঐ ঠিকাদার অল্প কিছু কাজ করার পরে কাজ বন্ধ রেখেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানায় যে ঐ ঠিকাদার পিডির বিশেষ পছন্দের এবং বিশেষ সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে পিডি এ অনিয়মটি করেছে।
অন্যদিকে প্রকল্প পরিচালক এ সবের বিষয় তোয়াক্কা না করে বা তদন্ত পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই প্রায় সকল কাজের কার্য্যাদেশ প্রদান করেছে। রীট পিটিশনে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগে অনিয়মের কথাও উল্লেখ রয়েছে। তথ্য মতে ডিপিপি/সরকারী নির্দেশনায় আলোচ্য প্রকল্পের জন্য ন্যুনতম ৫ম গ্রেডের একজন কর্মকর্তাকে পিডি নিয়োগের বাধ্যবাধকতা থাকলেও কর্তৃপক্ষ সরকারী নিয়মকে অবঞ্জা করে ৬ষ্ঠ গ্রেডের একজন উপজেলা কর্মকর্তাকে পিডি নিয়োগ দিয়েছে যার বিরুদ্ধে পূর্বেও দূনীতির অভিযোগ ছিল।
এ বিষয়ে অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ডা: সেখ আজিজুর রহমানকে তার মোবাইল ফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান এ বিষয়ে তার কিছুই করনীয় নেই। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ও সচিব মহোদয় অবগত আছেন।পিডি জাহাংগীরের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন তিনি গত ৪ আগস্ট ২১ মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করেছেন বলেও জানান। মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদের মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। এ বিষয়ে আদালতে রীট দায়ের কারী সেন্টু জানান তিনি সব কিছু যাচাই করেই অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করলেই আনীত অভিযোগ প্রমানিত হবে বলে তিনি দাবী করেন। প্রকল্প পরিচালক ডা: মো: জাহাংগীর হোসেন জানান যে, তিনি উপজেলা কর্মকর্তা হলেও বেতন ভাতা গ্রহন করেন ৪র্থ গ্রেডে। অন্যান্য অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলে অধিদপ্তর এ বিষয় তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে সেখানে আমার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগ অসত্য প্রমানিত হয়েছে।
অন্য একটি প্রকল্পে প্রকিউরমেন্ট অফিসার হিসাবে দায়িত্বপালন কালে অনিয়মের জন্য তাকে শাস্তি মূলক ঝালকাটি জেলায় বদলীর বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন উত্তর প্রদান করেন নি। অধিদপ্তরের একাধিক ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্ত্বে জানান পিডি আর্থিক সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে যাদেরকে গোপনীয় দর প্রদান করেছে তারাই কার্য্যাদেশ পেয়েছে। ২/১ টি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়েছে কারন গোপনীয় দরগ্রহন কারীরা দরপত্রে যথাযথ কাগজপত্রাদি সংযোজন করতে পারেনি। তারা দূনীতিবাজ পিডির অপসারন ও শাস্তি দাবী করেন।