ফুলবাড়ীয়া, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় বিগত সময়ের তুলনায় এবার সরিষা চাষির সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই অনুপাতে সম্ভাবনা রয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ ফলন উৎপাদনের । সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গিয়েছে উপজেলার গ্রামাঞ্চল। সরিষা ফুলে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। সরিষা উৎপাদনে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ঘোষিত উদ্যোগে হাসছে সোনালী ফসলের মাঠ। হলদে ফুলের বিস্তৃত অপরুপ দৃশ্য দেখে মনে হয় এ যেনো এক নবদিগন্তের সমারোহ। সরিষার এই নতুন রাজ্যে প্রতিনিয়ত নানা শ্রেনীর লোকজন সরিষা ফুলের আকর্ষণে মুগ্ধ হয়ে ক্যামেরাবন্ধী হচ্ছেন। সেই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান দিচ্ছে এবারের সরিষা আবাদে বাম্পার ফলন ও উৎপাদনের কথা। বীজ বপনের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা।
জানাযায়, তৈল উৎপাদন বৃদ্ধিতে উপজেলা কৃষি বিভাগ কর্তৃক কৃষকদের সার্বিক তত্বাবধানে সরিষা বারি-১৪ ও বারি-১৭ জাতসহ সকল জাতের সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবছর চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৯৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এবার ১হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। মোট আবাদকৃত জমির অধিকাংশ জমিতে বারি-১৪ ও বারি-১৭ বিনা -১৩ জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে। অন্য ফসলের তুলনায় তৈলজাত ফসল সরিষা আবাদ অধিক লাভজনক ও এবার সরকারীভাবে প্রণোদনা পাওয়ায় কৃষকরা ব্যাপক সরিষা চাষে ঝুঁকেছে। প্রণোদনার আওতায় উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার জন কৃষককে জনপ্রতি ১০ কেজি এমওপি সার, ২০ কেজি ডিএপি সার এবং ১ কেজি করে বীজ বিনামূল্যে প্রদান করেছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উপজেলার কুশমাইল ইউনিয়নের দেওনাই পাড় এলাকার কৃষক আবুল কালাম জানান, কৃষি বিভাগ কর্তৃক সরিষা চাষে কৃষকদেরকে উৎসাহিত করা ও প্রণোদনা দেওয়ায় আস-পাশের সকলেই সরিষা আবাদ করেছেন। তিনি এবার ২ বিঘা জমিতে বারি-১৪ ও ১৭, জাতের সরিষার চাষ করেছেন।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরূপ ফলন আশা করছেন তিনি। কুশমাইল এলাকার কৃষকেরা দৈনিক আমাদের কন্ঠকে জানান, বীজ বপনের ২ মাসের মধ্যেই সরিষা ঘরে উঠে আসে। সরিষা উঠিয়ে বোরো চাষ করতে কোনো সমস্যা হয় না এবং বোরো ধানের ফলনেও কোনো প্রভাব পড়ে না। এতে মাটির আরও উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। তাঁদের মতে সরিষার আবাদ করা মানেই স্বল্প সময়ে অতিরিক্ত লাভের মুখ দেখা। উপজেলা কৃষি অফিসার রাকিব আল রানা দৈনিক আমাদের কন্ঠকে বলেন,উপজেলার পৌরসভাসহ প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক কৃষকদের উৎসাহ ও পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত আরও ৫শ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ করাতে সক্ষম হয়েছি। ইনশাআল্লাহ এবার আমরা সরিষা উৎপাদনে অতীতের চেয়ে অনেক ভালো করতে পারবো।