চন্দ্রনাথ গুপ্ত, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর কাউন্সিলর কর্তৃক খেলার মাঠসহ ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজার মেলার মাঠ জবরদখলের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার সকালে বিক্ষোভসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। সকালে ১১ টায় ফুলবাড়ী পৌর এলাকার চাঁদপাড়া গ্রামবাসী তাদের খেলার মাঠ ও ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজার মেলার মাঠ পৌর কাউন্সিলর মাজেদুর রহমানের জবরদখল থেকে রক্ষার দাবিতে গ্রাম থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণসহ উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় দাবির সমর্থনে বক্তব্য রাখেন সামসুল ইসলাম, সুমন রায়, সাদেনুর ইসলাম, অমিত রায়, পিংকি রায়, বকুল সরকার, অনিতা রানী প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ফুলবাড়ী পৌর এলাকার চাঁদপাড়া এলাকার ছোট যমুনা নদীর পশ্চিম তীর সংলগ্ন সুজাপুর মৌজার ১৮১৫ দাগের সম্পত্তিটি এসএ খতিয়ান অনুযায়ী সরকারি এবং জনসাধারণের স্বাথে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত থাকার কথা উল্লেখ্য রয়েছে। ওই সম্পত্তিটি এলাকার সকল সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা খেলার মাঠ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন চড়ক পূজার মেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। কিš‘ হঠাৎ করে চাঁদপাড়া এলাকার পৌর কাউন্সিলর মাজেদুর রহমান ওই সম্পত্তিটি নিজের দাবি করে জোরপূর্বক জবর দখল করে নিয়েছেন। ইতোপূর্বে বিষয়টি প্রতিকার চেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়রকে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার কিংবা কোন প্রকার সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে এলাকাবাসী তাদের খেলার মাঠ ও মেলার মাঠ জবর দখল থেকে রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভসহ মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছেন।
এরপরও কোন উদ্যোগ নেওয়া না হলে আগামীতে গ্রামবাসী কঠোর আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলবে। মানববন্ধন শেষে গ্রামবাসীর গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রদান করা হয়। খেলার মাঠ ও চড়ক পূজার মেলার দখলের কথা অস্বীকার করে পৌর কাউন্সিলর মাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমি যে জায়গায় রয়েছি, সেটি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। যার দাগ নং ১৮১৬। এলাকাবাসীর দাবিকৃত জায়গাটি হচ্ছে ১৮১৫ দাগের। সেই অনুসারে তাদের জায়গাটিও আলাদা। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র মো. মাহমুদ আলম লিটন বলেন, চাঁদপাড়া এলাকারবাসী একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। উভয় পক্ষকে নিয়ে কাগজপত্র দেখে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, এলাকাবাসীর কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে খেলার ও মেলার মাঠ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
