চন্দ্রনাথ গুপ্ত, ফুলবাড়ী দিনাজপুর
করোনা প্রতিরোধে সরকার ১১ দফা প্রতিপালনের জন্য নির্দেশনা জারি করলেও সংশ্লিষ্টদের তৎপরতার অভাবে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। টিকা সনদ দেখিয়ে হোটেল-রেঁস্তোরায় খাওয়া নির্দেশনা দেওয়া হলেও কেউই মানছে সেটি। নিজ খেয়ালখুশি মতো চলছে পূর্বের মতোই হোটেল-রেঁস্তোরায় খাওয়া-দাওয়া। সরকারের ১১ দফা নির্দেশনা কার্যকরী হওয়ার কথা থাকলেও ফুলবাড়ী উপজেলা সর্বত্রই সেটি চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ী উপজেলার পৌরশহরসহ বিভিন্ন হাটবাজারের হোটেল-রেঁস্তোরায় ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতা কারো মুখেই মাস্ক নেই, নেই টিকা গ্রহণের সনদ। নেই সামাজিক দূরত্ব বালাই।
পৌরশহরের নিমতলা মোড়স্থ রাজধানী হোটেলের ম্যানেজার ইমরান হোসেন বলেন, সরকারের ১১ দফা নির্দেশনার বিষয়ে তিনি তেমন অবগত নন। তিনি নিজে টিকা নিলেও ক্রেতাদের টিকা সনদ চাওয়ার বিষয়ে তার তেমন আগ্রহ নেই। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনেকেই এখনও টিকা নেননি। একই হোটেলে দুপুরে ভাত খেতে আসা এক ক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাড়ী থেকে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে এসেছেন, তাই টিকার কার্ডটি তার সাথে নেই।
তবে তিনি দাবী করেন তিনি টিকা দিয়েছেন দুই ডোজ। ঢাকা বিরানী হাউজে কর্মচারী শাহিন হোসেন বলেন, তিনি স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। ফলে ক্রেতাদের কাছে টিকা সনদ দেখতে চাননি। আশা ইশিতা জামান নামের এক ক্রেতা বলেন, হোটেল মালিকরা কখনোই ক্রেতাদের কাছে টিকা সনদ দেখতে চাচ্ছেন না বলেই কেউই সঙ্গে টিকা কার্ড রাখছে না। সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে কিছুই জানেন না ফুলবাড়ী পৌরশহরের রহমানিয়া হোটেলের মালিক জিয়াউর রহমান, রবকতিয়া হোটেলের ম্যানেজার সাঈদ রানা, ডুঙ্গি হোটেলে মালিক উজ্জ্বল মহন্তসহ বেশির ভাগ হোটেল মালিক ও ম্যানেজার। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত করোনা ভ্যাক্সিনের নেওয়ার জন্য উপজেলা এক লাখ ২৩ হাজার ৫৯৩ জন অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন। এরমধ্যে প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন এক লাখ ৯ হাজার ১২১ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৭৭ হাজার ১২৯ জন, বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন এক হাজার ৭৮৪ জন। একইভাবে ১২-১৮ বছরের ১৬ হাজার শিক্ষার্থীকে ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে। আরো ৫ হাজার শিক্ষার্থী টিকা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ফুলবাড়ী মোট শনাক্ত ৬৯৭ জন, এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬৮২ জন। মারা গেছেন ১৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় একজনসহ বর্তমানে মোট ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যা গত এক মাস আগেও শূন্যের কোঠায় ছিল। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে যাবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সরকারের বিধিনিষেধ কার্যকর করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এরপরও কাজ না হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।