মো. আল-আমিন, ফুলবাড়ীয়া, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় নিজের নামে জমি ও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হওয়ার পরেও ভ‚মিহীন পরিচয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাইদুল ইসলাম ও তাঁর ভাই শফিকুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে। সাইদুল উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়ন আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি। জানাযায়, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহে এনায়েতপুর ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ২৭ টি ভ‚মিহীন পরিবারের জন্য ৪০০ বর্গফুট আয়তনের ২ কক্ষ বিশিষ্ট বারান্দাসহ সেমিপাকা একক গৃহ বরাদ্দ দেওয়া হয়।
যার পেছনে রান্নাঘর ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাটট্রিন ও বিনাম‚ল্যে বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি পুনর্বাসিতদের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানীর ব্যবস্থাও রয়েছে । প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ‚মিহীন, গৃহহীন, ছিন্নম‚ল, অসহায় দরিদ্র পরিবারের জন্য ঘর প্রদানের কথা থাকলেও সাইদুল ইসলাম ও তাঁর ভাইয়ের নামে একাধিক যায়গায় নিজেদের নামে জমি থাকার পরেও আশ্রয়ণ প্রকল্পে তাদের দুই ভাইয়ের নামে ঘর ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানাযায়, সাইদুল ইসলাম ও তাঁর ভাই শফিকুল দুজন মিলে আশ্রয়ন প্রকল্পের দক্ষিণ পাশে সাবেক ১৮৮৩,১৮৮৪,১৮৮৫ দাগে নজরুল মেম্বার এর কাছ থেকে ৫ কাঠা জমি কিনে রেজিস্ট্রি করে নেন। একই দাগে ছফর ও মজিবর এর কাছ থেকে ৩ কাঠা জমি কেনেন যা রেজিষ্ট্রি পক্রিয়াধীন। ইদ্রিস আলী সরকারের ছেলে ইউসুফ থেকে ৫ কাঠা, হাকিমুদ্দিন ফকীর এর ছেলে সুবহান ফকীরের কাছ থেকে স্ট্যাম্পম‚লে ৪ কাঠা জমি কেনাসহ ৭/৮ লাখ টাকার ভোগরেহান (বন্ধক)জমি রয়েছে তাদের।
স্থানীয়দের হিসেবে তাঁরা দুই ভাই আনুমানিক ৫০/৬০ লাখ টাকার সম্পত্তির মালিক বলে জানাগেছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের ভ‚মিহীনদের সাথে কথা বলে জানাযায়, সাইদুল সভাপতি হওয়ার সুবাদে তাঁর পরিবারের লোকজন একাধিক ঘর নিয়েছে। তাঁরা দুই ভাই অঢেল সম্পত্তির মালিক হওয়া স্বত্বেও ভ‚মিহীন হিসেবে ঘর নিয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করলেও তাঁরা অদৃশ্য কারণে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সম্প্রতি আশ্রয়ন প্রকল্পে লোকজন না থাকা পরিত্যক্ত একটি আধাঁপাকা ঘর তাঁর এক মামাতো বোন কে দিয়েছে। অথচ এখানে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসহ এখনও অনেক মানুষ নতুন ঘর পায়নি। তাঁদের জন্য কোন ঘরের ব্যাবস্থা করে না। যা আসে সবই যেনো তাদের দরকার। অভিযোগ রয়েছে প্রায় ব্যাক্তির নামে আশ্রয়ণ প্রকল্পে টিনের ঘর থাকার পরেও নতুন সেমিাপাকা ঘর প্রদান করা হয়েছে । পুরাতন ঘর যাদের আছে তাদের নতুন ঘর না দিলে এখানে নতুন আরও কিছু ভূমিহীন আশ্রয় নিতে পারতো বলে স্থানীয়রা জানান। অন্তরা বলেন, সাইদুল ও তাঁর ভাইয়ের জমি আছে ।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জানালে তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এ বিষয়ে সাইদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জমি কিনেছি ঠিক আছে তা এখনও দলিল করিনি। নজরুল ইসলাম বলেন, সাইদুল ও শফিকুল আমার কাছ থেকে ৫ কাঠা জমি কিনেছে। যে জমি আমি ওদের কে দলিল করে দিয়েছি। ওরা আমাকে নিষেধ করেছে জমি কেনার বিষয়ে আমি যেন কিছু না বলি। সেই সাথে তাদের কাছে জমি বিক্রি করি নাই এটি বলতে বলেছে। আমি তাদের বলে দিয়েছি যে আমি মিথ্যা বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে ‘দৈনিক আমাদের কন্ঠে’ সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় কোন প্রতিবাদ না জানিয়ে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে অন্য একটি দৈনিকে জমির দাতাদের কে ভ‚মিহীন দেখিয়ে প্রতিবাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও জমির অন্যতম দাতা নজরুল ইসলাম নিজে ভ‚মিহীন নয় মর্মে এই প্রতিবেদকের সাথে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আপনার নিকট জমির দলিল ও দাখিলা থাকলে দিন আমি ব্যবস্থা নিবো।