বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় ফ্রি ফায়ার গেমস এর আইডি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে শিশু বন্ধুর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে অপর স্কুলছাত্র শিশু সিফাত (১৩)। এ ঘটনায় জড়িত বন্ধুকে মঙ্গলবার ঢাকার মনিপুরীপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশর গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যার রহস্য উদ্ধার করে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকার একটি বাঁশবাগান থেকে শিশু সিফাতের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সিফাত বগুড়া শহরের নূরানী মোড় এলাকার শাহ আলমের ছেলে। সিফাত ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পুলিশ সুপার বলেন, সিফাতের একই শ্রেণীর ও বয়সের এক বন্ধু (শিশু হওয়ায় পুলিশ নাম প্রকাশ করেনি) কৌশলে সিফাতের কাছ থেকে ফ্রি ফায়ার গেমের আইডি ও পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়। এরপর সিফাত আইডি ও পাসওয়ার্ড বার বার ফেরত চাইলে সেই বন্ধু ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে সিফাত ও তার কয়েকজন বন্ধু মিলে ওই বন্ধুকে চাপ দিয়ে আইডি ও পাসওয়ার্ড ফেরত দিতে বাধ্য করে। এই ঘটনায় ওই বন্ধুর সাথে সিফাতের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
তিনি আরো বলেন, গত ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে সিফাত তার বড় বোনের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন মেরামত করার জন্য নিজ বাসা থেকে বের হয়। পথে তার সেই বন্ধুর সাথে দেখা হয় এবং সেই বন্ধু কৌশলে তার দাদার বাড়ি শিবগঞ্জের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যায়। সেখানে একটি বাঁশবাগানে ফ্রি ফায়ার গেমস খেলার কথা বলে দু’জন আড্ডা দেয়। পরে সিফাত বাড়ি যাওয়ার কথা বললে ওই বন্ধুর আগে থেকেই কাছে থাকা চাপাতি দিয়ে পিছন থেকে সিফাতের গলায় আঘাত করে। পরে সিফাত মাটিতে পড়ে গেলে মুখ চেপে ধরে জবাই করে এবং বাম হাতের কবজির রগ কেটে দেয়। হত্যাকান্ড শেষে ওই বন্ধু ঢাকায় পালিয়ে মনিপুরী পাড়ায় আশ্রয় নেয়। পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকান্ডের একমাত্র আসামী সিফাতের বন্ধু অপ্রাপ্ত বয়স্ক। এ ঘটনায় আরও তদন্ত চলছে। আসামীকে আদালতে হাজির করা হভেপ্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ, মোতাহার হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার তানভীর হাসান, ডিবির ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ ও শিবগঞ্জ থানার ওসি মুনজুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত এক মাসে জেলায় এমন আরো দুই শিশুহত্যার ঘটনা ঘটেছে।