বগুড়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় থমকে আছে অর্থোপেডিক হাসপাতাল

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, বগুড়া:

গত ১৫ বছরের আওয়ামী রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় উন্নয়ন বহির্ভূত ছিল বগুড়া। অর্থাৎ উত্তরের রাজধানী ক্ষ্যত বগুড়া ১৪টি জেলার প্রবেশদ্বার ও অবকাঠামোগত শহর হলেও, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে অনেকটাই পিছিয়ে পরেছে। এখানে অনেক কিছু থেকেই যেনো কিছুই নেই। এরমক উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার মধ্যে রয়েছে অর্থোপেডিক হাসপাতাল। কারন বগুড়ায় রয়েছে আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর। বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও গাইবান্ধা জেলার কার্যালয় এটি। এখানে অবকাঠামো ও পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও নেই উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম।

বগুড়ার এই কার্যালয় লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের দপ্তর হলেও সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই অঞ্চলের মানুষ। বিভিন্ন সময় নানা ধরনের বড় দুর্ঘটনায় শ্রমিকরা আহত কিংবা অঙ্গহানি হলে চিকিৎসা নেয়ার জন্য যেতে হয় ঢাকায়। অর্থাৎ গত কয়েক বছর আগে অর্থোপেডিক হাসপাতালের কার্যক্রম হাতে নিলেও তা কোনভাবেই বান্তবায়ন হয়নি।

২০২১ সালের শেষের দিকে শ্রম অধিদপ্তরের শালিশী শাখা থেকে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। দপ্তরের পরিচালক গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরীত ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর বগুড়া কর্তৃক আয়োজিত অংশীজনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় গোটা উত্তরবঙ্গের শ্রমজীবী মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, এই অঞ্চলের মানুষের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি বিশেষায়িত/অর্থোপেডিক হাসপাতাল তৈরির প্রকল্প করা যেতে পারে। সে অনুযায়ী প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয় এবং এই সংক্রান্ত কার্যক্রমটি চলমান থাকে। দপ্তরের ৪০.০২.০০০০.০৩৫.১৬.০০৩.১৪.৪৫৩./১(৩) নং স্বারকের চিঠিটি সদয় অবগতি ও কার্যার্থে প্রেরণ করা হয়েছিল ১। পরিচালক, পরিচালকের দপ্তর, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, রাজশাহী ২। পরিচালক, পরিচালক (পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান ও তথ্য প্রযুক্তি ) শ্রম অধিদপ্তর ৩। অফিস কপি, শ্রম অধিদপ্তর প্রধান কার্যালয় ঢাকা বরাবর। সেইসাথে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিš’ বৈষম্যতার কারনে এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে বগুড়ায় কোন ধরনের উন্নয়ন করা যাবেনা এমন চিন্তা থেকে, উন্নয়নকে বাধাঁ দিতে প্রকল্পটির কাজ থমকে যায় এবং তৎকালীন ওই কর্মকর্তাকেও এ বিষয়ে আর কোন পদক্ষেপ নিতে নিষেধ করেন উর্ধতন কর্তৃপক্ষ। একারনে হাসপালের প্রকল্পটি ছাড়াও আরো কয়েকটি কাজের অগ্রগতি বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে আঞ্চলিক ও জেলা পর্যায়ের অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিক্ষুব্ধ হওয়ার চেষ্টা করলেও তা ফলপ্রসু হয়নি। অর্থাৎ বগুড়া বিএনপি আধ্যসিত এলাকা হওয়ায় এবং সাবেক প্রধাণমন্ত্রীর এলাকা হওয়ার কারনেই এধরনের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানায় উর্ধতন কর্মকর্তারা।

বগুড়া আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের আওতায় প্রায় ট্রেড ইউনিয়নভুক্ত প্রায় ৩ লক্ষাধিক শ্রমিক ও প্রায় ৫০ লক্ষাধীক শ্রমিক রয়েছে এই আঞ্চলিক কার্যালয়ের আওতায়। এছাড়া লক্ষ লক্ষ মানুষের বসবাস। এছাড়া উত্তরের রাজধানীক্ষ্যত বগুড়ায় একটি অর্থপেডিক হাসপাতাল হলে ১৪ টি জেলার মানুষ ঢাকায় না গিয়ে বগুড়া থেকেই এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। এতে করে একদিকে কমবে ঢাকা অর্থপেডিক হাসপাতালের উপর চাপ অন্য দিকে প্রায় অর্ধেকেরও কম ব্যায়ে সেবা নিতে পারবে উত্তরের মানুষগুলো।

এ বিষয়ে বগুড়া জেলা বাস/মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর মোঃ এরশাদুল বাড়ি এরশাদ বলেন। বগুড়ায় একটি অর্থোপেডিক হাসপাতাল অতিব জর”রী। কারন উত্তরের রাজধানী তথা ১৪ জেলার প্রবেশদার বলা হয় বগুড়াকে। তাই এখানে একটি অর্থোপেডিক হাসপাতাল হলে উত্তরের মানুষদের আর ঢাকা যেতে হবেনা। তিনি আরো বলেন বিশেষ করে শ্রমিকরা অনেক সুবিধা পাবেন।

বগুড়া আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন্স মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান বলেন বিগত সরকারের আমলে আবেদনের প্রেক্ষিতে বগুড়ায় একটি অর্থোপেডিক হাসপাতালের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল কিন্তু অজ্ঞাত কারনে সেটি বন্ধ হয়ে ছিল। আমরা আবারো একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। দ্র”ত কার্যকর হলে বগুড়াসহ উত্তরের মানুষ অনেক সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

হাজারো শ্রমজীবী মানুষের দাবি অতি দ্রুত থমকে থাকা অর্থপেডিক হাসপাতালের কাজটি দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের সেবার দ্বারপ্রান্ত খুলে দেয়া হোক।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *