কক্সবাজার প্রতিনিধি :
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের পানেরছড়া রেঞ্জে নির্বিচারে চলছে পাহাড় কাটা, বালু উত্তোলন, গাছ কাটা,বনভূমি দখল করে বিক্রি ও পানের বরজ সহ অবৈধ স্হাপনা নির্মাণ করা হলেও রেঞ্জ কর্মকর্তা নিরবতা পালন করছেন।এমনকি সংরক্ষিত বনের গাছ ডাম্পার গাড়িতে করে বিভিন্ন এলাকায় পাচার হচ্ছে রেঞ্জ কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়।প্রতিদিন বনের বুক ছিড়ে গাছভর্তি ডাম্পার বাহির হয় দিক বেদিক ছুটে চলে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লাল মহত’কে পানেরছড়া রেঞ্জের বনভূমি রক্ষা করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হলেও সে রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে।যোগদানের পর থেকে বন অপরাধের সাথে জড়িত লোকদের সাথে সিন্ডিকেট করে বন বানিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে পাহাড় খেকো, বালু খেকো,করাতকল, পানের বরজ ও
বনভূমি দখলকারী সহ বনভূমিতে অবৈধভাবে স্হাপনা নির্মাণকারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নির্বিঘ্নে বন অপরাধ করার সুযোগ করে দেয়া।
আরও অভিযোগ রয়েছে পাহাড়ের মাটি বহনকারী ডাম্পার মালিকদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা, পানের বরজ নির্মাণকারীদের কাছ মাসিক মাসোহারা, ও করাতকল মালিকদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা আদায় করছে।যেসব করাতকল মালিক,ও পানের বরজ নির্মাণকারী মাসিক মাসোহারার আওতায় আসবে না উচ্ছেদ নাটক সাজিয়ে তাদেরও মাসিক মাসোহারার আওতায় আনতে বাধ্য করা হয়।এমনকি যেসব ডাম্পার মালিক তার চুক্তির আওতায় আসবে না তাদের ডাম্পার আটক করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।এভাবেই নিজস্ব দালাল সিন্ডিকেট দিয়ে অনৈতিকভাবে কৌশলে মাসে উপার্জন করছেন লাখ লাখ টাকা।
গত ২৫ নভেম্বর সোমবার সকাল ১০ টার দিকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসার পথে রামু উপজেলার পানেরছড়া থেকে একটি ডাম্পার জব্দ করে।পরে স্হানীয় এক জনপ্রতিনিধির মধ্যস্ততায় ডাম্পার মালিকের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় বন বিভাগ।এভাবে অনেক ডাম্পার ধরে পরে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়,পানেরছড়ার হেডম্যান সৈয়দ নুরের পুত্র পাহাড় খেকো নজরুল ইসলাম রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লাল মহত এর খুব কাছের লোক।এই নজরুল ইসলাম রেঞ্জ কর্মকর্তার সহযোগিতা ও হেডম্যান পিতার প্রভাব কাটিয়ে নির্বিচারে পাহাড় কেটে তার নিজস্ব ডাম্পার গাড়ি দিয়ে মাটি ও বালি পাচার করছে।
আরও জানা যায়, রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লাল মহত দখলদারদের সাথে অর্থ ভাগ বাটোয়ারা করে সামাজিক বনায়নের গাছ লোপাট,নার্সারির চারা বিক্রি, নির্দিষ্ট পরিমাণ বনায়ন সৃজন না করা সামাজিক বনায়নের গাছ অবৈধ করাতকলে পাচারের জন্য স্বাক্ষর করে ছাড়পত্র দেয়া সহ পছন্দের লোকজনকে সহজে টেন্ডার পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্হানীয় এক ব্যক্তি জানান,পানেরছড়া রেঞ্জের বনভূমিতে কোন লোক একটি ঘর নির্মাণ করার আগে রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লাল মহত’কে চাহিদা মতো টাকা দিতে হয়, না দিলে ঘর করার অনুমতি পাওয়া যায় না। যদি কেউ অনুমতি ছাড়া ঘর নির্মাণ করে তাহলে অভিযান চালিয়ে ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়।
এমনি এক বিধবা মহিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লাল মহত এর চাহিদা মতো টাকা দিতে অক্ষম হওয়ায় রেঞ্জ কর্মকর্তা দলবেঁধে অভিযান চালিয়ে বিধবার ঘরটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয়।অথচ ভেঙে দেয়া বাড়িটির পাশে আরেকটি বহুতল ভবন নির্মাণ হলেও তা ভাঙা হয়নি।উদ্দেশ্য প্রণোদিত এ অভিযান’কে ঘিরে এলাকায় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই প্রশাসনের প্রতি বিরূপ মন্তব্য করছে।
এবিষয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোল্যা রেজাউল করিম বলেন,অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে জানতে প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরীর মুঠোফোনে কল দেয়া হলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।