বরিশালে ঝুঁকিপূর্ণ ৩৫ ভবন অপসারণ শুরু

মোঃ রবিউল ইসলাম রাব্বি(বরিশাল):
বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসের অনুপযোগী ৩৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে দুটি ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছার বলেছেন, পর্যায়ক্রমে সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনই সরিয়ে ফেলা হবে। নগরীর নিরাপত্তা ও জনসুরক্ষা নিশ্চিত করাই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
কীর্তনখোলা নদীর তীরে বিস্তৃত ৫৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নগরী বরিশাল, যেখানে শতবর্ষী বহু ভবন এখনো দাঁড়িয়ে আছে। এসব ভবন একসময় শহরের ঐতিহ্য বহন করলেও, বর্তমানে তা নগরবাসীর আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৩ সালের এক জরিপে সিটি করপোরেশন ভবনগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু আইনি জটিলতা ও তৎকালীন রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দীর্ঘদিন ধরে অপসারণের কাজ স্থগিত ছিল। পরিস্থিতি বদলে যাওয়ায় স¤প্রতি সিটি করপোরেশন নতুন করে ভবন অপসারণে নামছে। গেল মাসের শেষভাগে সদর রোডের দুটি ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে, যা নগরবাসীর মধ্যে স্বস্তি এনেছে। তাদের দাবি—বাকি ভবনগুলোও দ্রæত অপসারণ করা হোক।
সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, বগুড়া রোডের রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন, কাউনিয়া এলাকার জানুকি সিংহ রোডের মতি লস্করের বাড়ি, সদর রোডসংলগ্ন ফজলুল হক অ্যাভিনিউর হোটেল বাহাদুর ভবন, চিত্ত সাহার ভবন, কাটপট্টি রোডের মিল­াত ফার্মেসি, চন্দ্রিকা ব্রাদার্স, ও আহম্মদ ক্লথ স্টোরসসহ মোট ৩৫টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। একজন বলেন, আমরা এলাকাবাসী এতে খুব খুশি। কারণ রাজনৈতিক প্রভাব থাকলে এসব ভবন কখনো ভাঙা হতো না। আরেকজন জানান, রানা প্লাজার মতো বিপর্যয় যাতে আর না ঘটে, তাই আগেভাগেই এসব ভবন অপসারণ করা জরুরি।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস জানান, ভবনমালিকদের একাধিকবার চিঠি দিয়ে অবগত করা হয়েছে। নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নেওয়ার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে। এটি চলমান প্রক্রিয়া আমরা চাই, জনস্বার্থে সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন দ্রæত অপসারণ করা হোক, তিনি বলেন। পরিবেশ ও জনসুরক্ষা ফোরামের আহŸায়ক শুভঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, যেকোনো সময় এসব ভবনে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রাণহানির ঝুঁকি এড়াতে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
সিটি করপোরেশনের প্রশাসক রায়হান কাওছার আরও জানান, চিহ্নিত ভবনগুলোর বেশির ভাগই শতবর্ষ পুরনো এবং কোনো বিল্ডিং কোড মেনে নির্মিত হয়নি। আমরা ধাপে ধাপে সবগুলো ভাঙব। ইতোমধ্যে দুটি ভবন অপসারণ করা হয়েছে, বাকি ৩৩টিও পর্যায়ক্রমে সরিয়ে ফেলা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণের এই উদ্যোগে নগরবাসীর প্রত্যাশা একটি নিরাপদ, সুন্দর ও বাসযোগ্য বরিশাল।