ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী শুধু মহামারি নয় সৃষ্টি করেছে আতঙ্কেরও। বর্ষা মৌসুমে এই সমস্যা আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি বছর অপ্রত্যাশিত বর্ষার সময়ে হওয়া রোগগুলি বিশেষ করে ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া টাইফয়েড এবং অন্যান্য সংক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে কোভিড-এর সংক্রমণের পাশাপাশি এই রোগগুলিও বর্ষার এই সময় আরও জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তুলতে পারে। বহু সমীক্ষায় প্রমানিত হয়েছে বর্ষার সময়ে মারাত্মকভাবেবৃদ্ধি পায় রোগের প্রকোপ।আজকের বিষয় নিয়ে বিশেষ কলাম লিখেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট হোমিও গবেষক ডা.এম এম মাজেদ তাঁর কলামে লিখেন….বর্ষাকাল শুধু এই মেঘ-এইবৃষ্টি নিয়েই আসে না, সাথে করে নিয়ে আসে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া, অসুখবিসুখ। বিশেষ করে আমাদের ক্ষেত্রে গান, কবিতা আর সুরের এক অদ্ভুত মিশেল হয়ে আছে জীবনে। মেঘলা আবহাওয়ায় সামান্যবৃষ্টিতেই হয়তো মন গেয়ে ওঠে, “আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনেৃ”আর আবেগময় এই বর্ষাকাল বিভিন্ন রোগের বিস্তারের জন্যও বেশ দায়ী। এ সময় হঠাৎ হঠাৎ টানাবৃষ্টি থাকে আবার কখনো থেমে থেমে ঝিরঝিরবৃষ্টিও হয়। এ সময় স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাসের কারণে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। আর জ্বর, সর্দি, কাশি প্রভৃতি নানা রোগ হরহামেশাই লেগে থাকে। তবে এগুলোর পাশাপাশি পানি বাহিত রোগ বেশি হয়ে থাকে, যেমন- কলেরা, টাইফয়েড, ডায়রিয়া ইত্যাদি হয়ে থাকে।বর্ষাকালে হিপোথার্মিয়া, চোখের সংক্রমণ, শ্বাস প্রশ্বাসের স্থানান্তর সংক্রমণ, লেপটোপিয়েরোসিস পানি, শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমণ ইত্যাদি হতে পারে। আবার যাদের হাঁপানির সমস্যা আছে তাদের জন্যও বেশ ভোগান্তির। ভাইরাল ইনফেকশন, ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন, বা পরজীবী প্রাদুর্ভাব থেকে ডায়রিয়ার মত জীবাণুগুলো সাধারণত দূষিত খাদ্য বা পানি, দূষিত বস্তু বা হাত ইত্যাদির মাধ্যমেবৃহদান্ত্রতে পৌঁছায়। ক্ষেত্র বিশেষে কিডনির সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে।তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এর থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব- তাই দূষিত পানি পান করে মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তারা সহজেই এসব জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া পানিদূষণের কারণে শিশুদের মধ্যে টাইফয়েড, জন্ডিস (হেপাটাইটিস এ ও ই), রক্ত আমাশায়Íএসব রোগেরও প্রকোপ বাড়ে। দূষিত পানিতে গোসলের কারণে চুলকানি, খোস-পাঁচড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।কয়েক বছর ধরে বর্ষাকালে শহরগুলোতে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। পানিবাহিত পেটের অসুখের পাশাপাশি এ মৌসুমে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এডিস মশা জন্মায়। এই বছর তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা মহামারী, চিকুনগুনিয়া রোগবাহী এডিস মশা,বৃষ্টিতে অনেকের মৌসুমি হাঁপানি বাড়ে। বিশেষ করে শিশুদের অনেকে ব্রঙ্কিওলাইটিসের কারণে তীব্র কাশিতে ভোগে।বর্ষার মৌসুমে ৭ টা রোগ বেশি দেখা দেয়ঃ- * ইনফ্লুয়েঞ্জা: অপুর ইনফ্লুয়েঞ্জা দিয়েই কথা বলা শুরু তাই ওই অসুখটার কথাই প্রথমে বলা যাক। বর্ষায় শিশুদের ক্ষেত্রে এটা খুব সাধারণ একটা সমস্যা। সাধারণ জীবাণুঘটিত অসুখই বলা যায় একে।কারণ: বাতাসে এই অসুখের জীবাণু প্রচুর পরিমাণে ছড়িয়ে থাকে। বর্ষাকালে তাদের বাড়বাড়ন্ত হয়। শুধু শিশুদের কেন, বড়দেরও নাক বা মুখ দিয়ে এই জীবাণু ঢুকে শরীরে রোগবালাই বাড়িয়ে দিতে পারে। লক্ষণ: প্রচন্ড সর্দি, সঙ্গে জ্বর। গলা ভেঙে যায় বহু বাচ্চার ক্ষেত্রেই।
শরীরে ব্যথাও হয় এর বাড়াবাড়ি হলে। সাবধানতা: শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যত বেশি থাকে, শিশুর শরীর এই ভাইরাসের সঙ্গে তত ভালো করে মোকাবিলা করতে পারে। ফলে ওকে পুষ্টিকর তো বটেই পাশাপাশি ভিটামিন-সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিন। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ডায়েট-চার্ট বানিয়ে নিতে পারেন। অসুখটা হলে চিকিৎসকই বলে দিতে পারেবন, কী-কী ওষুধ খাওয়াতে হবে।* ডেঙ্গুঃ- বর্ষাকালে মশার কামড়ে এই রোগ ছড়ায়। এখন তো ডেঙ্গির (ডেঙ্গু ) বেশ বাড়াবাড়ি হয়েছে।* কারণঃ-মশা এই রোগের জীবাণুর বাহক। মশার কামগ থেকে ছোটদের তো বটেই বড়দেরও এই রোগ হতে পারে।
লক্ষণ: প্রচন্ড জ্বর। তার সঙ্গে গাঁটে-গাঁটে ব্যথা। সারা শরীরের পেশি নাড়ানোর মতো ক্ষমতাও থাকে না। শিশুরা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পডড়ে। মাথা যন্ত্রণা হয়। কিছু ক্ষেত্রে শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণের পর্যন্ত আশঙ্কা থাকে।* সাবধানতাঃ-জানলা-দরজা বন্ধ করে এয়ার কন্ডিশনার চালিয়া শিশুকে রাখার ব্যবস্থা না-থাকলে ওকে মশারির মধ্যে রাখুন। ঘরে মশা তাড়ানোর তেল ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু তার সব ক’টি শিশুদের জন্য ভালো নয়। কোন তেল ব্যবহার করলে শিশুর ক্ষতি হবে না, তা বিশেষজ্ঞের থেকে জেনে নিন। আর শিশু এই রোগে আক্রান্ত হলে ততক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। না-হলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে। * ম্যালেরিয়াঃ-এটিও মশাবাহিত রোগ।
বর্ষাকালের সবচেয়ে কমন অসুখ কারণ: বর্ষায় এখানে-সেখানে জমে থাকা জলে মশা সহজে বংশবিস্তার করে। মেয়ে অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে এই রোগ ছড়ায়।* লক্ষণঃ-শুরু হয় হালকা জ্বর দিয়ে। তারপর ক্রমশ উত্তাপ বাড়তে থাকে। ম্যালেরিয়ার প্রধান লক্ষণ নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা। শরীর প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়ে এই অসুখের কারণে।* সাবধানতা: ডেঙ্গির মতো এক্ষেত্রেও শিশুকে মশারির মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। বাড়ির চারপাশে পানি জমে থাকতে দেবেন না। শিশু ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত কি না, তা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই টের পাওয়া যায়। এই অসুখ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধের কোর্স করাতেই হবে।* টাইফয়েডঃ- বর্ষার অতি পরিচিত অসুখ। মূলত জলবাহিত রোগ
* কারণ: বর্ষাকালে অপরিচ্ছন্নতা থেকে এই রোগ ছড়ায়। জলে বা অশুদ্ধ খাবারে টাইফয়েডের জীবাণু বেশি পরিমাণে জন্মায়। তা শিশুর পেটে গেলেই টাইফয়েড জাঁকিয়ে বসবে।
লক্ষণ: জ্বর, পেটে ব্যথা এই রোগের প্রধান লক্ষণ। জীবাণুর বাড়বাড়ন্ত হলে মাথা ব্যথাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
সাবধানতা: টাইফয়েডের জীবাণু তাড়ানো খুব কঠিন।
অসুখ সেরে গেলেও গলব্লাডারে এই জীবাণু থেকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই এই রোগ থেকে খুব সাবধান। শিশুকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। পরিষ্কার জল আর খাবারও খাওয়ান। কেউ টাইফয়েডে আক্রান্ত হলে, তাকে বাকিদের থেকে দূরে রাখতে হবে। অন্য ঘর হলে সবচেয়ে ভালো হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মেনে চিকিৎসা করাতে হবে আক্রান্তর।
* গ্যাসট্রোএনটেরাইটিসঃ-
বর্ষাকালে জীবাণুঘটিত রোগের অন্যতম। সহজ কথায় যাকে বলে পেটের গোলমাল।
* কারণ: বর্ষাকালে শিশুরা অপরিচ্ছন্ন হাতে কোনও খাবার খেলে বা হাত মুখে দিলে এই রোগ ছড়াতে পারে একসঙ্গে নানাবিধ জীবাণুর আক্রমণে এই অসুখ হয়।
* লক্ষণ: পেটের ব্যাপক গন্ডগোল এর প্রধান লক্ষণ। পাশাপাশি বহু শিশুরই বমি হতে থাকে এই রোগের কারণে। শরীর প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়ে।
সাবধানতা: শিশুকে সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। দেখুন যেন নোংরা হাতে কোনও খাবার না-খায়। ফিল্টার করা জল খাওয়ান। একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে ওকে মশলাপাতি দেওয়া খাবার বা অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার দেবেন না। চিকিৎসকের থেকে জেনে নিন ওষুধের তালিকা। এমনকী এই রোগের সূত্র ধরে পড়ে কলেরা পর্যন্ত হতে পারে। তাই সে বিষয়েও সাবধান থাকুন।
* হেপাটাইটিস এঃ-জলবাহিত রোগ।
শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও হতে পারে (হেপাটাইটিস এ) ।
কারণ: অপরিশুদ্ধ জল থেকে তো বটেই, পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির মল থেকেও এই রোগের জীবাণু ছড়ায়। মলের ওপর মাছি বা অন্য পতঙ্গ বসার পর সেগুলো যদি কোনও ফল বা খাবারে বসে, তা হলে সেখান থেকে এই জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে।
* লক্ষণঃ-
জন্ডিসের মতো চোখ হলুদ হয়ে যায় অনেকের ক্ষেত্রেই। কারণ এই জীবাণু আক্রমণ করে মানুষের লিভারে। খিদে কমে যায়, বমি হতে থাকে এবং ভয়ঙ্কর পেটের গোলমাল হয়।
* সাবধানতা: শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়াটা দরকারি। পাশাপাশি খুব পরিশুদ্ধ জল এবং খাবার দিতে হবে। দরকার হলে ফুটিয়ে জল খাওয়াতে হবে। বাইরের কাটা ফল বা অন্য খাবার এই মরসুমে নয়। রোগে আক্রান্ত হলে ততক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
* লেপ্টোস্পিরোসিস: একে ওয়েলস সিনড্রম-ও বলে। বর্ষাকালে অপরিশুদ্ধ জল থেকে এই রোগ ছড়ায়।
*কারণ: মূলত অপিরশুদ্ধ পানি থেকেই এই রোগ ছড়ায়।
তবে শিশুরা মাঠে খেলার সময় কাদা মাখলে, সেই কাদা যদি কোনও কারণে মুখে যায়, তা হলেও এই অসুখ হতে পারে।
★ বর্ষায় স্স্থু থাকতে মেনে চলুন এই টিপসগুলিঃ-
তীব্র গরমের পর যখন আকাশে কালো মেঘ দেখা দেয় তখন প্রকৃতি থেকে শুরু করে মানুষ সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। তখন সবার চোখ যেন কালো মেঘের দেশে পাড়ি দেয়। যখন বর্ষার প্রথম ফোঁটাটা ধরিত্রীকে আলিঙ্গন করে তখন সোদা মাটির গন্ধের নেশা যেন শরীর, মন কাউকেই ছাড়তে চায় না। সেই সঙ্গে খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ হলে তো পুরো বর্ষাটাই জমে ক্ষীর হয়ে যায়!
আনন্দের মাঝে সমস্যা তো থেকেই যায়। বর্ষাকাল মানেই চারিদিকে জল জমে থাকে আর রাস্তা-ঘাট কর্দমাক্ত অবস্থায় থাকে। এছাড়াও,বৃষ্টি আসার সঙ্গে সঙ্গে নানারকম রোগের আবির্ভাব হয়। যেমন- বর্ষাকালে আমাদের বেশিরভাগেরই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কমে যায়। ফলে, নানারকম সংক্রমণ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে হজমের সমস্যা এবং মশার কামড় ঘটিত নানাবিধ রোগ তো রয়েছেই। শরীরে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনও দেখা দেয়। এইসময় বাতাসে এমনিতেই আর্দ্রতা বেশি থাকে। বর্ষাকালে রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি থাকায় প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন। আর সেইজন্য রোজকার খাদ্যাভাসে সবচেয়ে বেশি যা থাকা প্রয়োজন তা হল ভিটামিন। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সঠিক খাবার ও ফল খাওয়া উচিত।
আসুন দেখে নেওয়া যাক, সুস্থ থাকতে বর্ষাকালে কোন কোন ফল খাওয়া যেতে পারে -* পেঁপেঃ-এতে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। পেঁপে আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়াতে, ইমিউনিটি বাড়াতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।* আপেলঃ- বর্ষাকালে প্রতিদিন একটি করে ফল খাওয়া খুবই ভালো। এতে অনেক রকম রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তার মধ্যে আপেল খুবই উপকারী। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত খাবারের তালিকায় ১টি করে আপেল রাখা উচিত।
* বেদানাঃ-বেদানার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এছাড়া এটা মেটাবলিজমকে বাড়িয়ে তোলে এবং হজমে সাহায্য করে। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
* ন্যাসপাতিঃ-এটিও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরও ঠান্ডা রাখে। এছাড়া, জ্বর, সর্দি, কাশি কমাতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর ভিটামিন , মিনারেলস ও ফাইবার থাকে।* পেয়ারাঃ-পেয়ারাতে থাকে ভিটামিন সি। আর ভিটামিন সি শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া যে কোন ইনফেকশন থেকে পেয়ারা শরীরকে সুস্থ রাখে।* কলাঃ-কলাতে ভিটামিন এবং মিনারেলস থাকে। এটি আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
* কালো জামঃ-এটি বর্ষাকালের একটি অন্যতম ফল।
এতে ক্যালোরি কম রয়েছে এবং আয়রন, ফোলেট, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন জাতীয় পুষ্টি রয়েছে। বর্ষার সময় কালো জাম খাওয়া ভালো।* চেরীঃ-বর্ষার অন্যতম আরেকটি ফল হল চেরী। এটি বর্ষাকালে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এটি ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা আমাদের ব্রেনকে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে।
★বর্ষাকালে চুলের যতœঃ-
চুল নানা কারণে পড়ে। কিন্তু বর্ষাকালেবৃষ্টির পানি যা আমরা খালি চোখে দেখি পরিষ্কার কিন্তু তাতে একধরনের অ্যাসিড থাকে, যা চুলের ক্ষতি করে। তা ছাড়া এই সময়ে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, মাথায় ঘাম, চুল ঠিকমতো না শুকানো ইত্যাদি কারণে ছত্রাকের বাসা বাঁধতে সুবিধা হয়। এগুলোই মাথার ত্বকে চুলের গোড়ায় ইনফেকশন, খুশকি, চুল পড়াসহ নানা ধরনের ছত্রাকের আক্রমণসংক্রান্ত সমস্যা হওয়ার প্রধান কারণ।
অনেকে মনে করেন, বর্ষাকালে ধুলাবালু কম, তাই চুলের সমস্যা কম হবে। কিন্তু তা নয়, অন্যান্য ঋতুতে যা চুল পড়ে, বর্ষাকালে তার দ্বিগুণ চুল পড়ে। যেমন খুশকি, চুলের উজ্জ্বলতা কমে যায় ও উকুনও বেড়ে যায়। এ সময় মাথার ত্বকের তৈলাক্ততা বেড়ে যায়, চুল সহজে শুকাতে পারে না।
তাই চুলের গোড়া থাকে নরম। চুলের সঠিক যতেœর অভাবে এ সমস্যাগুলো আরও বেশি বেড়ে যায়। আর আগে থেকেই তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা এ ধরনের সমস্যায় তাঁরা আরও বেশি ভোগেন। আবার মাথার তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণও হতে পারে।ঘরোয়া যতœই হতে পারে চুলের সমস্যা সমাধানের উত্তম উপায়। শ্যাম্পু ব্যবহার করার পাশাপাশি বেশি তেলের খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। এক দিন পরপরই শ্যাম্পু করা উচিত। আর সপ্তাহে অন্তত এক দিন কিটোকোনাজল শ্যাম্পু করা উচিত। প্রচুর পানি পান করতে হবে। গোসলের পরই চুল শুকিয়ে ফেলতে হবে। ফ্যানের বাতাসে শুকানোই সবচেয়ে ভালো হবে। তবে সমস্যা বেড়ে গেলে চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সোজা করা চুলে বা রঙিন চুলে যেমন রাসায়নিক থাকে এবং তেমনি চুল শুষ্কও থাকে। তাই শ্যাম্পু ব্যবহার করার পাশাপাশি ভালো কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
অথবা শ্যাম্পু করার আগে তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।সবশেষে চুল পড়া রোধ বা কমাতে হলে চুলকে নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে, নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করতে হবে, যেকোনো ওষুধ গ্রহণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
★গর্ভবতী মায়েদের বাড়তি যতœ নিতে হবেঃ-বর্ষায় স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ার কারণে ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাস জেগে ওঠে। আর পোকামাকড়ের প্রজনন বেশি হয়। ফলে সংক্রমণ দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। তাই এ সময় গর্ভবতী মায়েদের নিতে হয় বাড়তি যতœ। মনে রাখতে হবে সামান্য অযতেœর কারণেও মা ও গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে। গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে হবে। বর্ষাকালে খাওয়া এবং পান করার ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে।
আসুন জেনে নিই কী করবেন-
* এ সময় বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। কারণ পানির কারণে আপনি নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। বেশিরভাগ চিকিৎসকের মতে, গর্ভবতী মায়ের বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত।
* বাইরের কেনা খাবার খাবেন না। বর্ষাকালে গর্ভবতী মায়ের রাস্তার ফুটপাতে একদমই খাওয়া উচিত নয়। দূষিত এসব খাবার থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
এ সময় বাড়িতে তৈরি খাবার ও তাজা ফল খান।
* ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখুন। বাথরুম পরিষ্কার করার জন্য ভালো মানের জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন। এ মৌসুমে জীবাণু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত।
* আবহাওয়া স্যাঁতসেঁতে হওয়ার কারণে,বৃষ্টির পর আর্দ্রতা বাড়তে শুরু করে। যার কারণে বেশি ঘাম হয়। অতিরিক্ত ঘাম হলে গর্ভবতী মায়ের ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে। এ জন্য ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পরুন।
* গর্ভবতী মায়েদের বাড়তি যতœ নিতে হবেঃ-বর্ষায় স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ার কারণে ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাস জেগে ওঠে। আর পোকামাকড়ের প্রজনন বেশি হয়। ফলে সংক্রমণ দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। তাই এ সময় গর্ভবতী মায়েদের নিতে হয় বাড়তি যতœ।
মনে রাখতে হবে সামান্য অযতেœর কারণেও মা ও গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে। গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে হবে। বর্ষাকালে খাওয়া এবং পান করার ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে।
আসুন জেনে নিই কী করবেন-
* এ সময় বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। কারণ পানির কারণে আপনি নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। বেশিরভাগ চিকিৎসকের মতে, গর্ভবতী মায়ের বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত।
* বাইরের কেনা খাবার খাবেন না। বর্ষাকালে গর্ভবতী মায়ের রাস্তার ফুটপাতে একদমই খাওয়া উচিত নয়। দূষিত এসব খাবার থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এ সময় বাড়িতে তৈরি খাবার ও তাজা ফল খান।
* ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখুন। বাথরুম পরিষ্কার করার জন্য ভালো মানের জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন। এ মৌসুমে জীবাণু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত।
* আবহাওয়া স্যাঁতসেঁতে হওয়ার কারণে,বৃষ্টির পর আর্দ্রতা বাড়তে শুরু করে।
যার কারণে বেশি ঘাম হয়। অতিরিক্ত ঘাম হলে গর্ভবতী মায়ের ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে। এ জন্য ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পরুন।
★হোমিওসমাধানঃরোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয় এই জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক কে ডা.হানেমানের নির্দেশিত হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসারে বর্ষার মৌসুমের নানাবিধ রোগ সহ যে কোন জটিল কঠিন রোগের চিকিৎসা ব্যক্তি স্বাতন্ত্র ভিওিক লক্ষণ সমষ্টি নির্ভর ও ধাতুগত ভাবে চিকিৎসা দিলে আল্লাহর রহমতে সহজে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। চিকিৎসা বিজ্ঞানে চিরন্তন সত্য বলে কিছুই নেই । কেননা একসময় আমরা শুনতাম যক্ষা হলে রক্ষা নেই , বর্তমানে শুনতে পাই যক্ষা ভাল হয়। এ সবকিছু বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও উন্নয়নের ফসল । নানাবিধ রোগ সমূহ হোমিওপ্যাথিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। সামগ্রিক উপসর্গের ভিত্তিতে ওষুধ নির্বাচনের মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয়। এটিই একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে রোগীর কষ্টের সমস্ত চিহ্ন এবং উপসর্গগুলি দূর করে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যের অবস্থা পুনরুদ্ধার করা যায়।
বিবিসি নিউজের ২০১৬ তথ্য মতে, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করে আরোগ্য লাভ করে, আবার ইদানিং অনেক নামদারি হোমিও চিকিৎসক বের হইছে,তাঁরা মৌসুমে নানাবিধ রোগীকে কে পেটেন্ট টনিক, ,দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে তাদের কে ডা.হানেমান শংকর জাতের হোমিওপ্যাথ বলে থাকেন,রোগীদের কে মনে রাখতে হবে, বর্ষার মৌসুমে নানাবিধ রোগ সমূহ কোন সাধারণ রোগ না, তাই সঠিক চিকিৎসা পাইতে হইলে অভিজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শ নিন।