সোহেল আহাদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : পাঠ সোনালী আঁশ। একসময় বাংলাদেশ বিশে^ও ৮০ শতাংশ পাট রপ্তানি করতো। আধুনিকায়নে পাটের চাহিদা থাকলেও কালক্রমে তা আজ ক্ষীণ হয়ে গেছে। স্থানীয় বাজারে পাটের মূল্য কম থাকায় চাষীরা পাট চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। যদিও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলায় বাম্পার ফলন হয়েছে সোনালী আঁশ পাটের। উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষকরা বেশ আনন্দে রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর বিজয়নগর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। পাশাপাশি অনুকূল আবহাওয়া থাকায় পাটের ফলনও ভালো হয়েছে। গত কয়েক বছর যাবত পাট চাষে তুলনামূলকভাবে লাভবান হওয়ায় পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা। এ বছরও ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করছে কৃষকরা।
বিজয়নগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, উপজেলায় মোট ৪১ হেক্টর জমিতে এ বছর দুই জাতের পাট চাষ করেছে চাষীরা। যার মধ্যে কেনআপ জাতের ৩০ হেক্টর ও তুষা জাতের ১১ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়। যার দ্বারা উপজেলার প্রায় ৩৫০ কৃষক পরিবার ৩২৮০ মন পাট চাষ করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার মির্জাপুর এলাকার প্রান্তিক চাষী রঞ্জিত দাস জানান, ন্যায্য দামে পাট বিক্রি করে সংসারের চাকা সচল রাখার পাশাপাশি ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ যোগান পাচ্ছেন সোনালী আঁশ পাট চাষ করে। এ বছর তিনি তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন ।
উপজেলার অন্যান্য পাট চাষিরা জানান, এক বিঘা জমি চাষ, বীজ, সার, কীটনাশক ক্রয়, পরিচর্যা, পঁচানি দিতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা নেয়ার পরিবহন খরচ থেকে শুরু করে পাট ছাড়ানো ও রোদে শুকিয়ে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়। উপজেলার আড়িয়াল গ্রামের রহমত আলী জানান, এ বছর পাটের ফলন খুব ভালো হয়েছে। দাম ভালো পেলে আমাদের লাভ হবে। বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাব্বির আহাম্মদে আমাদের কণ্ঠকে জানান, এ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া পাট চাষের উপযোগী। পাট পঁচনের (জাগ) ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক ডোবা, নালা, খাল, বিল ও জলাশয়। এ বছর আগাম বৃষ্টি হওয়ায় পাট পঁচনের ক্ষেত্রে পানির কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। এছাড়া ফলন যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি কৃষকেরা দামও ভালো পাবেন বলে আশা করছি।