মো. মিঠু মিয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগগঞ্জ জেলার তাহিরপুরের সীমান্ত নদী যাদুকাটায় চলছে লুটপাটের মহোৎসব। নদীখেকোরা দিনে-রাতে তান্ডব চালাচ্ছে জাদুকাটা নদীতে। শুধু বালু মহাল হিসেবে ইজারা নিয়ে নদী তীর থেকে অবৈধভাবে প্রতি মাসে ৬ লাখ ঘনফুট নুড়ি ও ভুতু পাথর উত্তোলন করে তা অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বৈধভাবে ইজারা নেওয়া হয়েছে যাদুকাটা নদীর নির্দিষ্ট ৩টি পয়েন্ট, কিন্তু পুরো নদী থেকেই অবাধে বালুপাথর উত্তোলন চলছে। সেই সাথে গত ৩০ বছরের রের্কড ভেঙে প্রতি ফুট বালুর জন্য নেওয়া হচ্ছে ৭ টাকা করে রয়্যালিটি, যা বিগত বছরগুলোতে সর্বোচ্চ ছিল প্রতি ফুটে ২ টাকা।
এ নিয়ে স্থানীয় বালু-পাথর ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে চরম ক্ষোভ। তারা বলছেন অনেকটা সন্ত্রাসী কায়দায় আদায় করা হচ্ছে রয়্যালিটি। আর তা না দিলে ব্যবসা করতে দেওয়া হচ্ছে না নদীতে। গত কয়েক বছরে নদীতে রয়্যালিটি ও টোল আদায়ের নামে চলেছে চাঁদাবাজী। গত দুথদিন সরেজমিনে যাদুকাটা নদীর মিয়ারচড় খেয়াঘাটের পূর্বপাড় থেকে ছড়ারপাড়, লাউড়েরগড়, পূর্ব লাউরেড়গড় ছিলাবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদী তীরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রতিদিন নুরী ও ভুতু পাথর উত্তোলন করে তা অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে। এসময় শ্রমিকেরা জানান প্রতিদিন নদী থেকে কমপক্ষে ২০ হাজার ঘনফুট নুরী ও ভুতু পাথর উত্তোলন হচ্ছে। এছাড়াও যাদুকাটা নদীর নির্দিষ্ট জায়গা ছড়া পুরো নদী থেকেই বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, চলতি বছর সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সেলিমের মালিকানাধীন মোসার্স নিলম ট্রেডিং ও আজাদের মালিকানাধীন মেসার্স আজাদ এন্টারপ্রাইজ বালু মহালটি গত বছরের চেয়ে ৩গুণ বেশী প্রায় ৩৩ কোটি টাকা দিয়ে ইজারা গ্রহণ করেছে।
আর যাদুকাটা নদী নিয়ন্ত্রণ করতে ইজারাদার সেলিম গড়ে তুলেছেন ৫৫ জনের লাঠিয়াল বাহিনী। এ বাহিনী নদীতে ছোট নৌকা ও স্পিড বোট দিয়ে নিয়মিত মহড়া দেয়। এসব লোকজনের অধিকাংশই এলাকার দাগী অপরাধী। আর এই শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মূলে সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ী জিয়াউল হক। সাথে রয়েছে তাহিরপুর উপজেলায় ৫নং বাদাঘাট ইউনিয়নের মোদেরগাঁও গ্রামের সেলিম আহমদ ও বালিজুরী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন। এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী একাধিকবার নদীতে নৌ ধর্মঘট, মানববন্ধন ও থানায় লিখিত অভিযোগ হলেও কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।