ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের নান্দাইলে প্রতিবন্ধী, বিধবা ও বয়স্ক ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মকবুল হোসেন নামে এক বিকাশ এজেন্টের বিরুদ্ধে। এসবের প্রতিবাদ করায় আব্দুস সালাম নামে এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মারধর করার পাশাপাশি দেয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকী। মামলা করেও নিরাপত্তা হীনতায় ভুুগছেন প্রতিবন্ধী ও তার পরিবার। এসব ঘটনায় সোচ্চার এলাকাবাসি মকবুলের বিচার দাবি করছেন।
প্রতিবন্ধী আব্দুস সালাম বলেন, সাত বছর বয়সে ডান পা অপারেশন করাতে গিয়ে পঙ্গু হন। কুড়িয়ে কুড়িয়ে চলাফেরা করতে হয় তাকে। ভারী কাজ খুব একটা তিনি করতে পারেন না। ছোট বেলা থেকেই মানুষের সহযোগিতা নিয়ে তাকে চলতে হচ্ছে। পাঁচজনের সংসারে দুই ছেলে ঢাকায় অটোরিকশা চালক। মেয়ের মেয়ের বিয়ে হওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি বাড়িতেই থাকেন। সরকারী ভাতা ও মানুষের সহযোগিতায় চলে তার সংসার।
রোজা ঈদের দুই দিন আগে সিংরইল বাজারে মকবুল হোসেনের বিকাশের দোকানে ভাতার টাকা তুলতে গেলে মোবাইল নিয়ে মকবুল পিন নাম্বার চেপে সাড়ে ৪ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সে তখন বলে ভাতার টাকা মোবাইলে আসে নাই। পরে মোবাইল নিয়ে সমাজসেবা অফিসে গেলে তারা বলে মোবাইল থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এ নিয়ে মকবুলের সাথে বাগবিতন্ডা হলে সে আমাকে লোকজনের সামনে মারধর করে। পরে থানায় গিয়ে মামলা করি। এখন মকবুলের পরিবার মামলা তুলে নিতে নানা ভাবে হুমকী দিচ্ছে।
প্রতিবন্ধী আব্দুস সালামের স্ত্রী লাকী আক্তার বলেন, ঈদের আগে মকবুল প্রতারণা করে মোবাইল থেকে টাকা তুলে নেয়। পরে ঘটনাটি পুলিশ জানালে মকবুলকে থানায় ডাকা হয়। পুলিশ মকবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিলে সে বাড়িতে এসে ঘটনার পরদিন সকালে আমার স্বামী বাজারে যাওয়ার পথে তাদের বাড়ির সামনে রাস্তায় ফেলে মারধর করে। আমরা আমাদের উপর অন্যায় অত্যাচারের বিচার চাই।
সিংরইল গ্রামের আবু তাহের বলেন, তার নাতী আব্দুল আহাদ মুন্না বাকপ্রতিবন্ধী। তার ভাতা নিয়েও মকবুলের সাথে দ্বন্দ্ব হয়। মোবাইল থেকে টাকা উত্তোলন করে সে আত্মসাত করার চেষ্টা করে। পরে মকবুলকে ভয়ভীতি দেখানো হলে ১৫ দিন পরে টাকা ফেরত হয়।
কৃষ্ণপুর গ্রামের হামিদা খাতুন বলেন, ১৪ মে মকবুলের দোকানে বিধবা ভাতা তুলতে গেলে সে মোবাইল নিয়ে তার ভাগিনার নাম্বারে টাকা পাঠিয়ে দেয়। সে মোবাইল ফেরত দিয়ে বলে টাকা এখনও আসেনি। পরে অফিসে যোগাযোগ করে জানাযায় টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। লোকজন দিয়ে মকবুলকে চাপ প্রয়োগ করলে কিছু টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়। সে এলাকার অনেকের সাথে প্রতারনা করছে। তার উপযুক্ত বিচার হওয়া দরকার।
সিংরইল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বলেন, প্রতিবন্ধী আব্দুুুস সালামের টাকা আত্মসাত করে, তাকে মারধর করাটা কোন ভাবেই ঠিক হয়নি। এমন ঘটনার বিচার না হলে অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরো বলেন, মকবুল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরী করার পাশাপাশি বিকাশের দোকান ও ফার্মেসী চালাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ এই এলাকার সমস্ত লেনদেন মকবুলের দোকান থেকে করতে হয়। এর ব্যর্থয় ঘটলে তাদের উপর চলে নানা অত্যাচার।
টাকা আত্মসাত ও মারধরের ঘটনায় জড়িত মকবুলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে মকবুলের বাবা ফালান মিয়া বলেন, আব্দুস সালাম তাদের আত্মীয় হয়। একই এলাকার বাসিন্দা। তার সাথে মকবুলের ভুল বুঝাবুঝির এক পর্যায়ে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তবে সালামের সাথে মকবুলের এমন আচারণ করা ঠিক হয়নি দাবি করে বিষয়টি সমাধানের প্রস্তাব করেন।
নান্দাইল থানার ওসি (তদন্ত) সজীব রহমান বলেন, মারধরের অভিযোগ এনে প্রতিবন্ধী আব্দুস সালাম বিকাশের এজেন্ট মকবুল হোসেনসহ দুইজনের বিরুদ্ধে ঘটনার পরদিন ২ জুন থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামী ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে অচিরেই মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মঙ্গলবার, মে ৩০
সংবাদ শিরোনাম
- পঞ্চমবারের মতো আইপিএল জিতলো চেন্নাই সুপার কিংস
- ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ জুন
- যুক্তরাষ্ট্রে পৃথক বন্দুক হামলায় নিহত ১৬
- তাপপ্রবাহ আরও বাড়তে পারে
- বিএনপি নেতা আমান-টুকুর সাজা বহাল
- সৌদি পৌঁছেছেন ৩৩ হাজার ৭৩৫ হজযাত্রী
- মাগুরায় জুয়া খেলায় আটক ৭
- আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপন করল রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ