খেলাফত হোসেন খসরু, পিরোজপুর
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার পশ্চিম চরনী পত্তাশী গ্রামে বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের দিয়ে চলে যাওয়া ৮০০ মিটার দীর্ঘ রাস্তাটি টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে খুড়ে রাখা হয়েছে। এরপর রাস্তা নির্মান কাজের মেয়াদ উত্তীর্ণের ৬ মাস পার হলেও, এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি কাজ। ফলে খননকৃত রাস্তা পরিনত হয়েছে খালে। আর এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই রাস্তাটি ব্যবহারকারী কয়েক হাজার মানুষ। আর এ রাস্তাটি নির্মানের দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। ইন্দুরকানী উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১০ জুন ওই রাস্তাটির নির্মান কাজ শুরু হয়ে ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৭/৮ মাসে রাস্তাটির মাটি খুড়ে সেভাবেই ফেলে রাখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এরপর আর কোন কাজ হয়নি। ফলে বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি পরিণত হয়েছে খালে। এতে করে প্রতিদিন রাস্তাটিতে চলাচলে কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে । স্থানীয় হাবিবুর রহমান জানান, উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়ননের কয়েকটি গ্রামের মানুষ ছাড়াও পার্শবর্তী বাগেরহাট জেলার মোড়েলঞ্জ উপজেলার মানুষও ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। শুকনো মৌসুমে রাস্তাটি ব্যবহার করতে তেমন একটা সমস্যা না হলেও, বর্তমানে বর্ষার সময় এ রাস্তাটি ব্যবহারের কোন উপায় নাই। ফলে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। হাবিবুর রহমান আরও জানান, মূলত পত্তাশী বাজার এবং বাগোলের হাটে যাওয়ার জন্যই রাস্তাটি বেশি বেশি মানুষ এটি ব্যবহার করেন। রাস্তাটির বেহাল অবস্থা সম্পর্কে ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম মতিউর রহমানও অবগত আছেন। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন সভায় আলোচনা করা হয়েছে। তবে এর কোন পরিবর্তন হয়নি। এ বিষয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা প্রকৌশলী লায়লা মিঠুন জানান, রাস্তার কাজ করার জন্য এর দুই পাশে রোপনকৃত সামাজিক বন বিভাগের গাছগুলো অবসারণ করা প্রয়োজন। এজন্য সামাজিক বন বিভাগের বাগেরহাট বিভাগীয় কার্যালয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত তারা গাছগুলো অপসারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। গাছগুলো অপসারণ করার পরই রাস্তার কাজ করা সম্ভব বলে জানান তিনি। তবে একই সাথে শুরু হওয়া উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে অন্য আরেকটি রাস্তার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলেও জানান তিনি। রাস্তাটির নির্মান কাজের দায়িত্বে থাকা মেসার্স তাহাসিন এন্টারপ্রাইজ এর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাস্তা থেকে গাছগুলো অবসারণের জন্য বন বিভাগ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাছে ঘুষ দাবি করেছিল। আর ঠিকাদার তা প্রদান না করায়, লিখিতভাবে জানানোর ৮ মাসেও কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি বন বিভাগ। নির্দেশনা পাওয়ার পর রাস্তার দুই পাশের ১৭১ টি গাছের টেন্ডার দেওয়ার জন্য সকল কাগজপত্র তৈরি করে বাগেরহাট বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন বলে জানান পিরোজপুর সামাজিক বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার শফিকুল ইসলাম। তবে পরবর্তী ব্যবস্থা বিভাগীয় কার্যালয় গ্রহন করবে বলে জানান তিনি।