এইচ এম জালাল আহমেদ
কয়েকদিন যাবৎ রাজধানী ঢাকায় সরকারের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনার ঝড় বইছে। আলোচনার মুল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে অটো বা ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে সরকারের এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিএমপি কার্যক্রম শুরুও করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি কয়েকদিন পূর্বে বিষয়টি সাংবাদিদের প্রশ্নের জবাবে নিশ্চিত করেছেন। তিনি পরিস্কার বলে দিয়েছেন আলোচিত রিকশা রাজধানীতে চলতে পারবে না। এগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রাজপথ থেকে এসব রিকশা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে বিকল্প কোন উদ্যোগ না নিয়ে হঠাৎ করে বন্ধের সিদ্ধান্তটা যৌক্তিক কিনা তা বিবেচ্য। কারন হঠাৎ করে এ রিকশাগুলো বন্ধ করে দিলে এ সম্পদটির অর্থ ক্ষতির পরিমান পরিমাপযোগ্য। রাজধানীতে কয়েক লাখ অটো বা ব্যাটারিত চালিত রিকশা রয়েছে। রিকশার দ্বিগুণের বেশী চালক রয়েছেন। তাদের পরিবার পরিচন রয়েছে । রয়েছে গ্রেজ মালিক কর্মচারি রয়েছেন। তাছাড়াও বিভিন্ন কাজে মিলে আরো অনেক মানুষ জড়িয়ে রয়েছে আলোচিত রিকশার সাথে। এ সব মিলিয়ে জনবহুল একটি পেশাকে হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়া হলে তা কতটা মঙ্গলজন এবং বাস্তবায়নযোগ্য তাও বিবেচনার বিষয় রয়েছে।
আলোচনার বিষয়বস্তু সরকারের সিদ্ধান্তে বিরোধীতা করার জন্য নয়। বলতে চাইনা যে সরকারের সিদ্ধান্তটা সঠিক হয়নি। কিন্তু এ কথাটা না বলার নয়। দেশের বা রাজধানীর বিদ্যমান পরিস্থিতি এবং অবস্থানের মধ্যে এ ধরনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবার পূর্বে অনেকগুলো বিষয় বিবেচ্য। সে বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হয়েছে কিনা এবং রিকশা বন্ধ করা হলে বিকল্প কোন পদক্ষেপ সংশ্লিষ্টদের জন্য নেয়া হয়েছে কিনা। এখানে আলোচনাটা রিকশা চালকদের পক্ষে ছাপাই গাইবার জন্য নয় বাস্তবতা তুলে ধরা হচ্ছে মাত্র। বিষয়টির ওপর রাষ্ট্র বা কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিবে কি দিবে না তা তাদের একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। তবে অবশ্যই গুরুত্ব দেবার বিষয় বলে আলোচকদের কাছে বিবেচ্য বলেই এখানে আলোচনা। বিষয়টি ওরকম নয়, যেরকম সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে অনুরূপ নেয়াটা বোধ হয় যৌক্তিক কোন যুক্তি নেই। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অবশ্যই তা বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। তবে বাস্তবায়ন কতটা যৌক্তিক তা বিবেচ্য বিষয়। রাজধানীতে কতগুলো ব্যাটারিচালিত রিকশা রয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান আমার কাছে নেই। কেউ বলতে পারবেন বলে তাও আমার জানা নেই। ঢাকার দু’সিটি করপোরেশন থেকে প্রকৃত পরিসংখ্যান দিতে পারবে বলেও মনে করার কোন সুযোগ নেই। কারন এগুলো অপরিকল্পিত এবং নতুনভাবে রাজপথে বেরিয়েছে।
জানামতে আলোচিত রিকশা বন্ধের ওপর হাইকোট থেকেও একটা নির্দেশনা রয়েছে। হাইকোন স্থায়ী কোন আদেশ দিয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। অবশ্যই আদালতের সিদ্ধান্ত আইনি ও যথার্থ। অপরদিকে সরকার কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন কতটা করতে পারবে তা বোধ হয় বিবেচ্য বিষয়। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রাষ্ট্র ও সবাই মানতে বাধ্য। কিন্তু ব্যাটারিচালিত রিকশার বিষয়টি ভিন্নভাবে বিবেচ্য বিষয় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। কারন লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান এ রিকশাগুলো। শুধু তাই নয় রাজধানীর যেসব এলাকায় এ সব রিকশা চলাচল করে সেসব এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার বিকল্প কোন বাহন সেখানে চলাচল করতে পারে বলে জানা নেই। দেশের উন্নয়নের মহাসড়কের কাজ ধীরগতিতে চলার করনে প্রয়োজনীয় উন্নয় ঘটেনি। এটাই বাস্তব ও সত্য। অনেক রাস্তা স্বাভাবিক চলাচলের সম্পূর্ণ উপযোগীহীন হয়ে রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। সে সব সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিকল্প সাধারণ মানুষের চলাচরের জন্য নেই। শুধু তাই নয় এ রিকশায় চলাচল যারা করেন তাদের বেশীরভাগই রিকাশা চলাচলের বিপক্ষে যাবেন কিনা তাও বিবেচ্য বিষয়।
আলোচনায় সেবিষয়টি বলতে চাইনা যে রিকশা চালকরা সরকারে সিদ্ধানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনে গেলে তাদের পক্ষে কারা দাঁড়াতে পারেন। তবে সে কথাও উড়িয়ে দেবার বিষয় নয়, রিকশা চালকরা কোন কর্মসূচি দিলে তাতে ভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নিতে পারেন। তারা অংশ নেক বা না নেক তা আলোচ্য বিষয় নয়। আলোচনার বিষয় হচ্ছে ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধ করা হলে তৈরিকৃত রিকশাগুলো একটা সম্পদ। শুধু তাই নয় এগুলো অর্থকরী সম্পদ। তাই বলাহচ্ছে এ রিকশাগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ণ হলে এ ব্যাপক অর্থের সম্পদটির পরিনতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? এ সম্পদের আর্থিক ক্ষতির পরিমান কতটায় গিয়ে দাঁড়াবে তা অবশ্যই বিবেচ্য বিষয়। চালক ও এ সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র বিকল্প কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা বিবেচ্য বিষয়। জানা নেই সরকার এ বিষয়ে কোন বিকল্প ব্যবস্থা নিয়েছে। যদি নিয়ে থাকে তাহলে তো ভাল। না নিয়ে থাকলে বিষয়টি অবশ্যই ভাববার বিষয়। এতজনগোষ্টির একটি প্রজেক্ট বন্ধ করতে হলে বিকল্প কোন ব্যবস্থা না রাখা হলে তারা বিছিন্ন কোন পদক্ষেপ নিতেই পারে। নিলে তা রাষ্ট্রের জন্য একটা বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারন চালকরা যদি কোন পদক্ষেপ নেয় তাতে কেউ বা কোন মহল উৎস যোগাতেই পারে। এ বিষয়টির ওপর নজর দেয়া প্রয়োজন এবং রাষ্ট্র নজর রাখবে বলে ধারনা করছেন সচেতন মহল। এ কারনেই বলা হয়েছে, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ হলে সম্পদ ক্ষতি পরিমাপযোগ্য।
শুক্রবার, জুন ২
সংবাদ শিরোনাম
- চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ
- লালমনিরহাটে ‘জিনের বাদশা’ পরিচয়ে ৫লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার ২
- পাইকগাছায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা না মেনে মৎস্য ঘেরে দখল চেষ্টা
- কক্সবাজারে ইয়াবাসহ গ্রেফতার ২
- খাগড়াছড়িতে কাভার্ডভ্যান চাপায় নিহত ১
- রূপগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হোটেল বাবুর্চি বিল্লাল হাওলাদারের মৃত্যু
- আইএমএফের পরামর্শ মেনে বাজেট করেনি সরকার: অর্থমন্ত্রী
- পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় লিফট কিনতে ৬ জনের তুরস্কে যাওয়া স্থগিত