এইচ এম জালাল আহমেদ
পূর্বের আলোচানার শেষাংশে বলা হয়েছে, যাই হোক আরো কিছু বিষয় রয়েছে সে বিষয়টি ডিএমপি কমিশনার একা নন, যারা পুলিশ বাহিনী তথা ডিএমপি নিয়ন্ত্রণ করেন তাদের সবার জানা প্রয়োজন। কারন এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার একা উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করতে পারবেন বলে মনে হয় না। তার একার সিদ্ধান্তে ডিএমপি নিয়ন্ত্রণ হতো, তা হলে বোধ হয় আজ এ আলোচনা না করে তাকে প্রশংসা করে ভিন্ন আলোচনা করা সম্ভব হতো। ডিএমপির বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করলে হয়ত অনেকেই নানা ভাবনায় ভাববেন এবং কথা বলবেন। তেমনটি পূর্বেও আলোচিত সমালোচিত হয়েছে। তেমনটি এখন হলেও দোষের কিছু নয়। তবে বিশ্বাস করতে এবং মানতে হবে বাস্তবতা। না মানার কোন কারন নেই। ঢাকঢোল না পিটিয়ে সাধারণ ও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অনুসন্ধান করলে পুলিশ বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা মন্ত্রী ও দেশের বিশিষ্ট কতিপয় ব্যক্তিদের ভাবমূর্তি কতটা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে তা জানলেই বুঝতে পারবে। জানতে পারবে কিভাবে কোন কর্মকর্তা মন্ত্রীর কে দেহরক্ষী ও কে কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির ভাগিনা। কে কার ভাই পরিচয়ে নিজে প্রভাবশালীতে পরিনত করে প্রভাবিত হচ্ছেন। আরো জানতে পারবে কারা ক্ষমতাসিন দলের কতিপয় নেতাবনের ব্যক্তিদের সাথে মিলে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার কতিপয় ব্যক্তিকে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে কি করছে। আশা করি পদস্থ কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিবে আলোচিত বিষয়টি নিশ্চিত হবে নিজেদের ভাবমূর্তি রাক্ষার স্বার্থে।
আবারো বলা হচ্ছে, দৈনিক আমাদের কণ্ঠ পত্রিকার চলমান এ আলোচনাটি কোনভাবেই সমালোচনা হিসেবে বিবেচ্য নয়। শুধুমাত্র কোথায় কি হচ্ছে কেন আজ অধিক শ্রম ও মানবসেবার পর পুলিশ বাহিনী গর্বিত অবস্থান থেকেও নন্দিত হতে পারছে না। তার বাস্তবচিত্র তুলে ধরার জন্য আলোচনাটি। বিশ্বাস করি তাদের এ নোংরামি ডিএমপি কমিশনার জানেন না। তার জানা তো দুরের কথা কল্পনাও করতে পারবেন বলে মনে হয় না। তিনি এসব নোংরামি কখনোই কল্পনা করতে পারেন বলে মনে হয় না। যে কথাগুলো দিয়ে আলোচনা শুরু করা হয়েছে তা হচ্ছে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের দেহরক্ষী, ভাগিনা ও ভাই হিসেবে কনস্টেবল থাকতে দায়িত্ব পালন করেছেন। যারা এ দায়িত্ব পালন করেছেন এবং করছেন তারা সে সব কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের মতোই কর্মকর্তাদের কাছে আচরন পেয়েছেন এবং পাচ্ছেন। পাওয়াটাই স্বাভাবিক। এ সুযোগে পারিবারিকভাবে একটা সামাজিক কারনেই তৈরি হতেই পারে। হলে তা দোষের বলে মনে মনে করার কোন কারন নেই। কিন্তু কতিপয় স্বার্থলোভিরা এটাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নিজের আখের গোচানোর কাজে লিপ্ত থাকেন এবং নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে থাকে ও করছে। তারা যদি প্রভাব বিস্তার নাইবা করে তাহলে কারো তো জানার সুযোগ নেই কে কার কোন সময় দেহরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আলোচনাটি ওখানে যেখানে উল্লেখিত পরিচয়ে কোন কর্মকর্তা কার পরিচয়ে কি করছে। এ কথাগুলো বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা বা সদস্যের দায়িত্বরত স্থানে জানলেই পরিস্কার হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। জানা না জানা তা ডিএমপি কমিশনারের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে বিষয়টি সহজভাবে নেয়া হলে পদস্থ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ও নানা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিজস্ব ভাবমূর্তি সাধারণ মানুষের কাছে সংকট সৃষ্টি করতে পারে। এভাবে কয়েকজন প্রভাবশালী হিসেবে ডিএমপিতে ইতিমধ্যেই পরিচিতি লাভ করেছে। তারাই হচ্ছেন বাঁশের চেয়ে কঞ্চি মোটা। তারা কতটা কঞ্চি মোটা তা ডিএমপি কমিশনার জেনে নিলে নিতেই পারেন। বিগত প্রায় এক বছরের অনুসন্ধ্যানে যতটুকু জানা গেছে তাতে ডিএমপির যাত্রাবাড়ি, ঝুরাইন, মিলব্যারাক, সদরঘাট, বংশাল, চকবাজার, ধানমন্ডি, শ্যামলি, তালতলা, দারুসসালাম, পল্লবী, খিলগাঁ, বাসাবো, শাহজাহানপুর, রামপুরা, বাড্ডা, বনানী, গুলশান, খিলখেত, এ্যারপোর্ট ও আজমপুর ফাড়ি ও পুলিশ বক্সের দায়িত্বরত উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই), সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) ও চিহ্নিত কনস্টেবল রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তো দুরের কথা। পিআই, সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) প্যাট্রোল, অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ও বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি)ও কিছু বলার ক্ষমতা রাখেন বলে মনে হয় না।
বিশেষ করে যারা দেহরক্ষী, বাগিনা ও ভাই হিসেবে উল্লেখিত পদের পরিচয় দেয়া পুলিশ কর্মকর্তা সদস্যরা যে শুধু পুলিশ বাহিনী পদস্থ কর্মকর্তাদের তা ঠিক নয়। নানা সময়য়ে কোন মন্ত্রী বা প্রভাবশালীদের দেহরক্ষী, ভাগিনা ও ভাই হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে তাদের নিজেদের পছন্দমত পুলিশ ইউনিট বা শাখায় ডিএমপিতে কর্মরত থেকে আলোচিত প্রভাব বিস্তার করে দীর্ঘদিন একই স্থানে কর্মরত থেকে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এগুলো জানার জন্য নতুন কোন প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে হবে তেমন নয়। খুব সহজভাবেই একই পরিচয়ে রাজধানীর সড়কের পথচারিদের রাস্তায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা হকার বসিয়ে কেমন করে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছে তা সেখানের সব ধরনের ব্যবসায়িদের থেকে প্রতকাশ্যেই জানা সম্ভব এবং প্রমাণে খুবই সহজ। এদের সংখ্যা বেশী একটা নেই। একই ভাবে থানা ফাড়িতে পুলিশ পরিদর্শক, উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) এবং সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই)সহ কনস্টেবল রয়েছেন। যাদের তালিকা খুব ছোট। তবে তাদের প্রভাব গোটা ডিএমপিতে ছড়িয়ে রয়েছে। যা ডিএমপি কমিশনারের জানা রয়েছে কিনা জানা নেই। তবে বিশ্বাস করতে চাই ডিএমপি কমিশনার যদি সার্বিক বিষয়টি তিনি জানতে পারতেন তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে অবশ্যই নৈতিকতার কারনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতেন।
বিশেষ করে ডিএমপির এ্যারপোর্ট বক্স, আজমপুর পুলিশ ফাড়ি, বনানী পুলিশ ফারি, দারুস সালাম পুলিশ ফারি, পল্লবী ফুলিশ ফাড়ি, বংশাল পুলিশ ফারি, সদরঘাট পুলিশ ফারি দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কতটা প্রভাবশালী একটু জেনে নিলেই জানা যাবে। এ ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে জানতে গেলে প্রকাশ পাবে তারা কিভাবে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করছেন। বিভিন্ন পরিচয়ের ব্যক্তিদের মাধ্যমে পদায়ন লাভ করে এ সিন্ডিকেট থানা ফারিতে পোষ্টিং লাভ করেছেন। তাদের আয়ের উৎসগুলো প্রকাশ পাবে জানার মাঝে। মহাগর জনপথে পথচারিরদের সড়ক দখল করে কত টাকার বিনিময় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যাদেরকে অনেকে হকার বলে থাকেন। এমনটি তারা নিজেরাও হকার হিসেবেই দাবি করেন এবং একটি শক্তিশালী সংগঠন রয়েছে। যাদেরকে ধাক্কা দিলেই ছিটকে ফেলানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা রীতি মত মোটা অংকের অর্থ বিনিয়োগ করে পথচারির সড়ক দখল করে ব্যবসা করছেন। এখানে যারা ব্যবসা করেন তাদের অধিকাংশ ব্যক্তিরাই গ্রামের বাড়ির সম্বল হারিয়ে অর্থ এনে ব্যবসা করছেন। কতিপয় সুদে টাকা এনে এ ব্যবসায় জড়িয়েছেন।
এখানে বলার বিষয় হচ্ছে, সাধারণ মানুষের চলার পথটি দখল করে যারা অর্থ বিনিয়োগ করে যারা ব্যবসা করছেন তাদের অর্থ যে শুধু পুলিশ নিচ্ছে তাও ঠিক নয়। নানা পেশা শ্রেণীর মানুষেরাও ভাগ পান। এমন কোন পেশার মানুষ নেই যে এ হকার থেকে অর্থ তুলে ভাগবাটোয়ারা নিচ্ছেন না। অপরদিকে সৎ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে যাদের পুলিশসহ সব মহলে পরিচিতি রয়েছে তাদের নামেও অর্থ তোলা হচ্ছে। এ টাকা দায়িত্ববানরা ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন, রাজধানীর উত্তরা এলাকার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আজমপুর পুলিশ ফারির নিয়ন্ত্রণাধীন ফুটপাতের দোকানের সংখ্যা ১৫ শতের বেশী। প্রত্যেক দোকান থেকে গড়ে ৫৫০ টাকা প্রতিদিন তোলে নির্ধারিত কতিয় ব্যক্তি, তাদেরকে হকারের ভাষায় নাকি লাইনম্যান বলা হয়। এদের তালিকা লম্বা হলেও প্রভাশালীদের মধ্যে কয়েক লাইনম্যানের নাম তুলে ধরা হল, দুলাল, আতাউর, সেলিম, রাসেল ও মাসুম। এ্যারপোর্ট এলাকার দোকানের সংখ্যা দু’স্থানে পাঁচ মতর মত হবে। সেখানে লাইনম্যান হিসেবে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে, উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাবলু, সাবেক লাইনম্যান মনিরের ছেলে মানিক, অন্তর, প্রলয়, আক্তার ও জালাল ওরফে পঙ্গু জালাল। অপরদিকে বিমানবন্দর রেলওয়ে পার্কিং এলাকায়র লাইম্যান হচ্ছে আক্তার হোসেন, আতিক ও সেলিম। যতটুকু জানা গেছে তাতে প্রকাশ পেয়েছে আজমপুর ফারির লাইনম্যানদের নেতৃত্ব দেন দুলাল ওরফে মোটা দুলাল, আতাউর, সেলিম ও রাসেল। তাদের প্রত্যেকের এলাকা বন্টন রয়েছে।
অপর দিকে বিমানবন্দর এলাকার হাজিক্যাম্প থেকে ঢাকা ময়মানসিংহ সড়ক পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে বাবলু। তার বিরুদ্ধে চলমান রয়েছে একটি মামলা। তার বিরুদ্ধে বর্তমান বক্স এর দায়িত্ববান পুলিশ কর্মকর্তাই অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। যদিও আলোচিত বাবলু বর্তমানে তার সাঙ্গদের নিয়ে জামিনে রয়েছে। এ বাবলুই হচ্ছে তার প্রধান লাইনম্যান। ঢাকা ময়মসিংহ সড়কে থেকে জসিম উদ্দিন ক্রোশিং হয়ে পশ্চিম দিকে সড়ক ও সিভিল এ্যাভিয়েশন সড়কের মাথায় সাফরা মসজিদ হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনের মসজিদ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করেন জালাল ওরফে পঙ্গু জালাল। এদের প্রভাবটি একটা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলছে। তাদের কাছে নিজ সম্মান বাচাতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিরব থাকতে বাধ্য হচ্ছে। তারাও বিষয়টি জানেন। কিন্তু কিছু বলতে পারবেন না। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কোন সিন্ডিকেট না থাকলেও ফারি বা বক্সের দায়িত্বে যারা থাকে এবং রয়েছে তাদের প্রভাবশালী একটি চক্রের সিন্ডিকেট রয়েছে। যার ফলে এ সিন্ডিকেটর পুলিশ কর্মকর্তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও সাহস পান না বলে খোদ পুলিশ মহলেই শোনা যায়। জানিনা এগুলো ডিএমপি কমিশনারের জানা রয়েছে কিনা। তাকে কেউ জানিয়েছেন কিনা তাও জানা যায়নি।
ডিএমপি কমিশনার যদি কাউকে পাঠিয়ে যে কোন দিন বিকেল চারটা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত অনুসন্ধ্যান চালান তাহলে যে বিষয়গুলো তুলে ধারা হয়েছে তার চেয়েও বেশী রহস্যজনক ও চাঞ্চল্যকর বিষয় জানতে পারবেন বলে সংশ্লিষ্টা মনে করেন। সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা কতটা নোংরামিতে নেমেছে তা না জানলে বিশ্বাস করানো কঠিন। সব কিছুই সরেজমিনে প্রকাশ্যেই জানা সম্ভব। কারন এদের সিন্ডিকেটটি এতশক্তিশালী যে তা প্রতিরোধ করা অসম্ভব। এ কারনেই বিকেল চারটা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত উল্লেখিত সড়ক দিয়ে ফুটপাত তো দুরের কথা মূলসড়ক দিয়ে গাড়ি তো দুরের কথা পায় হেটেও যাওযা যাবে কিনা তা সরেজমিনে গেলেই প্রমাণ মিলবে। সরেজমিন এবং ভিডিও করলে পরিস্কারভাবে বাস্তবটি দেখা সম্ভব। জানিনা ডিএমপি কমিশনার পরিবেশ ও উল্লেখিত ভাবমূর্তি রক্ষায় ব্যবস্থা নিবেন কিনা। এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার ও ইচ্ছে। পরবর্তী আলোচনায় এদের অপ্রকাশিত অংশ ও গুলশান বিভাগরে প্রভাবশালীদের সম্পর্কে যতটুকু জানা গেছে তা তুলে আলোচনায় স্থান দেবার চেষ্টা থাকবে দৈনিক আমাদের কণ্ঠ পত্রিকার।