এইচ এম জালাল আহমেদ
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি ঘটনা থেকে বেরিয়ে আসছে প্রতারক, মাদক ব্যবসায়ী ও নানা ধরনের অপরাধের সাথে পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ জড়িেেয় পড়ছেন। ইতিমধ্যে তেমন প্রমাণ প্রকাশ্যে মিলছে। অনুরূপ জড়িত কয়েক পুলিশ সদস্য ইতিমধ্যে গ্রেফতারও হয়েছেন। এসব ঘটনা চক্রে যেসব তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে তা অবশ্যই পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তির জন্য লজ্জাজনক। যদিও কোন সদস্যের ব্যক্তিগত কোন অপরাধের দায় গোটা পুলিশ বাহিনীর ওপর বতরানো যায় না এবং উচিৎ নয়। শুধুমাত্র পেশার পরিচয়ের কারনে পুলিশ শব্দটা ব্যবহার করা হয়। কারো অপরাধের জন্য কেউ দায়ি নয়। তবুও বাবা সন্তানের এবং সন্তান বাবার কোনো কর্মের সুনাম দুর্নামের দোলায় দোলে। ঠিক তেমনিভাবে পুলিশ বাহিনী যে কোন সদস্যের ব্যক্তিগত বিষয় আলোচিত হয় এবং হচ্ছে হবে। যাই হোক নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ বাহিনীর কতিপয় সদস্য ও কর্মকতার ব্যক্তিগত অপরাধের কারনে সমালোচনা আলোচনায় জড়িয়ে পড়ছে। দৈনিক আমাদের কণ্ঠ পত্রিকাটি এখানে যে আলোচনা করছে তা পুরোটাই পুলিশ বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা ও সদস্যের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে। উদাহরন হিসেবে রাজধানী ঢাকা বা ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)র কয়েকটি ঘটনা নিয়ে আলোচিত হচ্ছে।
আলোচনার ক্ষেত্রে পেছনের কিছু উদঘাটিত ঘটনা উদাহরন হিসেবে আলোচিত হওয়া উচিৎ এবং স্বাভাবিক কারনে। যেমনটি দেশের আলোচিত ও প্রতারক হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ সাহেদ। বর্তমানে একটি মামলায় বিশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলহাজতে রয়েছেন। অবশ্য তার বিরুদ্ধে অগনিত মামলা রয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায়। তারপরও তার মুক্তির জন্য আদালতে আইনিভাবে জামিনের লড়াই চলছে। কয়েকবার তার জামিনের আবেদন নাখোচ করেছে আদালত। তার জামিন হবে কি হবে না তা আইন আদালতের বিষয়। আদালতই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের স্থান। আলোচিত সাহেদের প্রতারনার ধরন ছিলি চিহ্নি কয়েকটি বিষয়। কিন্তু এখানে যে প্রতারকের কথা আলোচিত হবে তার পরিচিতি না থাকলেও প্রতারনার প্রভাব অনেক বেশী। সাহেদের সাথে রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তি কর্মকর্তাদের সাথে সম্পর্ক ছিল অবাধ। গণমাধ্যম বিচরন ছিল উল্লেখযোগ্য। নব্য প্রতারক শামীম বয়সে খুবই তরুণ। তবে তার প্রতারনার পরিধিটা অনেক লম্বা নিত্য নতুন। তিনি জালজালিয়তির মাধ্যমে প্রতারনা করেন বলে ডিএমপির বিভিন্ন থানার মামলার এজাহার দৃষ্টে পরিস্কারভাবে বলা যায়।
আলোচিত শামীম একজন পুলিশ মহলে মানে ঢাকা মহনগর (ডিএমপি) র থানা পুলিশে এখন অনেকটা পরিচিত মুখ। তিনি নানা জালজালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারনা করে কয়েকটি মামলায় জড়িয়ে পড়ছেন। শামীম একজন প্রতারনার খুব সাহসী মুখ। সাহেদের মত গণমাধ্যমমুখি না হলেও পুলিশ ও প্রতারনামুখি। কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন প্রতারনার মাধ্যমে। তার সহকর্মী বা সহযোগী বা তাকে সামনে এগুনোর প্রভাব সৃষ্টির পেছনে বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা রয়েছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য জড়িত থাকার পরোক্ষভাবে না উঠে এসেছে। তাদের সাথে শামীমের সম্পর্ক ব্যবসায়ীক নয় আর্থিক। যারা তাকে এ কারনে সহায়তা করে থাকেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে পরিচিত লাভ করছেন ডিএমপির যাত্রাবাড়ি থানার এক পুলিশ পরিদর্শক ও জগণœাথ বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষক পরিচিয়ের এক ব্যক্তি। আলোচিত শামীমের রয়েছে একাধিক প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানী। যদিও তার সে সব প্রতিষ্ঠান কোম্পনীর কোন বৈধতার প্রমাণ মেলেনি। প্রমাণ উপাস্থাপন করতে পারবেন বলেও মনে করার কিছু নেই। এসব কোম্পাণীর নামে নানা কার্যাদেশ দেখিয়ে নানা ব্যক্তির থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিনিয়োগের নামে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) র কয়েকটি থানায় দায়েরকৃত মামলার আনিত বিষয় আলোচনা করলে বোঝা যায় শামীম রাজধানীর নানা ব্যক্তির থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন নানা কাজের কার্যাদেশ দেখিয়ে। যেগুলো বিনিয়োগকারীদের দেখিয়েছেন সেগুলো পুরোটাই ভূয়া। সব কার্যাদেশ তার তৈরি এবং স্বাক্ষরিত। এ শামীম এমন কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠিানের মালিক বা কোন ব্যক্তির স্বাক্ষর জাল করতে পারেনা সেরকম রেকট তার প্রতারানার স্বল্প সময়ে নেই। প্রতারনার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বসুন্ধারাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট প্লোট এর মালিক বনে গেছেন। রাজধানীর বসুন্ধারায় কয়েক কোটি টাকার ফ্ল্যাট খালি রেখেছেন। সেখানে দামি বিলাশবহুল আসবাবপত্র রেখেছেন ভাড়া দেয়না এবং ভাড়া দেয়ার প্রয়োজনও নেই তার। কারন বিনোদন বসিয়ে বা চালিয়ে যে অর্থ আসে তা ভাড়ার প্রাপ্তির চেয়ে কয়েকশ’গুণে বেশী। তার নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েক যুবতী ও নারী রয়েছেন যেখানে যাকে প্রয়োজন সেখানে তাকে দিয়ে তার প্রয়োজনীয়টা মিটিয়ে নেন। তিনি তাদের দিয়ে নানা বিনিয়োগকারীকে নানা ফাদে ফেলে ভিন্ন পদ্ধতিতে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। তার কাছে কেউ বিনিয়োগের অর্থ ফেরৎ চাইলে জীবন নাশসহ নানা হুমকি দিচ্ছেন। শুধু তাই নয় তার কথার অবাধ্য হনে নারীদের দিয়ে তার পাতানো ফাদের ছবি ব্যবহার করে আইনের আওতায় ফেলে পুলিশ দিয়ে হরানি করে আসছে।
তার সাথে চমৎকার জুটি মিলছে ডিএমপির এক থানার পুলিশ পরিদর্শক অপারেশনসহ কয়েক কর্মকর্তার সাথে। তাদের সাথে যুক্ত রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষক পরিচয়েল এক ব্যক্তি। তার সহয়তার প্রতারনায় ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একটি কক্ষ। এ কক্ষ দেখিয়ে বা ব্যবহার করে প্রতরিনরি পথটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরকে আস্থায় নিতে সক্ষম হয়েছে। এ প্রতারক সময় ও পথ চিনেন প্রতারনা করার। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ছবিযুক্ত টাই বানানোর কথা বলে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট দেখিয়েছে। এ কার্যাদেশ দেখিয়ে কয়েক শত কোটি টাকা বিনিয়োগকারীদের থেকে নিয়েছে। সব চেয়ে মজার বা অবাক হবার বিষয় হচ্ছে, এ সব কাজে যারা বিনিয়োগ করছেন তাদের পেছনে তার রক্ষিত নারী ও যুবতিদের কেউকে জড়িয়ে দেয়। তাদের সাথে তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ছবি তুলে রেখেছে। যখন বিনিয়োগকারীরা তাদের পাওনা টাকা দাবি করে তখন সে সব ছবি ভিডিও দেখিয়ে ভয় দেখায় এবং মামলায় জড়িয়ে জেলখটাানোর হুমকি দেয়। যাদেরকে অনুরূপ কোন ছবিতে যুক্ত করতে পারেনি তাদেরকে পেশী শক্তি ব্যবহার করে প্রাণনাশসহ নানা ধরনের হুমকি প্রদান করছে।
আনিত অভিযোগের বিষয় নিয়ে কথিত প্রতারক শামীমের কথা বলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে এবং ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় নিয়মিত মামলা রয়েছে। ইতিমধ্যেই শামীম কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে ছিল। কয়েকমাস পূর্বে জামিনে মুক্তি পেয়ে বিনিয়োগ যারা করেছেন এবং বিভিন্ন মামলার বাদী হয়েছেন তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে ডিএমপির দু’টি থানা পৃথক দু’টি মামলা করেছে। মামলার অভিযোগে যে প্রমাণপত্র থানায় এজাহারের সাথে যুক্ত করেছে তার সবগুলোই ভূয়া এবং তার কর্তৃক তৈরিকৃত। তা অনেকটা পুলিশের তদন্তে প্রকাশ পাচ্ছে বলেই মামলায় যাকে জড়িয়েছে তার স্বাক্ষর পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তিনি জানিয়েছেন, তার কাছে তদন্তে মামলাটি মিথ্যা এবং বানোয়াট ও জালজালিয়াতির। এ বিষয়টি নিশ্চিত হতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যদি যাচাই বাছাই ও পরীক্ষায় যা প্রশাণ মিলবে সে অনুযায়ী মামলার পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ প্রতারকদের সাথে জড়িয়ে রয়েছেন কয়েকজন ডিএমপির পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার কয়েক ব্যক্তি। যাদের তালিকা ও ভিডিও পুলিশের হাতে রয়েছে। পরবর্তী আলোচনায় আরো কিছু বাস্তব ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করবে দৈনিক আমাদের কণ্ঠ পত্রিকা মন্তব্য এ প্রতিবেদনে। দৃষ্টি রাখুন সে আলোচনার দিকে।