ফুলবাড়ী, দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলীর তদারকির অভাবসহ দায়িত্বহীনতার কারণে রাস্তা পাকাকরণ কাজে ভেকু দিয়ে মাটি খনন করেই লাপাত্তা হয়ে গেছেন ঠিকাদার। এতে কাঁদামাটি ভরা সড়কে ভয়াবহ জনদুর্ভোগে বিপাকে পড়েছেন ওই রাস্তার দিয়ে চলাচলকারি চার গ্রামের ১২ জন প্রসূতিসহ বাসিন্দারা। কাজ শুরুর জন্য উপজেলা প্রকৌশলী ওই ঠিকাদারকে একাধিকবার তাগিদ পত্র দিলেও ঠিকাদার পাত্তাই দিচ্ছেন না ওইসব তাগিদপত্রকে। জানা যায়, ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার এলুয়ারি ইউনিয়নের লালদীঘি হাসিমপুর থেকে ইসমাইলপুর পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ পায় নীলফামারীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাফা এÐ সিনহা এন্টারপ্রাইজ। দুই মাস পূর্বে টিকাদার রাস্তাটির মাটি খনন (বক্স কাটিং) করেই লাগাত্তা হওয়ায় হয়ে গেছে ঠিকাদার। দু’মাস আগে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করায় বর্তমানে রাস্তাটি কাঁদামাটিতে মানুষের চলাচলের পুরোপুরি অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে করে ইউনিয়নের পাকাপান, দাসপাড়া জুজারপুর, পার্বতীপুর লালদীঘি ও গৌরীপাড়া এই চার গ্রামের বাসিন্দাসহ ১২ জন প্রসূতি চরম বিপাকে পড়েছেন। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ১৪ মার্চ সড়কটি নির্মাণ কাজের চুক্তি স্বাক্ষর করেন ঠিকাদার। যা ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু দীর্ঘদিনেও কাজ শুরু না করায় গত ১৬ মার্চ ঠিকাদারকে তাগিদপত্র দেওয়া হয়। পরে গত ১২ মে রাস্তাটিতে ভেকু লাগিয়ে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করে উধাও হয়ে গেছেন ওই ঠিকাদার। সর্বশেষ গত ২২ জুন আবারও একটি তাগিদ পত্র দেওয়া হলেও সেটিরও আমল দেননি ঠিাকাদার। দুর্ভোগে শিকার গ্রামবাসী ননী গোপাল রায়, মদন রায় ও জাকির হোসেন বলেন, ধান কাটাই মাড়াইয়ের সময়ে সড়কটি খনন করে ঠিকাদার। খনন করার প্রায় দুইমাস হলেও আর আসেনি ঠিকাদার। সড়কটিতে যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটেই চলাচল দুস্কর হয়ে ওঠেছে। বিকল্প সড়ক না থাকায় বাধ্য হয়ে কাঁদামাটি মেখেই স্কুল-কলেজে যেতে হচ্ছে গ্রামের শিক্ষার্থীদের। বেশি টাকা খরচ করে ধান-চালসহ কৃষিপণ্য বহন করতে হচ্ছে। এছাড়াও বিশেষ সমস্যায় পোহাতে হচ্ছে ১২জন প্রসূতিকে। তারা যেকোন সময় তাদের প্রসবের জন্য হাসপাতালে নিতে হতে পারে। কিন্তু সড়কের যে অবস্থা রিকশাভ্যানও জুটবে না। উপজেলা প্রকৌশলীর দায়িত্বহীনতার জন্যই এমন দুর্ভোগে পড়েছেন চার গ্রামবাসী। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মো. সম্রাটকে তার ০১৭১৩-৯৩৭৩৩০ মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। ফোনের রিং বাজলেও তিনি ফোনকল গ্রহণ করেননি। উপজেলা প্রকৌশলী এফএএম রায়হানুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বারংবার তাগিদ পত্র দেওয়ার পরও কাজ শুরু না করায় বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, জেনেছি ঠিকাদার নীলফামারীতে বড় প্রজেক্টের কাজ করছেন। তাই এই কাজে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করতে পারলে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পিপিআর ২০০৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
