রোকনুজ্জামান রুবেল,মিঠাপুকুর (রংপুর):
রংপুরের মিঠাপুকুরে এক ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জমির খাজনার অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানা দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম আল- আমিন মিয়া। তিনি উপজেলার জায়গীরহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। এ ঘটনায় রংপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন দুইজন ভুক্তভোগী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,জায়গীরহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির খাজনা দিতে যান কামরুজ্জামান। উক্ত জমির খাজনা বাবদ ভূমি উপ-সহকারি কর্মকতা মোট ৩৩,৭৫৯/- টাকা দাবি করেন। তারমধ্যে ২৬৫০০/- (ছাব্বিশ হাজার পাঁচশত) টাকা প্রদান করেন কামরুজ্জামান। তবে তাকে একটি রশিদে দেয়া হয় ১৫৬২/- (এক হাজার পাঁচশত বাষট্টি) টাকা। অপর আরেকটি রশিদে দেয়া হয় ১৮৭৯/- (এক হাজার আটশত ঊনআশি) টাকা। কিন্তু বাকি টাকার কথা বললে ভূমি উপ সহকারি কর্মকতা আল আমিন মিয়া বিষয়টি এড়িয়ে যান। এছাড়াও তাহিয়ারপুর গ্রামের মোকলেছুর রহমানের জমির খাজনা ৬০৮৩/- (ছয় হাজার তেরাশি) টাকা প্রদান করেন ওই কর্মকর্তা। রশিদে দেয়া হয় ১০৮৩/- (এক হাজার তেরাশি) টাকা। যা রশিদ মূলে দেখানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, জমির খারিজ, নামজারি, খাজনা প্রদান কিংবা রেকর্ড সংশোধন যে কাজই হোক না কেন, টাকা ছাড়া অফিসে কোনো ফাইল অগ্রসর হয় না। এখন এই ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিণত হয়েছে ঘুষ বাণিজ্যের কেন্দ্রে। যে কোনো ধরনের সেবা পেতে হলে ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আল- আমিন কে ঘুষ দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাঁর অফিসে রয়েছে দালাল চক্র। যারা নানা ধরনের সমস্যার কথা বলে সেবাগ্রহীতাদের ঘুষ দিতে বাধ্য করছে।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক কয়েকজন জানান,জায়গীরহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মৌখিকভাবে এক ধরনের খাজনা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রসিদে দেওয়া হয় অল্প টাকার চেক। এর বাইরে সব টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগী কামরুজ্জামান বলেন, জায়গীরহাট ইউনিয়ন অফিসে ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আল আমিন আমার কাছে জমির খাজনা বাবদ ৩৩,৭৫৯/- টাকা দাবি করেন। তারমধ্যে আমি ২৬৫০০/- (ছাব্বিশ হাজার পাঁচশত) টাকা প্রদান করি। কিন্তু আমার হাতে দুটি রশিদ ধরিয়ে দেন। একটি ১৫৬২ টাকার অপরটি ১৮৭৯ টাকা। তবে বাকি টাকার কথা বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
আরেক ভুক্তভোগী মোকলেছুর রহমান বলেন, জমির খাজনা দিতে গিয়ে ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আল আমিনকে ৬০৮৩ টাকা প্রদান করি। তিনি আমার হাতে একটি ১০৮৩ টাকার রশিদ ধরিয়ে দেন এবং বলেন আপনার খাজনা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকার রশিদের কথা বললে তিনি আর কিছুই বলেননি। তিনি আরো বলেন, এই ভূমি উপসহকারী কর্মকতা আসলেই দূর্নিতীর আখড়া। তিনি মানুষকে নয় ছয় বুঝিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু রসিদে দেওয়া হয় অল্প টাকার চেক।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আল আমিন মিয়া মুঠোফোনে জানান, এই অভিযোগ গুলো মিথ্যে। আমি এক টাকার ও দূর্নিতী করি নাই। মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজমুল হাসান বলেন, বিষয়টি আগে জানতাম না। এখনই অবগত হলাম। যেহেতু ডিসি স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। স্যার নির্দেশ দেওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। #
- দৈনিক আমাদের কণ্ঠ: দেশজুড়ে, প্রকাশিত সংবাদ, শীর্ষ সংবাদ, সংবাদ শিরোনাম, সারাদেশ