মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জে মাদকের নেশা করে পানিতে নেমে ৩ দিন নিখোঁজ থাকার পরে ধলেশ্বরী নদী হতে রিয়াম (১৭) ও আলমগীর হোসেন (১৮) নামের দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার (৬এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলার কাঠপট্টি লঞ্চঘাট ও নয়াগাঁও এলাকার ধলেশ্বরী নদী থেকে দুই তরুণের লাশ উদ্ধার করে। সকালে মুক্তারপুর নৌ পুলিশ নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশ দুটি উদ্ধার করে। কাঠপট্টির এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া তরুনের নাম রিয়াম হোসেন (১৭)। সে ভোলার চরটিটিয়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে। রিয়াম পরিবারের সাথে মিরকাদিম পৌরসভার মাস্তান বাজার এলাকায় ভাড়া থাকত। নয়াগাঁও থেকে উদ্ধার তরুনের নাম আলমগীর হোসেন(১৮)। আলমগীর মুন্সীগঞ্জ সদরের গোসাইবাগ এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে কাঠপট্টি ঘাট এলাকায় একটি লাশ ভাসছিল পরে সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে রিয়ামের লাশ উদ্ধার করা হয়। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার নয়াগাঁও এলাকা থেকে আলমগীর হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করি। লাশের গায়ে আঘাতের কোন চিহ্ন নেই। মানুষের মুখে শুনেছি, তারা নেশাজাতীয় দ্রব্য খেয়ে পানিতে নেমেছিল। পাঁচজন একসাথে পানিতে নেমেছিল। এর মধ্যে তিনজন উঠতে পারলেও নিহত দুইজন নিখোঁজ ছিল। লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিয়ামের ভাই মো. হাসান অভিযোগ করে জানান, গত সোমবার দুপুর ২টায় রুবেল (২৪), রনি (২৩), পারভেজ (২২), রিয়াম (১৭) তারা বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় আলমগিরকে (১৮)। তারপর বিকালে রুবেল ও পারভেজ এসে বলছে ফোন ও নগদ ৭০০ টাকা নিয়ে পালিয়েছে আলমগির। এরপর খোঁজখবর করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার রাতে ৮-১০ জন মানুষ এসে আলমগীরের খোঁজ করে। কেনো খোঁজ করা হচ্ছে জানতে চাইলে তারা বলেন, পরে জানতে পারবেন। আজকে সকালে ভাইয়ের লাশ পেয়েছি। গলায় শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের মধ্যে কোন দন্দের জের ধরেই এ হত্যাকান্ড হয়েছে বলে দাবি তার। নিহত আলমগীরের মামা মোহাম্মদ হোসেন বলেন,আমার একটাই ভাগিনা। আমার বোনের আর কোন ছেলে মেয়ে নেই। সোমবার ভাগিনাকে ওর বন্ধুরা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কমলাঘাট এলাকায় নেশা-পানি করেছে। এরপর আমার ভাগিনাকে পানিতে ফেলে মেরে ফেলেছে। অপুর্বর সাথে আলমগীরের এর আগে ঝগড়া হয়েছিল। তখন ভাগিনাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। রনি ও রুবেলকে ধরে পুলিশে দিয়েছি। তারা পুলিশের কাছে অস্বীকার করেছে। আমরা আমার ভাগিনা হত্যার বিচার চাই। এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুবকর সিদ্দিক জানান, ঘটনাটি জানতে পেরে মঙ্গলবার দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এ দু’জন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। প্রকৃত ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।