এইচ এম জালাল আহমেদ
রাজনৈতিক কোন বিষয় নিয়ে স্থীর পরিবেশ ছাড়া লিখব না। স্বাভাবিক রাজনীতি বিদ্যমান নয়। রয়েছে রেশারেশি প্রতিহিংসা। কেউ যেন কারো ছায়া দেখতে পারে না। কথা বার্তা যেন শত্রæতার দৃষ্টি ভঙ্গিতে। রাজপথে কোন কর্মসুচি নেই। শুধু মিডিয়ায় গলাবাজির রাজনীতি চলছে। তাদের কথার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। বিদ্যমান পরিস্থিতি পরিস্কার করে দিয়েছে রাজনীতির নামে চলছে হরিলুট, দর্নীতি ও নানা অপরাধ এবং কর্তৃত্ববাদ। দেশে মাদক নিয়ে চলছে একধরনের তামাশা। উদ্ধার প্রতিরোধ যেন একটা নাটকের দৃশ্য। মাদক এখন ধ্বংস ও ভয়ঙ্কর। কারো সংসার তুছনাছ কারো হচ্ছে বানিজ্য। ক্ষমতার আড়ালে মাদক ব্যবসা চলছে অবাধে। এ বিষয়টি বারবার প্রমাণ হচ্ছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব এর বিশেষ অভিযানে। হাতে নাতে গ্রেফতার হচ্ছে রাজনৈতিক ও নানা পেশা শ্রেণীর মাদক বহনকারী ও ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা নিয়ে জেলে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু কয়েকদিন পরই তাদেরকে আবার দেখা যায় পেশায় বা যেকোন সংগঠনিক সভায় বিশেষ স্থানে। বিষয়টি অমন হয়ে দাঁড়িয়েছে এ যেন শ্বশুর বাড়ি আসা যাওয়া করছে। হয়ত সব শেষ মাদক ও অবৈধ জিনিসপত্রসহ গ্রেফতার হওয়া আওয়ামীলীগ নেত্রীও আবার সরব হয়ে রাজপথে থাকবেন। তিনিও সমাজকে শেখাতে কোথাও সভাসমাবেশ করবেন। তার গ্রেফতারে যেমন গণমাধ্যমকর্মীরা ক্যামেরা নিয়ে হুমরি খেয়ে পড়ছেন ছবি নেবার জন্য। ঠিক একই ভাবে তখনও পড়বেন। তার কাছে অর্থ সম্পর্ক রয়েছে তাদেরকে যেতে বাধ্য করতে পারবে। অবশ্য তারা রাজনীতি পরিচয়ে নোংরামিতে মেতে ওঠছে।
মাদক ও নানা অবৈধ জিনিসপত্র নিয়ে গত ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে রাজধনীর গুলশান বাসা থেকে র্যাবের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেত্রী হেলেন জাহাঙ্গীর। তারা একটা টিভি চ্যানেলও রয়েছে। সেখানেও অভিযান চালিয়েছে র্যাব। তার এ টিভি চ্যানেলের কোন বৈধ কাগজপত্র তাদেরকে দেখাতে পারেনি হেলেন জাহাঙ্গীর। গ্রেফতারের পর তার এক মেয়ে গণমাধ্যমকে বলেছে তাদের বাসায় মদ ও মাদক রাখার অনুমোদন রয়েছে। বিষয়টি একটু কেমন কেমন মনে হচ্ছে। আজকাল কি মাদক মদ বাসায় রাখারও অনুমোদন পাওয়া যায়? যদি তা নাইবা হয় তাহলে হেলেন জাহাঙ্গীর এর মেয়ে গণমাধ্যমকে জানালো কি করে? তবে বিশ্লেষকদের কাছে কেমন যেন অযৌক্তিক মনে হচ্ছে মেয়েল দাবি কার বিষয়টি। এ সব যৌক্তিক অযৌক্তিক বিষয় আদালতে সমাধান মিলবে। প্রশ্ন হচ্ছে প্রায়ই দেখা যায় থানা পুলিশ পাল্লা দিয়ে মাদক উদ্ধার করছে। গ্রেফতারও কম হচ্ছে না। যাদেও কাছে মাদক পায় তারা মামলায় জড়িয়ে জেল হাজতে যায়। কিন্তু মাস না ঘোড়তে না ঘোড়তে আবার তাদের অনেকে সমাজে সরব হয়ে চলছে। যারা গ্রেফতার হয় তাদেও অধিকাংশই নাকি পরিস্থিতির শিকার। এ পরিস্থিতিটা কি তা অনুভব করা সম্ভব হলেও বলা মুশকিল। প্রায়ই গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত হচ্ছে মাদক দিয়ে ফাসাতে গিয়ে রাজনৈতিক পরিচয়েল নেতাকর্মী, সাংবাদিক পুলিশসহ নানা পেশা শ্রেণীর মানুষ গ্রেফতার হচ্ছেন। কেন তারা গ্রেফতার হচ্ছে তা বোধহয় এখানে বলার প্রয়োজন নেই। সবই সবাই জানেন এবং বুঝেন। অবশ্য না বোঝা ও জানার কিছু নেই।
যে কথাটা বলার জন্য লেখা শুরু করছি। বিদ্যমান রাজনীতি ও পরিবেশ পরিস্থিতি রাজনৈতিক অঙ্গণটি বোধ হয় নোংরা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। দেশের বা সমাজের সব চেয়ে নোংলা ও ঘৃণিত বিষয়গুলো যে নানা পেশার পরিচয়ের প্রভাবশালীদের দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে। নারীত্ব হরণ থেকে শুরু করে এমন কোন অপরাধ নেই যেখানে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি পাওয়া যাবে না। আবার এরা সমাজকে নানা বিষয় শেখানোর সভাসমাবেশ করছেন। খুব আদেের্শর কথাবার্তা বলছেন। শুধু যে হেলেন জাহাঙ্গীর একা তা নয় আরো অনেক হেলেন জাহাঙ্গীররা গ্রেফতার হয়েছে। তারা কেউ এখনো জেলে ও কেউ কেউ জামিনে রয়েছে। জেলে বা জামিনে থাকুক তা বড় কথা নয় তাদের সবার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ। সমাজে নষ্টামিতে যুক্ত যে সব নারীদেও পরিচয় মিলছে তাদেও সাথে দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের নানা ধরণের অযৌক্তিক ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু অনেক ছবি থাকার পরও তদন্তে ােন সম্পর্ক ও জড়িত থাকার প্রমাণ পায় তদন্তকারীরা। প্রকৃত পক্ষে অপরাধ পরোক্ষ সংঘটিত ঘটনা দৃশ্যমান। দৃশ্যমান হয় সংঘটিত হবার পর। ঘটনা বা অঘটন ঘটার পূরে¦ সবই পরোক্ষই থাকে। কিন্তু আমাদের দেশের তদন্তের বিধি বিধানে কি বলা রয়েছে জানা নেই। তবে অর্থশালী ্র প্রভাব শালী হলে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমান হয় না। যেমনটি হাজী সেলিম এমপির ছেলে ও বসুন্ধারার মালিকের ছেলের ক্ষেত্রে প্রকাশ পেয়েছে। খুব একটা সহজ বিষয় আমাদেও স্বাধীন দুর্নীতিদম কমিশন দুদক দুর্নীতিবাজ খুঁজে পান না। এগুলো কি খুঁজতে অনুবেক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে? মোটেই নয় নব্য কোটিপতিদের তালিকা ধরে তদন্ত করলে আসল পরিচয় পাওয়া যায়। নতুন নতুন বিলাশবহুল গাড়ি ব্যবহারকারী সনাক্ত হলেই তো দুর্নীতিবাজ হাতের নাগালে পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় এদের ধরলে মাদ্রক উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রয়োজন হবে না। এমনেই আমদানী বন্ধ হয়ে যাবে। এ বিষয়টি পরবর্তী লেখায় বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব।