যশোর প্রতিনিধি
চলমান করোনা সংক্রমন মোকবেলায় সরকার ঘোষিত লকডাউন ও কঠোর বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্যবিভাগের সমন্বিত কার্যক্রম। গত রোববার যশোর শহরে কঠোর বিধি নিষেধের চতুর্থ দিনে পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের বিপিএম (বার) পিপিএম এর নেতৃত্বে জেলা পুলিশের প্রতিটি ইউনিট নিরলসভাবে কাজ করেছে। একইসাথে যশোরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগন বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে জেলাব্যাপি কার্যক্রম চালিয়ে যাছে। যশোর সদর ও অভয়নগর পৌর এলাকায় করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই এলাকাগুলোতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া গ্রামগঞ্জেও বিভিন্নভাবে সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সমন্বিত প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। ১৩ জুন যশোরের দড়াটানায় করোনা সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা ও সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে প্রতিপালনের লক্ষ্যে জেলা পুলিশ আয়োজিত সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার উপরে উল্লেখিত তথ্য জানিয়েছেন। এদিন দুপুর দুটো ২০ মিনিটে যশোর শহরের ব্যস্ততম এলাকা দড়াটানা মোড়ে জেলা পুলিশের কর্মসূচিতে সর্বসাধারণের মধ্যে করোনা সংক্রান্তে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার লক্ষ্যে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়। এসময় উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান ও পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম। এসময় দড়াটানা মোড়সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি রাস্তায় করোনা সংক্রান্তে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সর্বসাধারণের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণে পুলিশি টহল, চেকপোস্ট এবং সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান জানান, করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সার্বিক জনস্বার্থে সরকার ঘোষিত লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। লকডাউনের আওতামুক্ত প্রতিষ্ঠান ও দোকান ছাড়া কোনো কিছুই খোলা রাখা যাবে না। আগেই মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে, সচেতনও করা হয়েছে। এখন অ্যাকশান শুরু হয়েছে। দোকান খোলা রাখলে দোকানীকে আটক করা হচ্ছে। মোবাইল কোর্ট করে জরিমানাও করা হচ্ছে। সরকার ও স্বাস্থ’্য বিভাগ ঘোষিত বিধি নিষেধ মানতে হবে। লকডাউন মানতে হবে, অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। পুলিশ সুপার জানান, যশোর শহরে কঠোর বিধি নিষেধ চলছে। গতকাল ৪র্থ দিন অতিবাহিত হয়েছে। লকডাউন ও এই বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে জেলা পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যবৃন্দ সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি যশোর সদর ও অভয়নগর পৌর এলাকায় করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই সকল এলাকা গুলোতে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরুর হাট গুলোতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য যতটুকু আইন প্রয়োগ করা দরকার তার সবটুকুই করবে জেলা পুলিশ। একই সাথে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য যশোরবাসীর কাছে বিনীত আহবান জানান তিনি। জেলা পুলিশের ওই কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি মোহাম্মদ জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেল মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন, যশোর কোতোয়ালির অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার কর্মীবৃন্দ। এদিকে, থানা সূত্র জানিয়েছে, সংক্রমণ যেন প্রকট আকার ধারণ না করে সে জন্য পুলিশ প্রতিনিয়ত পাড়া মহল্লা দোকান পাট ও শপিংমল তদারকি করে যাচ্ছে। মাস্ক ব্যবহারে সর্বসাধারণকে উদ্বুদ্ধকরণে প্রচারণা ও মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। গতকাল ভোর থেকেই জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে জেলা পুলিশের উর্ধŸতন কর্মকর্তাগণ টহলের মাধ্যমে জনসাধারণকে ঘরমুখি করে। থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিট যশোর শহরের মণিহার, চাঁচড়া, ধর্মতলা, পালবাড়ি, উপশহর, খাজুরা বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, রেলগেটসহ ব্যস্তমোড়গুলোতে কঠোর চেকপোস্ট বসায়। ৫ শতাধিক মোটরসাইকেল আরোহীকে নামিয়ে দেয়া হয় দুজন চড়ার কারণে। করোনা সংক্রমণ রোধে ইজিবাইকে দুইজন, রিকসায় একজন এবং মোটরসাইকেলে ১ জন করে যাত্রী বা আরোহী আসা যাওয়া করতে দেয়া হচ্ছে। এর ব্যত্যয় ঘটলেই অ্যাকশানে যাচ্ছে পুলিশ।