রংপুর ব্যুরো
রংপুরে শীর্ষ সন্ত্রাসীর চাঁদা আদায়, যুবলীগ নেতার মাধ্যমে অধিকাংশ ফেরৎ রংপুরের শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মুরগী মিলন ও তার সহযোগী গ্রেফতারে এলাকাবাসীর আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ সেই সাথে তাদের গড ফাদারদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবী। রংপুরে সাংবাদিকের উপর হামলাকারি ইমরান ওরফে টোকাই ইমরানের গ্রেফতারের জোর দাবী জানাচ্ছে এলাকাবাসী, রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিগত ১৪ জানুয়ারি ২৩ শনিবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাংবাদিক সংগঠন (গভঃ রেজিঃ নং ৯৮৭৩৬/১২) “বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব” রংপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি সাংবাদিক আতিকুর রহমান আতিক-এর দায়েরকৃত মামলায় ১৮ জানুয়ারি ২৩ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় র্যাব হাতে মুরগী মিলন ও বানিয়া সুমন গ্রেফতার হয়। যথারীতি ১৯ জানুয়ারি ২৩ বুধবার আসামীদ্বয়কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয় যাহার মামলা নং-জিআর ৩৩/২৩ বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে আসামীদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। রংপুর মহানগরীর কেরানীপাড়া এলাকাবাসী তাদের গ্রেফতারে বেশ স্বস্তি প্রকাশ করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় মুরগী মিলনের প্রকৃত নাম মোঃ মাহফুজুর রহমান মিলন তার পিতার নাম মোঃ সিরাজুল ইসলাম, রংপুর মহানগরীর কেরাণীপাড়ার জামতলা মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় তার বাড়ি। গ্রেফতারকৃত অপর সন্ত্রাসী বানিয়া সুমনের বাড়িও একই এলাকায় তার পিতার নাম মজিবর রহমান।
সরেজমিনে কেরাণীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে এলকাবাসীর মনে আনন্দ বিরাজ করছে, তাই তারা এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন। এলাকাবাসী আরো জানান মুরগী মিলন বিগত জামায়াত বিএনপি’র সময় ছাত্রদলের ক্যাডার ছিল। তখন জাময়াত বিএনপির ছত্রছায়ায় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল। বিগত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে সে গা ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে ছিলো। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন নেতার কাছে সে আশ্রয় খুঁজতে থাকে। অনেক নেতাই তাদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় না দিলেও রংপুর মহানগর যুবলীগের সভাপতি জামাত নেতার ছেলে সিরাজুম মুনির বাশার-এর কাছে ওই সন্ত্রাসীরা বেশ দেবতাতুল্য বলেও জানান এলাকাবাসী। ওই হাইব্রিড যুব নেতার প্রকাশ্য মদদ ও আশ্রয়ে বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মুরগী মিলন, বানিয়া সুমনসহ রংপুরের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। এই হাইব্রীড যুব নেতার ছত্রছায়ায় থেকেই তারা নানাবিধ অপকর্ম করে যাচ্ছে বলেও জানান এলাকাবাসী। তার নামে ৩টি হত্যা মামলাসহ চাঁদাবাজি, মাদক, চুরি, ছিনতাই, বøাকমেইলেইলিংসহ ডজনের উপরে মামলা রয়েছে। মুরগী মিলনের অন্যতম সহযোগী গ্রেফতারকৃত বানিয়া সুমন সেও বিভিন্ন মামলার আসামী। নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক শিক্ষক জানান, বানিয়া সুমন সে এলাকায় ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত, স্থানীয়রা ভয়ে ওদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায়না।
মুরগী মিলন ও বানিয়া সুমন গ্রæপের সন্ত্রাসের স্বীকার এক ভুক্তভোগী বলেন, উক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হওয়ার আগের দিনেও নির্মাণাধীন এক নতুন বাড়িওয়ালার কাছে ৫০,০০০ টাকা চাঁদা দাবী করেন। চাঁদার টাকা না পেয়ে ভুক্তিভোগী ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে মারপিট করে, ভুক্তভোগী ব্যক্তি জীবনের ভয়ে থানায় মামলা করতে পারেনি। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের উপরে গডফাদার রয়েছে, তারা কোন অপরাধ করলে আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তাদের গডফাদাররা তাদেরকে বাঁচিয়ে দেয়। আর কেউ যদি সাহস করে থানায় অভিযোগ বা মামলা করলে সেই মালমলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে । এছাড়াও নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা যায়, মুরগী মিলনের অন্যতম সহযোগী এবং সাংবাদিক আতিকুর রহমান আতিকের উপর হামলাকারী ইমরান ওরফে টোকাই ইমরান গণেশপুর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। সে গণেশপুর রোডে ডিশ, অবৈধ নীল ছবি এবং ইন্টারনেটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে।
সে অবৈধ অস্ত্রধারী তার কাছে দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে এছাড়াও সে নারী ব্যবসার সাথেও জড়িত। গণেশপুরের স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন, সে এলাকায় ইন্টারন্টে এবং ডিসের ব্যবসার আড়ালে মাদকের আস্তানা তৈরি করেছে। টোকাই ইমরান গণেশপুর এলাকায় প্রকাশ্যে নারী ব্যবসার সাথে জড়িত। সে বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীদের চাকুরীর কথা বলে তার পাতানো ফাঁদে ফেলে নারীদের দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত করে। রংপুরের যত নারীর দালাল রয়েছে এই ইমরান নারী ব্যবসার দালালদের অন্যতম নেতা। রংপুরের শান্তিপ্রিয় কেরাণীপাড়া, মুন্সিপাড়া ও গণেশপুর এলাকাবাসী জানিয়েছেন ইমরান ওরফে টোকাই ইমরাণকে দ্রæত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক, অন্যথায় মানববন্ধনসহ সন্ত্রাস বিরোধী বিভিন্ন কর্মাসূচি দেওয়া হবে। রংপুরের মাটিতে কোন সন্ত্রাসীর স্থান নেই, আমরা সন্ত্রাস চাইনা, আমরা শান্তিতে বাঁচতে চাই।