করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ এখনও নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় ঢিলেঢালাভাবে চলা লকডাউন বা চলমান বিধিনিষেধ আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়েছে সরকার। চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ ৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়িয়ে রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এই প্রজ্ঞাপনে নতুন করে কোনো শর্ত আরোপ করা হয়নি। তাই সবকিছু ঠিক থাকবে আগের নিয়মে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে চলমান শর্তাবলী বহাল রেখে চলমান বিধিনিধেষের মেয়াদ আগামী ৬ জুন (রোববার) মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হলো।মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিধিনিষেধ বাড়ানো বা তুলে দেওয়ার বিষয়ে সরকার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। কারণ করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শঙ্কা হয়ে ঝুলে আছে। সবকিছু একেবারে খুলে দিয়ে মানুষের বেপরোয়া আচরণ নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে বিপর্যয় হতে পারে। আবার অফিস-আদালত দীর্ঘদিন বন্ধ করে রাখাও ক্ষতির কারণ হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন সরকার। এখন সীমান্ত এলাকাগুলোতে লকডাউন দেওয়া হচ্ছে। সেটা বহাল রাখার সঙ্গে বেশি সংক্রমিত এলাকায় লকডাউন আরোপ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের ক্ষেত্রে জোর দেওয়াসহ কিছু বিধিনিষেধ তো থাকবেই।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন চলাচল বন্ধসহ সাত দিনের বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। সেই বিধিনিষেধ আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। কিন্তু সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত দেয়া হয় কঠোর লকডাউন। এরপর সেটা কয়েক মেয়াদে বাড়িয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় এই বিধিনিষেধ আরও এক দফা বাড়ানো হয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লকডাউন অনেকটা শিথিল হয়ে এসেছে। ঈদ ছুটি পর্যন্ত দূরপাল্লার গণপরিবহন বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়।
২৩ মে থেকে আন্তজেলাসহ সব ধরনের গণপরিবহন ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলছে। হোটেল ও খাবারের দোকানে আসনসংখ্যার অর্ধেক গ্রাহককে সেবা দেয়ার সুযোগ রেখেছে সরকার।বর্তমানে সরকারি বেসরকারি স্বায়ত্বশাসিত অফিস আদালত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে বিশেষ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমুহ সরকারের নির্বাহী আদেশে সীমিত পরিসরে খোলা রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে শিল্প কলকারখানা।